ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

গাইবান্ধায় শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে পশুর হাট, দাম বেশি ছোট গরুর

রাহুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা

প্রকাশিত: ১৯:০২, ৬ জুন ২০২৫

গাইবান্ধায় শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে পশুর হাট, দাম বেশি ছোট গরুর

ছবিঃ দৈনিক জনকণ্ঠ

রাত পোহালেই পবিত্র কোরবানির ঈদ। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে শেষ মুহূর্তে জমজমাট গাইবান্ধার  পশুর হাটগুলো।শুক্রবার (৬ জুন) সকাল থেকে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে বেচাকেনার ধুম পড়েছে। এসব হাটে মানুষ ছুটে আসছে পশু কেনার জন্য।
 


এবার জেলার সাত উপজেলায় এ বছর কোরবানিযোগ্য গরু-মহিষ-ছাগল ও ভেড়া বেচাকেনার জন্য মোট ৪১টি হাট নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে স্থায়ী ২৬টি ও অস্থায়ী হাট ১৫টি।


প্রায় প্রতিটি হাটে রয়েছে পর্যাপ্ত পশু। শেষ সময়ে দাম বেশ চড়া হওয়ায় ক্রেতারা চিন্তিত।
হাটে আসা প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষের চাহিদা ছোট আকারের গরু। ব্যাপারিরাও ছোট ও মাঝারি আকারের গরু বেশি নিয়ে এসেছেন। তবে আকার ছোট হলেও এসব গরুর দাম বেশি হাঁকছেন বিক্রেতারা। গো-খাদ্যের দাম ও পরিবহন খরচ বাড়ার কারণে ছোট গরুর দামও বেশি বলে জানান তারা।

 

গাইবান্ধা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, "দপ্তরের নির্দেশিত উপায়ে মোটাতাজাকরণ করায় কোরবানির পশুর মাংস নিরাপদ। জেলায় এ বছর চাহিদা পূরণ করে ৬৯ হাজার ৯৭২টি কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।"

 

তিনি আরও বলেন, এরমধ্যে জেলার হাটগুলোতে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল দল প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া খামারি ও কৃষকদেরকে সহায়তা করতে অনলাইনের মাধ্যমে পশু কেনা-বেচার ব্যবস্থা করা হয়েছে।


মোহাম্মদ আলী নামের এক ক্রেতা বলেন, "সামর্থ্য না থাকায় এবার এক গরু দিয়ে কোরবানি করবো। বাজারের বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা বেশকিছু গরু দেখেছি। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে এক বাজার থেকে অন্য বাজার ঘুরে গরু কিনেছি।"

 

রুপার বাজার  থেকে গাইবান্ধা মডার্ন পশুর হাটে গরু কিনতে আসা  আব্দুল লতিফ  বলেন, "আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। তাই একই ভবনের আরেক পরিবারের সঙ্গে এবার কোরবানি করতে ছোট গরু কিনতে এসেছি। বাজারে ছোট ও মাঝারি গরু পর্যাপ্ত থাকলেও দাম বেশি। গতবার যেসব গরু ৬০ থেকে ৭০ হাজারে কেনা গেছে, এবার তার দাম চাইছে ১ লাখ ২০ হাজারের ওপরে।"

 

আরেক ক্রেতা আব্দুর রশিদ বলেন, "অনেক ছোট গরু দেখেও কিনতে পারিনি। কারণ গরু পছন্দ হলেও দাম বাজেটের চেয়ে বেশি। কোরবানি ঘনিয়ে এলেও দাম ছাড়ছেন না ব্যাপারিরা।"  

গরু ব্যাপারি মো. আব্দুল মালেক বলেন, "বাজারে এবার ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। তাই ছোট গরু বেশি এনেছি। তবে বেশিরভাগ ক্রেতা দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে এবার ছোট গরুর দাম কিছুটা বেশি।"

 

ব্যাপারিরা বলছেন, "গাইবান্ধার  হাটগুলোতে বেচাবিক্রি পুরোপুরি জমে উঠেছে। লোকজনের কাজের ব্যস্ততাও কমেছে। তারা হাটে আসা শুরু করেছেন।"

 

বাজারে আসা কয়েকজন বিক্রেতার সঙ্গে কথা হয় । তারা বলেন,  "বাজারে ছোট গরুর ক্রেতার সমাগম থাকলেও বিক্রি কম। বেশিরভাগ ক্রেতা দরদাম করছে কেবল। গরুর লালন-পালন খরচ বেশি হওয়ায় সামান্য লাভে বিক্রি করা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই।"

হাট ইজারাদার মো. জামাল মিয়া জানান, "ঈদ ঘনিয়ে আসায় বেচাকেনা বাড়ছে ।"

 

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যমতে, জেলায় চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩০৫টি পশু। তার বিপরীতে জেলায় ১ লাখ ৯৬ হাজার ২৭৭টি গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে শেষ মুহূর্তে ১৭ হাজার ৩৬৮ খামারে ৩৮ হাজার ৫৩২টি ষাঁড়, ৩ হাজার ২৯৫টি বলদ, ২৪ হাজার ৪১টি গাভি, ১৭৩টি মহিষ, ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৬৩টি ছাগল ও ১০ হাজার ৫৭৬টি ভেড়ার পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা।

পৃথী

×