ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

প্রতিদিনের তিনটি খাবার, যা অজান্তেই আপনার লিভার শেষ করে দিচ্ছে!

প্রকাশিত: ২০:৩১, ১৭ জুন ২০২৫

প্রতিদিনের তিনটি খাবার, যা অজান্তেই আপনার লিভার শেষ করে দিচ্ছে!

ছবি: সংগৃহীত

আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলো লিভার। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান বের করে দেওয়া, হজম প্রক্রিয়া এবং বিপাকক্রিয়া পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অথচ সাম্প্রতিক ডায়েট ট্রেন্ডের কারণে লিভারের উপর চাপ বেড়েই চলেছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, লিভার নষ্ট হওয়ার পেছনে শুধু অ্যালকোহল বা ফাস্ট ফুড নয়, বরং আমাদের প্রতিদিন খাওয়া কিছু সাধারণ খাবারই চুপিচুপি মারাত্মক ক্ষতি করছে।

দুবাইভিত্তিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ পলক মিধা সম্প্রতি একটি ট্রেন্ডিং ভিডিও রিলে এমন তিনটি খাবারের নাম জানান, যেগুলো আমরা প্রায়ই খাই, অথচ এগুলো আমাদের অজান্তেই লিভার ধ্বংস করছে।

চলুন জেনে নিই সেই ৩টি খাবার ও ক্ষতির ধরন:

১. অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার ও ফ্রুকটোজ (সবচেয়ে ক্ষতিকর)

  • চিনি মেশানো পানীয়, চকলেট, সিরিয়াল, ফ্লেভারড দই—এসব আমাদের প্রতিদিনের খাবারের অংশ হলেও এগুলোতে থাকা হাই-ফ্রুকটোজ কর্ন সিরাপ (HFCS) সরাসরি লিভারে জমে গিয়ে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) তৈরি করতে পারে।

  • ফ্রুকটোজ শরীরের অন্য অঙ্গ নয়, শুধুমাত্র লিভারেই মেটাবলাইজ হয়, ফলে তা অতিরিক্ত হলে ফ্যাট আকারে জমা হতে শুরু করে।

  • দীর্ঘ সময় ধরে এগুলো খেলে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, লিভার ইনফ্লামেশন ও স্থায়ী ক্ষতির আশঙ্কা বেড়ে যায়।

করণীয়: চিনি দেওয়া পানীয় ও প্রসেসড খাবার কমান, ফল খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন কারণ এতে থাকা ফাইবার রক্তে চিনি শোষণ ধীরে করে।

২. রিফাইন্ড ভেজিটেবল অয়েল (বীজজাত তেল)

  • সয়াবিন, কর্ন, সানফ্লাওয়ার, স্যাফ্লাওয়ার তেল—এগুলোকে অনেকসময় ‘হার্ট-হেলদি’ বলা হলেও, এদের অতিরিক্ত সেবনে শরীরে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড বেড়ে গিয়ে ইনফ্লামেশন তৈরি হয়।

  • উচ্চ তাপে রান্না করার সময় এসব তেল থেকে অ্যালডিহাইড নামক বিষাক্ত রাসায়নিক নির্গত হয়, যা লিভার কোষকে ধ্বংস করে।

করণীয়: রান্নায় ঘি, অলিভ অয়েল কিংবা অ্যাভোকাডো অয়েল ব্যবহার করুন। বাইরে খাওয়ার সময় ভাজাভুজি ও প্রসেসড খাবার এড়িয়ে চলুন।

৩. ফলের রস—এমনকি ১০০% প্রাকৃতিক জুস

  • অনেকে ভাবেন, ফলের রস একটি স্বাস্থ্যকর বিকল্প; কিন্তু বাস্তবে, এতে ফাইবার না থাকায় চিনি সরাসরি রক্তে মিশে গিয়ে লিভারে ক্ষতি করে।

  • এক গ্লাস কমলার রসে একটি সোডার সমপরিমাণ চিনি থাকে, যা লিভারে চর্বি জমা ও বিপাকীয় চাপ সৃষ্টি করে।

করণীয়: ফল রস না খেয়ে পুরো ফল খান। জুস খেতে হলে হালকা করে পানি মিশিয়ে অল্প পরিমাণ নিন।

এই তিনটি খাবার—চিনিযুক্ত খাবার, রিফাইন্ড বীজ তেল ও ফলের রস—আমরা অনেক সময় "স্বাস্থ্যকর" মনে করি, অথচ এগুলো নীরবে ও দীর্ঘমেয়াদে লিভারের বড় ধরনের ক্ষতি করছে। যারা কখনো অ্যালকোহল খান না কিংবা লিভারের রোগে আক্রান্ত নন, তারাও এই খাদ্যাভ্যাসের কারণে লিভার সমস্যায় পড়তে পারেন।

আবির

×