
শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে শনিবার সুরের দয়াল রায় শীর্ষক অনুষ্ঠানের একটি পরিবেশনা
ধনধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা/তাহার মাঝে আছে দেশ এক- সকল দেশের সেরা ...।
শতবর্ষ পূর্বে লেখা এই গান আজও বাঙালির হৃদয়কে আচ্ছন্ন করে। ¯িœগ্ধতার আবেশে জাগিয়ে তোলে মাতৃভূমির প্রতি অপার ভালোবাসা ও দেশাত্মবোধ। এমন অনেক কালজয়ী গানের গীতিকার দ্বিজেন্দ্রলাল রায়। বাংলা গানের এই প্রাণপুরুষ ও কাব্য সংগীতের মহীরুহের সৃষ্টিতে মিশে আছে দেশ, মাটি, মানুষ ও বাঙালির আত্মপরিচয়। শনিবার ছিল এই কবি, নাট্যকার ও সংগীত¯্রষ্টার প্রয়াণবার্ষিকী।
এ উপলক্ষে এদিন বৈশাখী সন্ধ্যায় কবিকে নিবেদিত শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে সুরের দয়াল রায় শীর্ষক বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।
আয়োজনটিতে ডিএল রায়ের জীবনীভিত্তিক গীতিনকশা পরিবেশন করে ভৈরবী গীতরঙ্গ দল। গানের সুরে, নাচের ছন্দে এবং কবিতার পঙ্ক্তিমালায় নাট্যের সমন্বয়ে সজ্জিত ছিল প্রযোজনাটি। পরিবেশনাটির মাঝে উপস্থাপিত হয় কালজয়ী এক স্রষ্টার সুর ও বাণী। প্রায় অর্ধশতাধিক শিল্পী একসঙ্গে মঞ্চে মেলে ধরেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের জীবন, দর্শন, দেশপ্রেম আর তার গানের মহিমা।
এই আয়োজনে শ্রোতা-দর্শক গান শোনার সমান্তরালে পাড়ি দিয়েছেন সুরের ভুবনে। যেখানে মিশে ছিল ইতিহাস, সাহিত্য, হৃদয় আর ভালোবাসা। বেশিরভাগ গানই পরিবেশিত হয়েছে সম্মিলিত কণ্ঠে। শুরুতে ভৈরবী রাগ আর ত্রিতাল তালে পরিবেশিত হয় ‘আজি নূতন রতনে ভূষণে যতনে/প্রকৃতি সতীরে সাজিয়ে দাও।’
এরপর একে একে ছিল ‘ঘন-তমসাবৃত অম্বর-ধরণী’, ‘আজি এসেছি বঁধু হে’, ‘বেলা বয়ে যায়’, ‘ওই মহাসিন্ধুর ওপার থেকে কি সংগীত ভেসে আসে’, ‘বঙ্গ আমার জননী আমার’, ‘ধনধান্য পুষ্প ভরা’ প্রভৃতি গানের সঙ্গে নাচের পরিবেশনা। সবশেষে ছিল ‘আমরা মলয় বাতাসে ভেসে যাব শুধু/কুসুমের মধু করিবো পান,/ঘুমাব কেতকি সুবাস শয়নে/চাঁদের কিরণে করিব স্নান।’
প্রযোজনাটির ভাবনা ও নির্দেশনায় ছিলেন তরুণ নাট্য নির্দেশক ইলিয়াস নবী ফয়সাল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক ফয়েজ জহির।
প্রযোজনায় অংশগ্রহণ করেন দীপ্ত, কণা, রিয়া, আফনান, মেরাজ, সোনিয়া, লামিয়া, হৃদয়, তন্দ্রা, অর্পিতা, বৈশাখী, আতিশা, অঙ্কিতা, আরিফ, দিয়া, রাজিব, ধ্রুব, অর্ক, জিতু, আইরিন, ইসতিয়াক, ইতি, মন, জিহাদ, মহসিন, মজতোবা, নন্দিতা, নিয়ামত, নোবেল, অর্থী, প্রত্যাশা, পারমিতা, পার্থ, প্রীতম, নদী, রিয়ান, সুব্রত, তীর্থ, ইশিকা, তুর্জ, তুষার, অরিত্র, সুজয়সহ অনেকে।