
শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে নতুন যৌবনের দূত শীর্ষক অনুষ্ঠানে শিশুদের নৃত্য পরিবেশনা
যারা সিনেমা দেখতে পছন্দ করেন, তাদের জন্য চমৎকার এক আয়োজন। বিনা দর্শনীতে দেখা যাবে খ্যাতিমান থেকে উদীয়মান নির্মাতাদের নির্মিত একগুচ্ছ চলচ্চিত্র। বিবিধ বিষয়ের ২২টি পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ১৩টি প্রামাণ্যচিত্র ও আটটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। সব মিলিয়ে ৪৩টি চলচ্চিত্র নিয়ে সজ্জিত হয়েছে ‘চলচ্চিত্র সংসদকর্মীদের নির্মিত চলচ্চিত্র উৎসব-২০২৩’। বৃহস্পতিবার থেকে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার মিলনায়তনে শুরু হওয়া দশদিনের এ উৎসব চলবে আগামী ১৭ জুন পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকেল ৩টা ও সাড়ে ৫টা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়
প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের ৬০ বছর এবং ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে বছরব্যাপী উদ্যাপনের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই শিল্পায়োজন। আয়োজক ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চিত্রশালা মিলনায়তনে উৎসব উদ্বোধন করেন বরেণ্য চলচ্চিত্রকার ও চলচ্চিত্র সংসদকর্মী মসিহউদ্দিন শাকের এবং সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক বেলায়াত হোসেন মামুন।
অনুষ্ঠানে নীরবতা পালন করে স্বাধীন ধারার চলচ্চিত্রকর্মী প্রয়াত সুশীল সূত্রধরের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর কিংবদন্তি চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের জন্মশতবর্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে প্রদর্শিত হয় তারেক মাসুদ নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘আদম সুরত’ এবং মোরশেদুল ইসলাম নির্মিত ‘চাকা’।
সকল প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে সবার জন্য। আজ শুক্রবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনে বিকেল ৩টায় প্রদর্শিত হবে আলমগীর কবির নির্মিত দ্ইু ছবি ‘সূর্যকন্যা’ ও ‘শিল্পাচার্য’। বিকেল সাড়ে ৫টায় দেখানো হবে হারুনর রশিদ নির্মিত ‘মেঘের অনেক রং’ ও এনামুল করিম বাবুলের ছবি ‘ঢাকি’ এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সৈয়দ সালাহউদ্দিন জাকী নির্মিত ‘ঘুড্ডি’। শনিবার বিকেল ৩টায় দেখানো হবে এনামুল করিম নির্ঝরের ‘আহা’ এবং বিকেল সাড়ে ৫টায় মসিহউদ্দিন শাকের ও শেখ নিয়ামত আলী নির্মিত ‘সূর্য দীঘল বাড়ি’। সন্ধ্যায় প্রদর্শিত হবে তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদের ‘মুক্তির গান’ এবং তারেক মাসুদ ও শামীম আখতারের ছবি ‘সে’।
শিশু-কিশোরদের পরিবেশনা নতুন যৌবনের দূত ॥ শিশুদের পরিবেশনায় সজ্জিত ছিল পুরো আয়োজন। সেই সুবাদে বৈচিত্র্যময় উপস্থাপনায় ভালো লাগার অনুভব ছড়িয়ে দিল খুদে শিল্পীরা। কচিকণ্ঠের গানের সুরে সিক্ত হলো শ্রোতার অন্তর। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে ফকির লালন সাঁই কিংবা হাছন রাজার ঐশ্বর্যময় গীতবাণী উচ্চারিত হলো তাদের কণ্ঠে। অন্যদিকে ছোটদের নান্দনিক নাচের পরিবেশনায় চঞ্চল হলো দর্শক নয়ন। নাচ-গানের সমান্তরালে আয়োজনে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে কবিতার শিল্পিত উচ্চারণের আবৃত্তি পরিবেশনা।
শুধু কি তাই? সঙ্গে ছিল হৃদয়ে প্রশান্তির পরশ বুনে দেওয়া যন্ত্রসংগীতের পরিবেশনা। এভাবেই নানা আঙ্গিকের পরিবেশনার সম্মিলন ঘটে নতুন যৌবনের দূত শীর্ষক অনুষ্ঠানে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সংগীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে শিশু-কিশোরদের সঙ্গী করে এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। পঞ্চকবির গানের সূচনা হওয়া একাডেমি আয়োজিত দশ দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অংশ ছিল এ আয়োজন।