ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

বাসে হেনস্তা ও বাড়তি ভাড়া: সোহরাওয়ার্দী কলেজে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

মোঃ হাদিসুর রহমান, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, সোহরাওয়ার্দী কলেজ

প্রকাশিত: ০০:০৬, ২৪ জুন ২০২৫

বাসে হেনস্তা ও বাড়তি ভাড়া: সোহরাওয়ার্দী কলেজে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রাজধানীর সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ও ক্ষোভের জেরে গত তিন মাসে তিনটি পরিবহণ সংস্থার বাস আটক করেছে শিক্ষার্থীরা। নিয়মিতভাবে স্টুডেন্ট ভাড়ায় বৈষম্য ও পরিবহনকর্মীদের অসদাচরণের অভিযোগে একের পর এক এ ঘটনা ঘটছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানা যায়, চলতি বছরের এপ্রিল, মে ও জুন মাসে যথাক্রমে ইলিশ পরিবহণ, সাভার পরিবহণ ও সর্বশেষ অনাবিল পরিবহনের একটি করে বাস আটক করেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসব ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয় এবং নিরাপদ ও সম্মানজনক যাতায়াতের দাবিতে তারা প্রতিবাদে নামেন।

সবশেষ ঘটনা ঘটে চলতি জুন মাসেই। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মিথিলা সরকার জানান, তিনি কলেজের আইডি কার্ড দেখালেও অনাবিল পরিবহনের একটি বাসে তাকে স্টুডেন্ট ভাড়া না দিয়ে সাধারণ যাত্রীর ভাড়া আদায় করা হয়। এ সময় বাসের হেলপার তার সঙ্গে অশালীন আচরণও করেন বলে অভিযোগ করেন মিথিলা।

এর আগেও মে মাসে সাভার পরিবহনের দুটি ভিন্ন বাসে দুই শিক্ষার্থী অপ্রীতিকর আচরণের শিকার হলে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা একত্র হয়ে প্রতিষ্ঠানটির ১০টি বাস আটক করেন। পরবর্তীতে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও বাস মালিক সমিতির সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।

এই ধারাবাহিক ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রশাসন। কলেজ কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে জানায়, কলেজের বাইরে পরিবহণ বা অন্য কোনো সংস্থায় ঘটে যাওয়া ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বকে কলেজে টেনে আনা যাবে না। কলেজ ফটকে কোনো যানবাহন জব্দ করে আনা বেআইনি কাজ এবং এ ধরনের ঘটনার দায়ভার কলেজ কর্তৃপক্ষ বহন করবে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কলেজের দায়িত্ব শিক্ষার্থীদের একাডেমিক নিরাপত্তা দেওয়া, তবে বাহ্যিক পরিবহণ সংক্রান্ত ঝামেলা কলেজ কর্তৃপক্ষের এখতিয়ারে পড়ে না।

তবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিষয়টি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। শিক্ষার্থী বাদশাহ মোস্তফা ফেসবুকে লিখেছেন, "সঠিক সিদ্ধান্ত বুঝলাম, তবে শিক্ষার্থী যদি অন্যায়ভাবে হেনস্তার শিকার হয়, তাহলে তারা কার কাছে যাবে?"

একজন শিক্ষার্থী মন্তব্য করেন, "শুধু সতর্ক করে দায়িত্ব শেষ করলে চলবে না। যেহেতু শিক্ষার্থীরা কলেজে যাতায়াত করে, তাই তাদের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করাও কলেজ প্রশাসনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। প্রয়োজনে বাস মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনায় বসা উচিত।"

এ বিষয়ে পরিবহণ মালিক পক্ষের কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া না গেলেও, সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বারবার এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি বাড়াচ্ছে। ফলে দায়িত্বশীল আচরণ করা এবং আলোচনার মাধ্যমে টেকসই সমাধানে পৌঁছানো এখন সময়ের দাবি।

Mily

×