ছবি: সংগৃহীত
এশিয়া এখন কেবল প্রযুক্তি ও অর্থনীতির দিক থেকেই নয়, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রেও বিশ্বের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। পশ্চিমা বিশ্বে পড়াশোনা করার প্রচলিত ধারা থেকে অনেক শিক্ষার্থীই মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছেন নতুন সুযোগ-সুবিধার খোঁজে। ২০২৬ সালের QS World University Rankings অনুযায়ী এশিয়ার বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছে। চলুন জেনে নিই এশিয়ার সেরা ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় ও তাদের বিশেষত্ব:
১. ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর
র্যাংকিং: ৮
এশিয়ার সর্বোচ্চ র্যাঙ্কপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়। বিজ্ঞান, প্রকৌশল, মানবিক, ব্যবসা ও আইন সহ নানান বিষয়ে ডিগ্রি প্রদান করে। ইংরেজিই প্রধান শিক্ষাদান ভাষা।
শিক্ষা পরিবেশ: সিঙ্গাপুর অত্যন্ত আধুনিক, নিরাপদ ও আইনানুগ। ব্যয়বহুল হলেও পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চমৎকার। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বহুসাংস্কৃতিক পরিবেশ ও পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ।
২. হংকং বিশ্ববিদ্যালয়
র্যাংকিং: ১১
এই বিশ্ববিদ্যালয়টি মেডিসিন, আইন, সমাজবিজ্ঞান ও ব্যবসায় বিশেষভাবে খ্যাত। শিক্ষাদান হয় ইংরেজিতে।
শিক্ষা পরিবেশ: হংকং এর উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয় থাকলেও, ছাত্রাবাসে ভর্তুকি দেওয়া হয়। শহরটি দ্রুতগামী, এবং পশ্চিমা-পুর্ব সাংস্কৃতিক মিশ্রণে ভরপুর।
৩. নানইয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি, সিঙ্গাপুর
র্যাংকিং: ১২
প্রকৌশল, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশেষ পারদর্শী। ইংরেজিতে পড়ানো হয়।
শিক্ষা পরিবেশ: পরিচ্ছন্ন শহর, শক্তিশালী ডিজিটাল সুবিধা, সবুজ স্থান, এবং সহজে চলাফেরার সুবিধা বিদ্যমান।
৪. পিকিং ইউনিভার্সিটি, চীন
র্যাংকিং: ১৪
বিজ্ঞান, অর্থনীতি, সাহিত্য ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে প্রোগ্রাম রয়েছে। স্নাতক পর্যায়ে বেশিরভাগ কোর্স চাইনিজ ভাষায়, তবে স্নাতকোত্তরে ইংরেজির সুযোগ রয়েছে।
শিক্ষা পরিবেশ: বেইজিং একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক শহর। আন্তর্জাতিক কমিউনিটি আছে, জীবনযাত্রার ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম, তবে দূষণ ও ভাষা বাধা থাকতে পারে।
৫. সিংহুয়া ইউনিভার্সিটি, চীন
র্যাংকিং: ১৭
প্রকৌশল ও পাবলিক পলিসিতে শক্তিশালী। কিছু কোর্স ইংরেজিতে চালানো হয়।
শিক্ষা পরিবেশ: বেইজিংয়ের শিক্ষা হাব হাইডিয়ানে অবস্থিত। ক্যাম্পাস লাইব্রেরি, গবেষণা কেন্দ্র ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় ভরপুর।
৬. ফুদান ইউনিভার্সিটি, চীন
র্যাংকিং: ৩০
সমাজবিজ্ঞান, মেডিসিন ও ব্যবস্থাপনায় খ্যাতনামা। কিছু কোর্স ইংরেজিতে পড়ানো হয়।
শিক্ষা পরিবেশ: সাংহাই অত্যন্ত আধুনিক শহর, ব্যয়বহুল হলেও আন্তর্জাতিক সুবিধা, খাবার ও যানবাহন সহজলভ্য।
৭. দ্য চাইনিজ ইউনিভার্সিটি অব হংকং
র্যাংকিং: ৩২
মানবিক, শিক্ষা ও বায়োমেডিকেল সায়েন্সে শক্তিশালী। ইংরেজি ও চাইনিজ দু’ভাষাতেই কোর্স পড়ানো হয়।শিক্ষা পরিবেশ: শহরের বাইরে হওয়ায় শান্তিপূর্ণ। সবুজে ঘেরা, হাইকিং ট্রেইল আছে, জীবনযাত্রার খরচ তুলনামূলকভাবে কম।
৮. ইউনিভার্সিটি অব টোকিও, জাপান
র্যাংকিং: ৩৬
বিজ্ঞান, প্রকৌশল, অর্থনীতি ও সাহিত্যে খ্যাতনামা। ইংরেজিতে পিইএকে (PEAK) প্রোগ্রাম রয়েছে।
শিক্ষা পরিবেশ: টোকিও অত্যন্ত নিরাপদ ও উন্নত। ব্যয়বহুল হলেও, আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের মিশেলে সমৃদ্ধ। জাপানি ভাষার কিছু দক্ষতা দরকার হতে পারে।
৯. সিওল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, দক্ষিণ কোরিয়া
র্যাংকিং: ৩৮
প্রকৌশল, মেডিসিন, ব্যবসা ও মানবিক বিষয়ে শীর্ষস্থানীয়। অনেক স্নাতকোত্তর কোর্স ইংরেজিতে পাওয়া যায়।
শিক্ষা পরিবেশ: প্রযুক্তি-সমৃদ্ধ, ব্যস্ত শহর। বাসস্থান তুলনামূলক সস্তা, তবে কোরিয়ান ভাষা জানা উপকারী।
১০. হংকং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি
র্যাংকিং: ৪৪
বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও ব্যবসায়ে বিশেষায়িত। ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানো হয়।
শিক্ষা পরিবেশ: শহরের প্রান্তে অবস্থিত হওয়ায় শান্ত পরিবেশে পড়াশোনা করা যায়। সাগর তীরবর্তী ক্যাম্পাস ও আধুনিক আবাসন সুবিধা রয়েছে।
যদি আপনি বিশ্বমানের শিক্ষা চান এবং নতুন সংস্কৃতি, প্রযুক্তি, গবেষণা সুযোগের সন্ধান করেন, তাহলে এশিয়ার এই শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আপনার জন্য উপযুক্ত হতে পারে। খরচ, ভাষা, পরিবেশ, এবং ক্যাম্পাস সুবিধাগুলো মিলিয়ে নিজের জন্য উপযুক্ত গন্তব্য বেছে নেওয়াই হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।
মুমু ২
