ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ॥ অতিথি পাখির কলতান 

ইজহারুল ইসলাম

প্রকাশিত: ০১:০১, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ॥ অতিথি পাখির কলতান 

অতিথি পাখির কলতান

ভোরের ঠান্ডা সমুদ্রের তীরে, মুখোশ পরে কুঁজিছে চাঁদ। হাস্যময় পাখিরা গান গায়, শুনতে মন খুশি বিস্তার। শত শত অতিথি পাখির কলতানে রোজ মুখরিত হয়ে উঠেছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনের ফাঁকা বিলটি। পাখির কিচির-মিচির শব্দে ঘুম ভাঙছে হলে থাকা শিক্ষার্থীদের। শীতের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে ক্যাম্পাসের চিত্র। চারদিকে সবুজের সমারোহ ক্যাম্পাসকে করছে অনন্য।
সবুজের সমারোহে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি। দিনভর জলকেলি, খুনসুটি সেই সঙ্গে কিচির-মিচির শব্দ, কখনো নীল আকাশে ঝাঁক বেঁধে নান্দনিক কসরতে ডানা মেলে পাখিরা। যা দেখতে ক্যাম্পাসে ভিড় করছেন পাখিপ্রেমীরা।এমন বাহিরের অনেক দর্শনার্থী পাখিদের সৌন্দর্য দেখতে ক্যাম্পাসে ভিড় করেন।

প্রতিবছর শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি পাখি আসতে শুরু করে। এই পাখিগুলো শীতের আগে আগে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধের বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার পাখি দক্ষিণ এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে আসে। সাধারণত শীতে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে পাখিরা আসে।

গত বছর নোবিপ্রবির ময়নাদ্বীপ নিরাপদ আশ্রয়স্থল হওয়ায় অতিথি পাখিরা সেখানে অবস্থান করেছিল কিন্তু বর্তমানে সেখানে নিরাপদ আশ্রয়স্থল না হওয়ায় অতিথি পাখিরা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে সামনের বিলটিতে আশ্রয় নিয়েছে। অতিথি পাখির আবাসস্থল নিরাপদ করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে এবার জনসচেতনতার কোনো ব্যানার চোখে পড়েনি। 
শিক্ষার্থীরা বলছেন, শীত মৌসুমে চাষাবাদ না করে এভাবে প্রতিবছর  অতিথি পাখিদের জন্য সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে বরাদ্দ রাখলে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি পাবে। কনকনে শীতের সকালে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের বিলটিতে  কাঞ্চনমাখা  রোদে  হাজারও অতিথি পাখির জলকেলি ও  কলকাকলি, সারাদিন খুনসুঁটি, সারা ক্যাম্পাসের আকাশে মুক্তডানায় ভর করে বাতাসে গাঁ ভাসিয়ে দলবেঁধে হেলে-দুলে মনের সুখে উড়ে বেড়াচ্ছে তারা।

কিছু পাখি ডুবসাঁতার খেলছে, কিছু আবার পালকের ভেতর মুখগুঁজে রোদ পোহাচ্ছে। সব মিলিয়ে কিচির-মিচির শব্দের নতুন এক আবহ সৃষ্টি হয়েছে নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে। ধূসর রঙের হরেক প্রজাতির পরিযায়ী পাখি নোবিপ্রবির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেক বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। এ দৃশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মনে যেমন এক প্রশান্তি আনে ঠিক তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা বিভিন্ন মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় পাখিদের এই দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিনিয়তই বাইরে থেকে অনেক মানুষ অতিথি পাখিদের এই সুন্দর দৃশ্য দেখতে আসে।
প্রতিবছর উত্তরের শীত প্রধান সাইবেরিয়া, মধ্য এশিয়া, মঙ্গোলিয়া, চীন, উত্তর মিয়ানমার, কাশ্মীর, হিমাচল, তিব্বত, পশ্চিমের আরব সাগর ও আফ্রিকা ও ভারত থেকে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশে এই অতিথি পাখিরা আসে।

×