
অবৈধভাবে হলে ওঠা নিয়ে খবর প্রকাশ করায় ছাত্রদল কর্মী শামীম আশরাফীর নেতৃত্বে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (হাবিপ্রবিসাস) অফিসকক্ষ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, গত রবিবার (২৯ জুন) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলের ৫০৮ নম্বর কক্ষে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রোকন অবৈধভাবে ওঠে। কিন্তু এর আগেই একজনকে ওই কক্ষে সিট বরাদ্দ দেওয়া থাকায় তাকে সিট ছেড়ে দিতে বলেন হল সুপার। এই সংবাদ প্রকাশ করায় গতকাল রাত থেকেই সাংবাদিক সমিতির বিপক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখি শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী।
শামীম আশরাফী নামের এক কর্মী হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতিকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে পোস্ট দেন এবং তা না করলে ‘নতুনভাবে সাংবাদিকতা শেখানো হবে’ বলে হুমকি দেন।
সোমবার (৩০ জুন) সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে তিনি আরও কয়েকজনকে নিয়ে সাংবাদিক সমিতির অফিসরুমে যান এবং ক্যাফেটেরিয়ায় থাকা কর্মচারীর কাছে অফিসরুমের চাবি চান। চাবি না দেওয়ায় শামীম আশরাফী দরজা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন এবং নিজেই লাথি মেরে অফিসরুমের কাঁচের দরজা ভেঙে ফেলেন। একইসঙ্গে ক্যাফেটেরিয়াতেও ভাঙচুর চালানো হয়। তবে ওই সময় কক্ষে হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির কোনো সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। তাদের না পেয়ে অভিযুক্তরা ভাঙচুর চালিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে চলে যান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহা বলেন, ভাঙচুর হওয়া অফিসরুম পরিদর্শন করেছি এবং আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর এ ধরনের ঘটনা এবারই প্রথম। প্রত্যক্ষদর্শীদের সহযোগিতায় একজনকে শনাক্ত করা গেছে। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. এনামউল্ল্যাহ বলেন, বিষয়টি শুনেছি। আমি নিজে এটি গুরুত্ব সহকারে দেখব এবং প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে হাবিপ্রবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক বার্নাড পলাশ বলেন, তাকে আমি চিনি, সে ছাত্রদলের কর্মী। তবে ছাত্রদলের কর্মী হিসেবে সে ভাঙচুর করেনি। এটি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের একটি ইস্যু। এর দায় ছাত্রদল নেবে না।
হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি গোলাম ফাহিমুল্লাহ বলেন, হাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির অফিসরুমে ভাঙচুর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর একটি কালো থাবা। এমন নিকৃষ্ট কাজ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের আমলেও কেউ করার সাহস দেখায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের ও শিক্ষার্থীদের সংগঠন হিসেবে হাবিপ্রবিসাসকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের শনাক্ত করে কঠোরতম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
হাবিপ্রবিসাসের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই, হামলাকারীদের দ্রুত শনাক্ত করে যথাযথ শাস্তির আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও ক্যাম্পাসে মুক্ত ও স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ বজায় রাখা প্রশাসনের মৌলিক দায়িত্ব।
সানজানা