
অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঈদের আরও এক সপ্তাহ বাকি থাকতেই মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে রেডিমেড পাঞ্জাবি ও থ্রিপিস কেনার ধুম পড়েছে। ফ্যাশন হাউজগুলোর ভাল কালেকশনের পাঞ্জাবি-থ্রিপিসগুলো বিক্রির শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে ঢুকলে বুঝার কোন উপায় নেই করোনা সংক্রমনরোধে দেশে লকডাউন চলছে। বরং ভিড় দেখে মনে হবে সবকিছু চলছে স্বাভাবিক নিয়মে। করোনাভীতি মাড়িয়ে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ছে মার্কেট থেকে থেকে মার্কেটে। হালের নতুন ডিজাইনের মাস্ক মহিলাদের কাছে নতুন ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ যেনো এক নতুন চমক! একদিকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা অন্যদিকে ফ্যাশন। সবমিলিয়ে বাহারি মাস্ক ঈদ মার্কেটে বাড়তি আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার কাছে। ঈদ পোশাকের পাশাপাশি অনেকে সুন্দর ডিজাইনের মাস্ক কিনে নিচ্ছেন।
জানা গেছে, করোনা সংক্রমণরোধে রোজার শুরুতে মার্কেট ও শপিংমলগুলো বন্ধ রাখা হয়। পরে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে দোকানপাট ও শপিংমল খুলে দেয়া হয়। এ কারণে দর্জির কাছে গিয়ে পোশাক-আশাক বানিয়ে নেয়ার সুযোগ এবার সেভাবে পাওয়া পায়নি সৌখন ক্রেতারা। এছাড়া রোজা ও ঈদ সামনে রেখে থান-কাপড়ের যে বিপুল আমদানি ও বিক্রি এবার সেটাও প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছিল। আর এ কারণে রেডিমেড পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের ঝোঁক সবচেয়ে বেশি।
এছাড়া বিক্রেতারাও স্বল্প সময়ে রেডিমেড পোশাক সংগ্রহ করে তা বিক্রি করছে। পুরান ঢাকার ওয়ারীর বাসিন্দা আফরোজা আক্তার র্যাঙ্কিন স্ট্রীটের ফ্যাশন হাউজ রঙ থেকে নিজের জন্য থ্রি পিস এবং হ্যাজবেন্ডের জন্য রেডিমেড পাঞ্জাবি কিনছিলেন। তিনি জনকণ্ঠকে জানান, এবার রোজার শুরুতে দর্জির দোকানগুলো বন্ধ থাকায় পোশাক বানিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি। আর এ কারণে থ্রি পিস কেনা হয়েছে। তিনি বলেন রেডিমেড থ্রিপিসের ফিটিংস সমস্যা হয়। এ কারণে দর্জির কাছে বানিয়ে নিলে এই সমস্যায় পড়তে হয় না। র্যাঙ্কিন স্ট্রীটের আড়ংয়ের শো-রুমে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে পাঞ্জাবি ও শাড়ি ও থ্রিপিস। আড়ংয়ের সেলস এক্সিকিউটিভ মৌসুমী ইসলাম জানালেন, তাদের কালেকশনে থাকা ভাল ডিজাইনের পাঞ্জাবি ও থ্রিপিসগুলো ইতোমধ্যে প্রায় বিক্রি হয়ে গেছে। বাদবাকি যা আছে তা ঈদের আগে বিক্রি হয়ে যাবে।
জানা গেছে, নগরবাসীর একটি বড় অংশ আবার করোনাভীতির কারণে মার্কেটমুখী না হলেও তাদের কেনাকাটা চলছে অনলাইনে। এ কারণে ঘরে বসে তারা কেনাকাটার সুযোগ নিচ্ছেন। পছন্দের পণ্যটির অর্ডার করার পাশাপাশি আর্থিক লেনদেনও তারা করছেন বিকাশসহ অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। এ কারণে এবার অনলাইনে অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে কেনাবেচা অনেক বেড়েছে। ঈদ পোশাকের পাশাপাশি ক্রেতারা ঘরে বসে নিত্যপণ্য কেনাকাটা করছেন অনলাইনে। ফলে জমে উঠেছে অনলাইনের কেনাকাটা। খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা ও সরকারী কর্মকর্তা আকতার হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, করোনার কারণে মার্কেট নয়, ঘওে বসেই তারা তাদের পছন্দ মতো ঈদ কেনাকাটা করতে পারছেন। অনলাইন শপিংয়ে তারা পাচ্ছেন সবকিছু। এ কারণে ঝুঁকি নিয়ে আর বাইরে বের হতে হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরের অভিজাত ফ্যাশন হাউজগুলোর এখন অনলাইন বিক্রি কার্যক্রম চালু করেছে। এ কারণে ইচ্ছে করলে ঘরে বসে যেকোন ব্র্যান্ডের পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক কমে আসছে।