ছবি: সংগৃহীত
সাড়ে তিনটা রাত। ঘুমন্ত বিশ্ব হঠাৎ চমকে উঠলো এক ভিডিওতে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিসিয়াল সোশ্যাল হ্যান্ডেল থেকে ছড়িয়ে পড়লো একটি মানচিত্রভিত্তিক ভিডিও—যেখানে ইরানের সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিধি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কিন্তু সেই ভিডিওতেই দেখা গেল এক বিস্ময়কর ও বিতর্কিত চিত্র: ভারতের কাশ্মীর অংশকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত দেখানো হয়েছে। আর তার পাশে লাল বৃত্তে ঘিরে রয়েছে বাংলাদেশ—যে দেশকে ইসরাইলের চোখে 'ঝুঁকিপূর্ণ' তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে।
কূটনৈতিক অস্বস্তি ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আগুন
ভিডিওটি প্রকাশের পরই ভারতের সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। ভারতের ডানপন্থী নেটিজেনরা সরাসরি প্রশ্ন তোলেন—“কাশ্মীর আমাদের গর্ব, বন্ধুত্ব যদি মানচিত্র বদলে দেয়, তবে সে কেমন বন্ধু?” ইসরাইল পরে ক্ষমা চেয়ে বলে, এটি কেবল “গ্রাফিকাল অলংকরণ”, কিন্তু ততক্ষণে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন উদ্বেগ
ভিডিওতে বাংলাদেশের উপরেও একটি স্পষ্ট রক্তিম চিহ্ন। এতে স্পষ্ট ইঙ্গিত, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায় বাংলাদেশও রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কেবল সামরিক সতর্কতা নয়, বরং একটি কৌশলগত বার্তা—বাংলাদেশ ইরানের সাপ্লাই চেইনের অংশ কি না বা অন্তত ভৌগোলিকভাবে এমন অবস্থানে রয়েছে যা ইসরাইলের দৃষ্টিতে উদ্বেগজনক।
বাংলাদেশ: নিরপেক্ষ না কি ভবিষ্যতের ফ্রন্টলাইন?
যদিও বাংলাদেশ-ইসরাইলের মধ্যে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, তবুও ভিডিওটিতে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি প্রশ্ন তুলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা, সমুদ্রবন্দর, এবং চীন-তুরস্কের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ইসরাইলকে ভাবাচ্ছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ এখনো পর্যন্ত ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়নি, বরং দেশটির আইনে ইসরাইল ভ্রমণ নিষিদ্ধ।
গোপন বার্তা: তুমি যদি নিরপেক্ষ থাকো, তাও নিরাপদ নও
এই মানচিত্র ইঙ্গিত দিচ্ছে—ইসরাইল এখন কেবল প্রতিরক্ষা নয়, কৌশলগত যোগাযোগও চাইছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে “নিরপেক্ষতা” থেকে বের করে আনার জন্য এটি একধরনের চাপও হতে পারে। ভারতকে মানচিত্রের মাধ্যমে বিব্রত করা আর বাংলাদেশকে টার্গেট করা—দুই ক্ষেত্রেই রয়েছে বড় বার্তা।
বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন দাবার চাল
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মানচিত্র কেবল সামরিক চিত্রায়ন নয়, বরং রাজনৈতিক দাবার প্রথম চাল। এই চালেই বোঝা যাচ্ছে, আগামী দিনে দক্ষিণ এশিয়া হবে ভূরাজনীতির অন্যতম প্রধান যুদ্ধক্ষেত্র। যেখানে প্রতিটি দেশ হবে একেকটি চাল, আর বিশ্ব শক্তিগুলো বসে থাকবে দাবার বোর্ডের চারপাশে।
সূত্র: https://youtu.be/yvOJe5ZC4Mc?si=PZTzuyM-CcxWs8iK
আঁখি
