ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

ভ্রাম্যমাণ আদালত হতে পারে সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার পথ

শরিফুল রোমান

প্রকাশিত: ১১:৩৮, ১৬ জুন ২০২৫

ভ্রাম্যমাণ আদালত হতে পারে সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার পথ

ছবি: সংগৃহীত

দেশজুড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য হারে প্রশংসা পাচ্ছে। বিশেষ করে বাল্য বিবাহ বন্ধকরণ, ইভটিজিং, নারী নির্যাতন- যৌন হররানী, মাদকাসক্তি, মাদক ব্যবসা, জুয়াড়ীদের তৎপরতা, পণ্যের ভেজাল রোধ, ওজন-পরিমাপে কম দেয়া, খাদ্যদ্রব্যে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ, অবাধে বৃক্ষ নিধন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, পরিবেশ বিপর্যয় রক্ষা, সামাজিক সন্ত্রাস প্রতিরোধসহ নানা বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়ে আসছে। বিচার বিভাগ প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথকীকরণে নিকট অতীতে খানিকটা সমস্যা উদ্ভুত হলেও সরকারের হস্তক্ষেপে বিচার বিভাগের বাইরে নির্বাহী বিভাগে ১ম শ্রেণির কর্মকর্তাকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া হয়। ফলে আজ আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রমের সুফল প্রত্যক্ষ করছি।

সত্যি বলতে কি সমাজ রাষ্ট্রের যাবতীয় অনিয়ম দুর্নীতি অপরাধ সামাজিক অনাচার দুরাচার প্রতিরোধে উপযুক্ত আইন বলবৎ এবং বিচারিক ব্যবস্থা আছে। কিন্তু বিচার ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট নানা উদ্ভুত পরিবেশ ও আইনী কার্যক্রমের দীর্ঘসূত্রিতাসহ বিবিধ কারণে সমাজ হতাশাযুক্ত। বিশেষ করে অপরাধের মাত্রায় আইনের দৃষ্টিতে লঘুশাস্তিযোগ্য অপরাধের মতো বিষয়গুলিতে সাধারণত: ভ্রম্যমাণ আদালত উন্মুক্তভাবে পরিচালিত হয়। কখনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরাসরি অভিযানে নেতৃত্ব দেন কখনো বা পুলিশের অভিযানে অপরাধী আটক হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করে থাকেন। এতে করে অপরাধীর তাৎক্ষণিক শাস্তি নিশ্চিত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তরা স্বস্তি পান। সমাজে প্রচলিত আইন থাকলেও বিচারিক আদালতের দূরবর্তীতা, স্থানীয় দুর্বল তদারকী নিরুুৎসাহী করার নানা ফন্দি ফিকিরে অনেক ধরণের অপরাধী নীতি নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে নিজেকে আড়ালে রাখতে পারে এবং পরিতাপের বিষয় হলেও সমাজে তাদের শক্তির দাপট, কিংবা অসচেতনতা, অর্থের লোভে বিরাজিত অনেক অপরাধকে অপরাধ হিসেবে মনেই করেন না। এসব ক্ষেত্রে বিচারিক আদালতের স্থলে ভ্রাম্যমাণ আদলতের কার্যক্রম অধিক কার্যকর। 

সামাজিক সচেতনতা তৈরীসহ বাল্য বিবাহ বন্ধকরণ, ইভটিজিং, নারী নির্যাতন- যৌন হররানী প্রতিরোধ, মাদকাসক্তি, মাদক ব্যবসা নির্মূল, জুয়াড়ীদের তৎপরতা বন্ধকরণ, পণ্যের ভেজাল রোধ, পরিমাপে কম দেয়া, মৌসুমী ফল আম, কাঠাল, লিচু, কলা, আনারসসহ যাবতীয় ফলমূল, খাদ্যদ্রব্যে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ, অবাধে বৃক্ষ নিধন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, পরিবেশ বিপর্যয়-ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে অধিকহারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হোক অত্যন্ত নির্মোহ অনাক্রশ দায়িত্বশীলতায়। সমাজে আদালতের ভূমিকা উজ্জ্বল হবে, সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে। ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্রে পুঁজিবাদী সমাজের গর্ভে জন্ম নেয়া বাড়তি উৎপাতের আক্রমণ থেকে জনগণ কিঞ্চিত হলেও দু:খ যন্ত্রণা থেকে পরিত্রাণ পাবে।

আঁখি

×