
ছবি: জনকণ্ঠ
“যদি সুন্দর একখান মুখ পাইতাম, মহেশখালীর পানের খিলি তারে বানাই খাওয়াইতাম” কিংবা “পান খেয়ে ঠোঁট লাল করিলাম, বন্ধুর ভাগ্য হইল না”—পান নিয়ে এমন কতই না জনপ্রিয় গান রয়েছে বাংলা সংস্কৃতিতে।
বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা চুন শিল্প এখন কালের আবর্তে মৃতপ্রায়। চরম সংকটে পড়েছেন এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কারিগররা।
খাল, বিল, নদী থেকে ঝিনুক কুড়িয়ে তা পরিষ্কার করে রোদে শুকিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে যারা চুন তৈরি করেন, তাদের বলা হয় জুগি বা চুনারু।
জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া, ফারাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় মোট ৪০টিরও বেশি পরিবার চুন শিল্পের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু নদ-নদী ও খাল-বিলে ঝিনুকের সংখ্যা কমে যাওয়া এবং আমদানিকৃত চুনাপাথর থেকে তৈরি চুনের ব্যবহারে চাহিদা কমে গেছে স্থানীয়ভাবে তৈরি চুনের।
এ বিষয়ে চুন উৎপাদনকারী শ্রী ক্ষেত্র দেবনাথ প্রতিবেদককে বলেন, “চুন তৈরির কাজ আমাদের জাত-পেশা। বর্তমানে খাল-বিল, নদী-নালায় পর্যাপ্ত ঝিনুক পাওয়া যায় না, ফলে অতিরিক্ত দামে তা সংগ্রহ করতে হয়। ঝিনুক পুড়ানোসহ বিভিন্ন খরচ বাদ দিলে যে লাভ হয়, তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে পেশা বদলাচ্ছেন।”
চুন উৎপাদনকারী আরেক কারিগর শ্রী নিমাই দেবনাথ বলেন, “এক মণ ঝিনুক কিনতে হয় ৬০০ টাকায়, খড়ি প্রতি মণ ২৮০ টাকায়। আর চুন তৈরি করে তা বিক্রি হয় মণপ্রতি ১০০০ টাকায়। চুন তৈরির কাঁচামালসহ উৎপাদন খরচ বেড়ে গেলেও তৈরি চুনের দাম বাড়েনি। ফলে লোকসানে পড়তে হচ্ছে।”
বর্তমানে চুন তৈরির উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারণে খরচ বেড়েছে, আর বাজারে চুনের দাম কম থাকায় তেমন লাভ নেই বলে আগ্রহ হারাচ্ছেন পেশাদার কারিগররা। ফলে অনেকেই ছেড়ে দিচ্ছেন বাপ-দাদার তিন পুরুষের পুরোনো এই পেশা।
মুমু ২