
১৮৯০ সালে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলায় নন্দীরহাটে ৫ একর জায়গার ওপর নির্মিত হয় এই জমিদার বাড়িটি। বাড়িটি নির্মাণ করেন জমিদার লক্ষ্মীচরণ সাহা। তবে জমিদারি চালুর পেছনে মূলত তিনজন রয়েছেন। তারা হলেন শ্রী লক্ষ্মীচরণ সাহা, মাদল সাহা ও নিশিকান্ত সাহা। এই জমিদার বাড়ির শেষ জমিদার ছিলেন লক্ষ্মীচরণ সাহার বড় ছেলে প্রসন্ন সাহা। এই বাড়িতেই ১৯৩৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত সুরকার ও সংগীত পরিচালক একুশে এবং স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত সত্য সাহা। বাড়িটিতে নানা কারুকাজখচিত দুইটি বাস ভবন, একটি দ্বিতল বিশিষ্ট কাচারি ঘর, একটি মন্দির, তিনটি পুকুরসহ ফসলি জমি ও গাছগাছালির বাগান রয়েছে। ঐতিহাসিক এই বাড়িটিতে একসময় সিনেমার শূটিংও হয়েছে।
১৯৫৫ সালে সত্য সাহা প্রথম সিনেমা ‘সুতরাং দিয়ে সংগীতশিল্পী হিসাবে যাত্রা শুরু করেন। ১৮ দিন ধরে সিনেমাটি এই জমিদার বাড়িতে চিত্রায়িত হয়েছিল। সত্য সাহার প্রযোজনায় ১৯৭৫ সালে ‘অশিতি’ সিনেমার দ"শ্য ধারণও হয় এই বাড়িতে, ১৯৯৯ সালের ২৭ জানুয়ারি সত্য সাহা ম"ত্যুবরণ করেন। তার দুই ছেলে। বড় ছেলে সুমন সাহা এবং ছোট ছেলে ইমন সাহা সংগীত শিল্পী। জমিদার বাড়িটি বর্তমান দেখভাল করছেন জমিদার বাড়ির বংশধর সাবেক কাস্টমস কর্মকর্তা ননী গোপাল সাহা ও রাঙামাটি সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক স্বপন কুমার সাহা। হাটহাজারীর নাজিরহাট, ধলই, গুমানমর্দন, চারিয়া, জোবরা, আলীপুর, ফতেয়াবাদসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ছিল তাদের জমিদারি। এসব অঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার কৃষক প্রতিবছর খাজনা দিতে আসত এই বাড়িতে। নিয়মিত রাজপুণ্যাহ অনুষ্ঠান হতো। জমিদার প্রসন্ন কুমার সাহার দুটি ঘোড়ার গাড়ি ছিল। তিনি ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে আদালত ভবনে যেতেন। দুজন নেপালী দারোয়ান সবসময় তার সঙ্গে থাকত।
প্যানেল