ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটা

সৈয়দ মুরছালিন, কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ

প্রকাশিত: ২০:৩৪, ২ মে ২০২৫

সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটা

সাহিত্য, সংস্কৃতি, বিনোদনকে পূর্ণতা দিতে মসুয়া জমিদারবাড়ির অবদান বাংলার ইতিহাসে অবিস্মরণীয়। বাংলার সাহিত্য ও চলচ্চিত্রকে যারা পূর্ণতা দিয়েছেন তাদের মধ্যে অনতম একজন হলেন অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়। সত্যজিৎ রায়ের জন্ম কলকাতায়। তবে তার আদি পুরুষদের পায়ের স্মৃতিচিহ্ন এখনো লেগে আছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী জমিদারবাড়িতে। বাড়িটির প্রবেশমুখেই মিলবে রায় পরিবারের তৎকালীন জমিদারিত্বের ছাপ। বর্তমানে বাড়িটি বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে রয়েছে। যদিও এই বাড়িতে কখনোই আসেননি কালজয়ী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়। তবে এখানে স্থায়ীভাবেই বসবাস করতেন সত্যজিৎ রায়ের পিতামহ বিশিষ্ট ছড়াকার ও কথাসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী এবং তার দাদা সারদারঞ্জন রায়। ওই বাড়ির সামনে বিলবোর্ডে সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি লেখা হলেও গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে সেটি পরিচিত ‘জমিদারবাড়ি’ হিসেবে। সাহিত্য, চলচ্চিত্র ছাড়াও নানা ইতিহাস বহন করে আসছে এ বাড়িটি। তৎকালীন সময়ে মসূয়া এলাকার জমিদার ছিলেন হরিকিশোর রায় চৌধুরী। সে সময় প্রায় সাড়ে চার একর জায়গা বিস্তৃত সেই জমিদারবাড়ির সিংহভাগ বিলীন হয়ে গেছে কালের গর্ভে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারাতে থাকে জমিদারবাড়িটির দালান-কোঠার অস্তিত্ব। ছাদের অধিকাংশ না থাকায় বাড়িটি প্রায় ধ্বংসের মুখে পড়তে যাচ্ছিল। ফলে শঙ্কা করা হচ্ছিল এই অবস্থায় পড়ে থাকলে বাড়িটি তার সৌন্দর্য হারাবে। দেশ-বিদেশের পর্যটকদের নজরকাড়া বাড়িটি অকালেই বিলীন হয়ে যাবে। বাড়ির প্রবেশমুখেই রয়েছে তখনকার জমিদারদের তৈরি বিশালাকৃতির বড় পুকুর। যেটি ‘শান বাঁধাই’ ঘাট হিসেবে পরিচিত। চারপাশের ময়লা-আবর্জনা এবং অব্যবস্থাপনায় পুকুরটি বর্তমানে নর্দমায় রূপ নিয়েছে। পুকুরের ওপরেই রয়েছে বিশালাকার গাছ। যেখানে বসে আলাপচারিতায় মেতে থাকতেন তৎকালীন জমিদার পরিবার। বাংলাদেশ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতাধীন বাড়িটি সংস্কার করা হয়েছে। কারিগরদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় দেওয়ালের গায়ে ফিরেছে সেই প্রাচীন জমিদারি সময়ে গড়ে ওঠা বাড়টির আসল রূপ। বাড়ির ধসে যাওয়া ছাদের ওপর এখন দেওয়া হচ্ছে মজবুত কাঠের ঢিপি। সেই সঙ্গে ভেঙে যাওয়া দেওয়ালে সেই কারুকার্য বা নকশা ঠিক রেখে নতুন ইট দিয়ে দেওয়াল সংস্কার করা হয়েছে। বাড়িটির পাশেই বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের উদ্যোগে ২০১২ সালে ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি অতিথিশালাসহ বাড়ির সীমানা প্রাচীর ও রাস্তাঘাট সংস্কার করা হয়েছিল। দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটকদের সেই অতিথিশালায় থাকার সুযোগ আছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, মসূয়া জমিদারবাড়িটি মসূয়া তথা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য বহন করে। বাড়িটির ইতিহাস-ঐতিহ্য পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে বাড়িটির অস্তিত্ব ধরে রাখা ছিল সময়ের দাবি। সরকারের এমন উদ্যোগকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাঈদুল ইসলাম বলেন, অস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আওতাধীন সংস্কার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাড়িটির সংস্কার পুরোপুরি শেষ হয়েছে এবং জমিদারবাড়িটির সেই পুরনো রূপ ফিরবে বলে আশাবাদী। ভবিষ্যতে আরও পর্যটক আকৃষ্ট করতে উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

প্যানেল

×

শীর্ষ সংবাদ:

যেই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে: আমীর খসরু
জামায়াত নেতারা রাজাকার হলে পাকিস্তানে গাড়ি বাড়ি থাকতো : শামীম সাঈদী
এনসিপির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই- উমামা ফাতেমা
‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটকদের অধিকাংশই ভারতীয় মুসলমান
ইয়েমেনে হামলা চালিয়েই সাগরে ডুবে গেল মার্কিন সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান
জামিন পেলেননা তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিন
লন্ডনে আজ আর্সেনাল পিএসজি মহারণ
১৭ অভিনয়শিল্পীর নামে মামলা, তালিকায় আছেন নুসরাত ফারিয়া-অপু বিশ্বাস-ভাবনাসহ অনেকেই
১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ডের ১১৯তম ড্র অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল
স্বর্ণের দাম, রেকর্ড উচ্চতা থেকে পতনের পথে
কুমিল্লায় পুলিশ-সেনাবাহিনীর চাকরির নামে প্রতারণা: দালালসহ ১৩ জন গ্রেফতার
১২ বছর বয়সী ছেলে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার