ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০১ মে ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

আতঙ্ক ও শব্দদূষণ

প্রকাশিত: ২১:১৮, ২৮ অক্টোবর ২০২১

আতঙ্ক ও শব্দদূষণ

সড়কে মোটরসাইকেলের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। রাস্তা পার হতে গেলে দেখা যায় সারি সারি মোটরসাইকেল লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের জন্য রাস্তা পার হওয়াও দুরূহ হয়ে যায়। কোনভাবেই তারা জায়গা দেয় না। আবার কখনও রিকশা/গাড়ির মাঝখান দিয়ে হঠাৎ করে এমনভাবে টান দেয় যে, তাতে রিকশা/গাড়ির চালক আর যাত্রীরাও আতঙ্কিত হয়ে যায়। অনলাইন রাইড শেয়ার করার সুবিধা বেড়ে যাওয়ার ফলে অনেকেই বাড়তি আয়ের আশায় মোটরসাইকেল কিনে যেমন নিজে যাতায়াত সুবিধা ভোগ করছে, তেমনি বাড়তি আয়ও করছে। এটা নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষদের জন্য একটা সুন্দর উপার্জনের পথ। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এর ফলে সড়কে মোটরসাইকেলের সংখ্যা যেমন মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে, তেমনি তা আগের চাইতে বহুগুণ আতঙ্কের কারণও হয়ে উঠেছে। যথেচ্ছ গতি ও যত্রতত্র বেপরোয়া চলাচল পথচারীদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে । ফলে নিজেরা যেমন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে, তেমনি তাদের জন্য অন্যরাও দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। অনেক সময় প্রাণও যাচ্ছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আমার আপু এমন একটি দুর্ঘটনার শিকার হন। অফিস ছুটির পর বসুন্ধরার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পাশ দিয়ে তিনি হেঁটে আসছিলেন। হঠাৎ পেছন থেকে একটা বেপরোয়া মোটরসাইকেল তাকে এমন প্রচ- বেগে ধাক্কা দেয় যে, তিনি দূরে ছিটকে পড়ে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারান। ফলে তার নাক, দাঁত, পায়ের পাতার একটা হাড়, পায়ের বড় দুটি হাড় ভেঙ্গে যায়। পিঠেরও কয়েকটি হাড় ফেটে যায়। প্রচ- রক্তক্ষরণের জন্য ডাক্তার ভেবেছিলেন ব্রেনে আঘাত পেয়েছেন। আল্লাহ্র অশেষ রহমত তা হয়নি। কিন্তু ভাঙ্গা পা নিয়ে এক বছর তাকে বিছানায় পড়ে থাকতে হয়েছে। মোটরসাইকেল চালকের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। এমন আরও অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে তাদের এমন বেপরোয়া চলাচলের জন্য। তারা কি ট্রাফিক আইনের উর্ধে? তীব্র ও মুহুর্মুহ শব্দে হর্ন বাজানোর ফলে যে মারাত্মক শব্দদূষণ তারা করে চলেছে, এ বিষয়েও কি তারা সচেতন নয়! মাঝে মাঝে রাস্তায় যানজট থাকলে তারা ফুটপাথে চলে আসে, আর পেছন থেকে এক নাগাড়ে হর্ন বাজাতে থাকে তাদের যেতে দেয়ার জন্য। আবার কখনও দেখা যায় ফুটপাথের ওপরে এমনভাবে তারা মোটরসাইকেল রেখেছে যে সেখান দিয়ে হাঁটা যায় না। কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টো ঝগড়া করে। অবিবেচক চালকদের লাগাম টেনে ধরার কি কেউ নেই? রামপুরা, ঢাকা থেকে
×