চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুতে মঙ্গলবার একটি লাইটার জাহাজ ধাক্কা দেয়
সংস্কারাধীন চট্টগ্রামের শতবর্ষী কালুরঘাট সেতুতে ধাক্কা দিয়েছে একটি লাইটার জাহাজ। এমভি সমুদা-১ নামের জাহাজটি সেতুর সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আটকে যায়। মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে ঘটে এ ঘটনা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাহাজটি কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম প্রান্তের একে খান ডক ইয়ার্ড থেকে ভেসে এসে ধাক্কা দেয়। এ সময় নদীতে ¯্র্েরাত প্রবাহ ছিল। লাইটারটি এসে সেতুর সঙ্গে আটকে যায়। জোয়ার ও বাতাসের কারণেই জাহাজটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর ৯ নম্বর স্প্যানে আঘাত করে।
ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক যে তথ্য পাওয়া গেছে তা হলো, লাইটার জাহাজের ধাক্কায় সেতুর স্প্যানসহ নি¤œœাংশের কিছু ক্ষতি সাধিত হয়েছে। একইসঙ্গে জাহাজটিও ক্ষতিগ্র্রস্ত হয়েছে।
রেল কর্তৃপক্ষ নৌ পুলিশের সহায়তায় সেতুর সঙ্গে আটকে থাকা জাহাজটি টাগবোটের মাধ্যমে সরিয়ে নিয়েছে। জাহাজের ধাক্কায় সেতুর কতটুকু ক্ষতি হয়েছে তা তদন্তের পর বেরিয়ে আসবে। তবে ট্রাকের ক্ষতি না হওয়ায় সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কোনো সমস্যা হবে না। খবর পেয়ে ছুটে আসেন পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
দুর্ঘটনায় কবলিত সেতুটি পরিদর্শন করেন রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত ও সংস্কার কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের টিম। তবে এ দুুর্ঘটনায় কেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি রেল কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে জাহাজটির মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছে রেলের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
নৌ পুলিশ সূত্র জানায়, এমভি সামুদা-১ নামের জাহাজটিকে হামিদচর এলাকায় মালিক পক্ষের একটি ডক ইয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এ সময় জোয়ারের সঙ্গে ছিল প্রবল বাতাস। এতে জাহাজটিকে নিয়ন্ত্রণ রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে এটি ছুটে গিয়ে সেতুতে আঘাত করে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ক্ষতি নিরুপণের পর এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
প্রসঙ্গত, কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট সেতু অংশ থেকে প্রতিদিনই শতাধিক বাল্কহেড ও ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কাজ চলে আসছে। এসব বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ড্রেজার ও লাইটার শিপগুলোর কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। প্রতিদিনই সেতুর নিচ দিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন আকারের জলযান।
কর্ণফুলী নদীর ওপর শতবর্ষ প্রাচীন এই সেতুটি অনেকটাই জরাজীর্ণ। কক্সবাজার রেল লাইন স্থাপিত হলেও নতুন সেতু হয়নি। পুরনো এই সেতুর ওপর দিয়েই চালু করা হয়েছে ট্রেন চলাচল। নতুন সেতু হওয়ার আগ পর্যন্ত বেশ ক’বছর এই সেতুর ওপর দিয়েই চলতে হবে ট্রেন।
কালুরঘাট মূলত রেল সেতু হলেও এর ওপর দিয়ে চলে সড়ক যানও। কিন্তু এখন যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ায় সেখানে চালু হয়েছে ফেরি সার্ভিস। বোয়ালখালীর যাত্রীরা এই ফেরি ব্যবহার করছেন। বর্তমানে সেতুর ওপরে সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে। এ কাজটি পরিচালনা করছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার কোম্পানি লিমিটেড।