ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি

জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিন

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:০২, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিন

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ডা.  নাহিদ ফেরদৌসকে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিসিয়েটিভ স্বর্ণপদক’ প্রদান করেন

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। খবর বাসসর।
রাষ্ট্রপ্রধান মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে কমিউনিটি ক্লিনিকের ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। তিনি দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয় এবং জনগণের ভোগান্তি বাড়ে এ ধরনের কর্মসূচি পরিহারের অনুরোধ জানান। মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে গৃহীত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নেও সকলকে একযোগে কাজ করার তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি।
দেশের জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কমিউনিটি ক্লিনিকের টেকসই অগ্রযাত্রায় সকলকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন রাষ্ট্রপতি। কমিউনিটি ক্লিনিকের উদ্যোক্তাদের সার্বিক কার্যক্রমের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন বাঙালির স্বাধীনতার জন্য কাজ করে গেছেন এবং বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের জনকল্যাণমুখী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল গোপালগঞ্জের গিমাডাঙ্গায় প্রথম কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু করেন। কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম বর্তমানে সারাবিশ্বে স্বাস্থ্যসেবার ‘অনন্য মডেল’ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। কিন্ত ২০০১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর তৎকালীন সরকারের একটি প্রতিহিংসামূলক জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্তে বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রান্তিক মানুষের জন্য এই জননন্দিত স্বাস্থ্য সেবার উদ্যোগটি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি আশ্রয়ণ, সবার জন্য বিদ্যুৎ, আমার বাড়ি আমার খামার, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসহ মোট দশটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, জাতিসংঘ ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’কে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটি সরকারি, বেসরকারি অংশীদারিত্বে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় আমাদের সরকারের উদ্ভাবনী নেতৃত্বের প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বর্তমানে ১৪ হাজার ১৭৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক জন অংশীদারিত্বের একটি মডেল হিসেবে কাজ করছে। এটি সরকার-জনগণ পার্টনারশিপের এক অনন্য উদাহরণ।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ এমডিজি পুরস্কার, সাউথ-সাউথ পুরস্কার, গ্যাভি পুরস্কার ও ভ্যাক্সিন হিরো পুরস্কারের মতো অনেক সম্মানজনক আন্তর্জাতিক পুরস্কার বাংলাদেশ অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর এই অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে আর আমাদের করেছে গর্বিত।  
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, প্রধানমন্ত্রীর অনন্য উদ্যোগ ‘দ্য  শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ ছড়িয়ে পড়বে পুরো বিশ্বে এবং মানব কল্যাণে ভূমিকা রাখবে।

কমিউনিটি ক্লিনিক সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলম, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অতিরিক্ত সচিব এ কে এম নুরুন্নবি কবীর এবং কমিউনিটি বেইসড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) এর লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. কাইয়ুম তালুকদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এদিকে, কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা ও অধিকতর উন্নয়নের জন্য বিশেষ অবদান রাখায় তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়। তারা হলেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ, জন হপকিনস ইউনিভার্সিটির গেস্ট লেকচারার বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আহমদ আল কবির, গোপালগঞ্জের শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ফেরদৌস।
অনুষ্ঠানে ‘স্মার্ট কমিউনিটি ক্লিনিক- কমিউনিটি ক্লিনিকের বিশ্বায়ন’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়। পরে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন ফটোসেশনে অংশ নেন।

×