ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কুয়াকাটায় রাখাইনদের পুরাতন বৌদ্ধবিহার সংরক্ষণের দাবি

প্রকাশিত: ১৩:৪৬, ২৫ নভেম্বর ২০২১

কুয়াকাটায় রাখাইনদের পুরাতন বৌদ্ধবিহার সংরক্ষণের দাবি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী ॥ কুয়াকাটায় প্রায় ১০০ বছরের পুরাতন বৌদ্ধবিহার এলাকার জমিতে এবার স্থাপনা তোলা হয়েছে। আশপাশ আগেই দখল হয়ে গেছে। কোন কিছুতেই থামছেনা দখল তান্ডব। ৯৯ শতক জমি এখনও এস এ খতিয়ান অনুসারে রাখাইন পাড়ার মগগণের পক্ষে মাদবর ফ্রুচাই এর নামে রেকর্ড রয়েছে। যেখানে আরও লেখা রয়েছে বুদ্ধমন্দির মগ সাধারনের ব্যবহারের। এস এ খতিয়ান নম্বর ৬৫৯। দাগ নম্বর ৫৩৩৪/৫৪৮১ এবং ৫৩৩৫/৫৪৯৩। যেখানে পাড়ার বাড়ির ৬৪ শতক এবং দেবালয় ৩৫ শতক লেখা রয়েছে। ২০০৯ সালের ৮ জুলাইয়ের একটি সইমোহর পর্চায় এমনসব প্রমাণপত্র রয়েছে। প্রবীন রাখাইন ভিক্ষু উঃপায়াচুন্দ্রা মহাথেরো ২০১৪ সালে জেলা প্রশাসক বরাবর এক আবেদনপত্রে উল্লেখ করেছেন ওখানে পচিশ ফুট একটি বৌদ্ধ স্তম্ভ রয়েছে। রয়েছে পচিশ ফুট লম্বা শায়িত বৌদ্ধ প্রতিকৃতি। যা এখনও বিদ্যমান। এসব বৌদ্ধ প্রতিকৃতি ইট ও পাথর দিয়ে সম্পুর্ণভাবে ঢাকা রয়েছে। একটি বৃহৎ আকারের ঢালাইয়ের ওপর বৌদ্ধ প্রতিকৃতির আসন ছাড়াও পুরনো বিহারের ধ্বংসস্তুপ পড়ে আছে। রেকর্ডে ৯৯ শতক জমি এ বৌদ্ধ বিহারের থাকলেও পরিত্যক্ত এ বিহারটির উত্তরদিক আগেই দখল হয়ে গেছে। সবশেষ সম্প্রতি দক্ষিণ পাশে এবং প্রবেশপথের পশ্চিম দিকটা দখল হয়েছে। একটি সাইনবোর্ড দেয়া আছে। যেখানে পুরাতন বৌদ্ধবিহার লেখা রয়েছে। ১৯২৫ সালে এই বৌদ্ধবিহারটি স্থাপনের কথা উল্লেখ রয়েছে। ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা কর্মসূচীর আওতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই রাখাইন বৌদ্ধবিহার এলাকার সংস্কারের জন্য তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু সীমানা নির্ধারণ জটিলতায় সংস্কার করা হয়নি। এখন ফ্রি-স্টাইলে দেবালয়ের এই জমি বৌদ্ধমঠ, বিহারসহ দখল শুরু হয়েছে। পুরনো বৌদ্ধবিহার কমিটির সভাপিত এমং তালুদার জানান, তিনি তাঁদের বৌদ্ধবিহার এলাকার জমির সীমানা বাদ দিয়ে ভরাট কাজ করতে বলেছিলেন। কিন্তু দখলদাররা মানেনি। স্থানীয়রা জানান, কুয়াকাটার মহাসড়ক প্রশস্থকরন কিংবা পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য ডোবার ওই জায়গা এখনই সংরক্ষন করা প্রয়োজন। আর পুরনো বৌদ্ধ বিহার এলাকা দ্রুত সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার জানান, তিনি দুই দফা কাজ বন্ধ করেছিলেন। তবে তেমং নামের এক রাখাইন এখানে জটিলতা সৃষ্টি করেছে বলেও অনেক অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, তিনি সামনের একাংশের কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। বৌদ্ধ বিহারের জায়গা দখলের সুযোগ নেই। সচেতন সমাজের দাবি এখানকার আদিবাসীদের প্রাচীণ ঐতিহ্য ও নিদর্শণ রক্ষায় ওখানে রাখাইন জনগোষ্ঠী বসবাস না করলেও এই পুরাকীর্তি যথাযথভাবে সরকারি উদ্যোগে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
×