ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

দুঃসময়ে উচ্চশিক্ষা

প্রকাশিত: ২০:৪৯, ১৯ মে ২০২১

দুঃসময়ে উচ্চশিক্ষা

করোনার মারাত্মক ছোবলে সবচেয়ে বিপন্ন অবস্থায় শিক্ষাকার্যক্রম। সেই ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। প্রাইমারী থেকে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষার সর্বোচ্চ পাদপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অবরুদ্ধ। করোনা পরিস্থিতিও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আবর্তিত। প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময় উচ্চশিক্ষার ছাত্রছাত্রীরা তাদের মহা মূল্যবান সময় কাটাচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে ঘরে বসে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও শেষ পর্যন্ত তা পিছিয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার প্রাক্কালে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান কর্মসূচীর আওতায় এনে নিরাপত্তার বিষয়টিও এক প্রকার চূড়ান্ত করা হয়েছিল। তবে সংশ্লিষ্টদের মাঝে টিকা দান এখনও অনিশ্চিত। ইতোমধ্যে ভারতে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় চুক্তি মোতাবেক বাকি টিকা আনাও সম্ভব হচ্ছে না। প্রথম ডোজ টিকা গ্রহণও আপাতত স্থগিত। অন্য দেশ থেকে নতুন টিকা আমদানি করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। উপস্থিত সঙ্কট বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি পিছিয়ে গেছে। আগামীতে করোনা সংক্রমণ কতোটা নিয়ন্ত্রণে আসতে পারে সেটি অনিশ্চিয়তার কবলে। সবার ক্ষেত্রে করোনার টিকা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অনুপ্রবেশ কিভাবে সম্ভব সেটাও বড় প্রশ্ন। সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও ভাবতে হবে সবার আগে। যার জন্য টিকা দান কর্মসূচীকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় এনে সর্বাধিক প্রাধান্য দিতে হবে। যদি অল্প সময়ের মধ্যে করোনার টিকা চলে আসে তাহলে সবাইকে টিকার আওতায় এনে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার চিন্তা-ভাবনা করা যেতে পারে। সেটাও সময়ের ওপরই নির্ভরশীল। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যবৃন্দ ভার্চুয়াল এক সভায় মিলিত হয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করলে একটা পথ বের হলেও হতে পারে। বর্তমানে দেশে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী আবাসিক হলে অবস্থান করে। শিক্ষকও আছেন পর্যাপ্ত সংখ্যক। তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি উপেক্ষণীয় নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত সিংহ ভাগ মানুষই এখন অবধি টিকা নিতে পারেননি। সব শিক্ষার্থীর পরিচয়পত্রের নম্বর পাওয়াও যায়নি। মাত্র ৮০ হাজার শিক্ষার্থীর পরিচয়পত্রের নম্বর মিলেছে। ইতোমধ্যে ক্ষতি যা হওয়ার তা পোষানো যাবে কিভাবে সেটা ভাবাও বাঞ্ছনীয়। প্রাতিষ্ঠানিক পাঠ্যক্রমের সঙ্কট ছাড়াও সেশন জটের আবর্ত থেকে শিক্ষর্থীরা কিভাবে বের হয়ে আসবে তাও ভাবনার বিষয়। সবেমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেশনজটের সঙ্কট থেকে মুক্তি পেয়েছে। সেখানে নতুন করে করোনা সংক্রমণ যে থাবা বিস্তার করেছে সে থেকে পরিত্রাণ কিভাবে মিলবে তাও এক বিরাট প্রশ্ন। সবদিক ভেবেচিন্তেই বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
×