ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২১ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের যৌথ সভায় ওবায়দুল কাদের

আমরা মাঠে না থাকলে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাবে

​​​​​​​বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:০০, ১০ মে ২০২৪

আমরা মাঠে না থাকলে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাবে

যৌথ সভায় বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মাঠে না থাকলে বিএনপি সমাবেশের নামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাবে। তাদের অতীতের ইতিহাস তাই বলে। বিএনপির সমাবেশ মানেই অগ্নিসন্ত্রাস, বিশৃঙ্খলা রক্তপাত। বিএনপির কাছে গোটা রাজধানীকে যদি ছেড়ে দিই তাহলে জনগণের জানমাল সুরক্ষায় সমস্যা হয়। সেজন্য আমাদের মাঠে থাকতে হয়।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক যৌথসভায় সূচনা বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ এবং সকল সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকগণের সঙ্গে এই যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা থেকে আজ শনিবার মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শান্তি উন্নয়ন সমাবেশ করার কর্মসূচি ঘোষণা দেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের জানান, বিএনপি নেতা গয়েশ্বর বলেছেন যে, দেশের জনগণকে নয়, পার্শ্ববর্তী দেশকে খুশি করে টিকে আছে আওয়ামী লীগ। ভারত আমাদের প্রতিবেশী পরীক্ষিত বন্ধু। নির্বাচনের সময় তারা কোনো হস্তক্ষেপ করেনি। ভারতকে খুশি করে নয়, জনগণের শক্তিতেই টিকে আছি। ভারতের দয়ায় নয়। পঁচাত্তরের পর কত বছর ক্ষমতায় ছিলাম না, তখন কি ভারত আমাদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল?

যৌথ সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য . আব্দুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক . হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হীরু, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোন পাল্টাপাল্টি নয়, জনগণের সুরক্ষার জন্যই আওয়ামী লীগকে মাঠে থাকতে হয়। সমাবেশ থেকে সন্ত্রাস, নৈরাজ্যটাই বিএনপির রাজনীতি। তাই আমাদের সজাগ থাকতে হবে। বিএনপি সুযোগ পেলেই ফনা তুলে রাষ্ট্র জানমালের ক্ষতি করবে।

তিনি বলেন, ভোটারদের ভয় পায় বলেই বিএনপি নির্বাচনে আসে না। নির্বাচন নিয়ে তাদের দাবির কোনো যৌক্তিকতা নেই। আন্দোলন নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থতার পর বিএনপি আবারও আন্দোলনের নামে দেশে বিশৃখলা সন্ত্রাস সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। নিয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে রাজনীতি করতে পারে, তারা দেশের বিরুদ্ধে অনেক কিছুই করতে পারে। উপজেলা নির্বাচন নিয়েও ষড়যন্ত্র আছে জানিয়ে তিনি বলেন, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা কোনো সংঘাতে জড়াব না।

বিএনপি আমলে কোন স্থানীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে, কোনো ধরনের হতাহতের ঘটনা ছাড়া- এমন প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, এবারের উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপ শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে, কোনো ধরনের সংঘাত হয়নি। এর কৃতিত্ব সরকার নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এবারে যে ভোট পড়ছে, খুব ভালো ভোট পড়েছে তা বলব না, মোটামুটি পড়েছে। এই নির্বাচনে বিএনপির ভোট বর্জনকে প্রত্যাখ্যান করে দলটির অনেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। দলটির কারও কথা কেউ শোনে না। ভুল আর ব্যর্থতার চোরাবালিতে আটকে থাকা বিএনপি কোনো কিছু আদায় করতে পারবে না। মুখে ফুলঝুরি ছড়ালেও ভেতরে তারা হতাশ। যতদিন তারা ইতিবাচক রাজনীতির ধারায় ফিরে না আসবে ততদিন তারা জনবিচ্ছিন্ন থাকবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা যদি মাঠে না থাকি, তাহলে অতীতের অভিজ্ঞতা বলে বিএনপির সমাবেশ মানেই নৈরাজ্য, পুলিশ হত্যা, সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, হাসপাতালে হামলা। এটা ২৮ অক্টোবর লক্ষ্য করেছি। আন্দোলন করেছে, আমরা নাকি পালানোর পথ পাব না। আর সেদিন দেখলাম কত যে দ্রুত মঞ্চ থেকে নেমে অলিগলি খুঁজে পাচ্ছিল না, পালাচ্ছিল।

একই দিন আওয়ামী লীগ বিএনপির সমাবেশ করার বিষয়ে তিনি বলেন, অনেকে বলেন, আমরা পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করছি। আজ কিন্তু আমরা কোনো সমাবেশ করিনি। সমাবেশ আমরা করব, কারণ বিএনপির সমাবেশ মানেই অগ্নিসন্ত্রাস, বিশৃঙ্খলা, রক্তপাত। সমাবেশ থেকে পাল্টাপাল্টি মারামারি, সংঘর্ষ হয়নি। আমরা নাম দিয়েছি শান্তি সমাবেশ, আমরা সেভাবেই শুরু শেষ করেছি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতারা ছাড়া পাচ্ছেন। দেশের আদালত, বিচার বিভাগ স্বাধীন বলে সেটা সম্ভব হচ্ছে। নৈরাজ্য করে বিএনপি একটা শিক্ষা পেয়েছে। আবার নৈরাজ্য, সন্ত্রাস অরাজকতা করলে এবার ডাবল শিক্ষা পাবে। আমরা বসে নেই, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সর্বশক্তি দিয়ে লড়ব।

×