ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সিটি, পৌরসভা,  জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এমন পরিকল্পনা গ্রহণের লক্ষ্য রয়েছে সরকারের ॥ নানা কারণে কল্যাণমুখী প্রকল্পে ধীর গতি

বর্জ্য দিয়ে উৎপাদন হবে বিদ্যুৎ পরিচ্ছন্ন হবে ঢাকা নগরী

স্বপ্না চক্রবর্তী

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ১০ মে ২০২৪

বর্জ্য দিয়ে উৎপাদন হবে বিদ্যুৎ পরিচ্ছন্ন হবে ঢাকা নগরী

.

ঢাকা মহানগরীর বর্জ্য দিয়ে হবে বিদ্যুৎ উৎপাদন। এতে যেমন কম দামে মিলবে বিদ্যুৎ তেমনি নগরবাসী মুক্তি পাবে যাত্রতত্র আবর্জনার স্তূপ থেকে। এমন একটি কল্যাণমুখী প্রকল্প হাতে নিয়ে কাজ শুরু হলেও নানা কারণে তা বাস্তবায়নে ধীর গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই প্রকল্প হবে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। রাজধানীর প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে সারাদেশে সিটি করপোরেশন, পৌরসভাজেলা উপজেলা পর্যায়ে এমন পরিকল্পনা গ্রহণের লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।

দুই বছর আগে ঘটা করে উদ্বোধন হয়েছিলে নারায়ণগঞ্জ জেলার জালকুড়ি এলাকায় মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বর্জ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের। গ্রাহকদের কাছে মাত্র থেকে টাকায় বিদ্যুৎ বিক্রির লক্ষ্যে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মেগাওয়াট ক্ষমতার এই বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। কনসোর্টিয়াম অব ইউডি এনভায়রনমেন্টাল ইকুইপমেন্ট টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড নামে চীনের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিটি সম্প্রতি বাতিল হয়েছে। ফলে বহুল প্রত্যাশিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি আর হচ্ছে না। এদিকে সাভারের আমিনবাজারে ঢিমেতালে হলেও কাজ চলছে অপর বর্জ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের। ২০২১ সালে কেন্দ্রটি বানানোর লক্ষ্যে চীনের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের বছর পার হলেও মাত্র হস্তান্তর হয়েছে এর জমি। বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে কাজ শুরু হতে আরও অন্তত  দুই মাস সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অধীনে সাভারের আমিনবাজারে প্রায় ৩০ একর জায়গাজুড়ে তৈরি হওয়ার কথা রয়েছে৪২. মে.. বর্জ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পটি। লক্ষ্যে চায়না কোম্পানিচায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনএর সঙ্গে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত হয় ৪টি চুক্তি। ওই সময় বলা হয়, শুধু আমিনবাজারেই নয় দেশজুড়ে রকম অন্তত আরও ৪টি বর্জ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এরই ধারাবাহিকতায় শুরু হয় নারায়ণগঞ্জের জালকুড়িতে একই রকম আরেকটি প্রকল্পের কাজ। কিন্তু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চীনের কনসোর্টিয়াম অব ইউডি এনভায়রনমেন্টাল ইকুইপমেন্ট টেকনোলজি কোম্পানি লিমিটেড কাজ করতে অস্বীকৃতি জানালে প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিভাগের যুগ্ম সচিব নীরদ চন্দ্র - জনকণ্ঠকে বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে আমরা আশাবাদী ছিলাম। সরকার পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষায় যেসব প্রকল্প গ্রহণ করতে চলেছে নারায়ণগঞ্জের প্রকল্পটি ছিল তার একটি। এর আদলে সারাদেশের পৌরসভা গ্রামে এই কাজ করার পরিকল্পনা ছিল। আমরা ২০ থেকে ৩০টি জায়গাও চিহ্নিত করেছিলাম। কিন্তু নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কাজের অনীহার জন্য ওই প্রকল্পটি বাতিল হলো। তবে আমিনবাজারের বর্জ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইতোমধ্যে জমি হস্তান্তর হয়ে গেছে। আশা করছি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

এই কেন্দ্রের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে এটিই প্রথম ধরনের প্রকল্প। ৪২ দশমিক মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণকাজ করবে চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিএমইসি) এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৩২৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, যা ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে চূড়ান্ত অনুমোদন পায়।

জানা যায়, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং প্রক্রিয়াকরণ কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাইভেট সেক্টর পাওয়ার জেনারেশন পলিসির আওতায় বিওও ভিত্তিতে আইপিপি হিসেবে চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিএমইসি) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৪২ দশমিক মেগাওয়াট ক্ষমতার বর্জ্য বিদ্যুৎকেন্দ্রেনো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্টএর ভিত্তিতে ইনসিনারেশন পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে, যা আর্থিক সমাপনী হিসাবের চূড়ান্তকরণের দিন থেকে ২৪ মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে স্পন্সর কোম্পানি নিজ ঝুঁকিতে প্লান্ট স্থাপন, পরিচালনা রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বহন এবং বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিক্রির মাধ্যমে তাদের ব্যয় নির্বাহ করবে। এতে সিটি করপোরেশন প্লান্ট স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান এবং নিয়মিত বর্জ্য সরবরাহ করবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, প্লান্টটি চালু হলে সেখানে প্রতিদিন হাজার টন বর্জ্য সরবরাহ করতে হবে। পরিমাণ বর্জ্য সরবরাহ করতে না পারলে উত্তর সিটি করপোরেশনকে প্রতি টন ঘাটতি বর্জ্যরে জন্য হাজার টাকা হারে স্পন্সর কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। যেহেতু প্রতিদিন হাজার টন বর্জ্য প্রয়োজন হবে তাই পরিমাণ বর্জ্য সংগ্রহ করতে হলে আর যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকবে না। প্রক্রিয়ায় বর্জ্য প্রায় সম্পূর্ণরূপে দহন করে বর্জ্যরে আয়তন প্রায় ৯০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব এবং এর ফলে বর্জ্য ফেলার জমির চাহিদাও হ্রাস পাবে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদ্যুৎকেন্দ্র ইনসিনারেশন প্রযুক্তি প্রয়োগে বর্জ্য দহনের মাধ্যমে সৃষ্ট গ্যাসীয় নিঃসরণ মান কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে। গ্রহণ করা হবে ইইউ/২০১০/৭৫ ইইউ মানদণ্ড যা বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ১৯৯৭-এর মানদণ্ড থেকে বেশি পরিবেশবান্ধব এবং বর্তমানে উন্নত দেশগুলোতে অনুসরণ করা হচ্ছে। প্রকল্পটির সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশের সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা জেলা পর্যায়ে ইনসিনারেশন পদ্ধতিতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে সরকার।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির সম্ভাবনার বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী, উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সিটি করপোরেশন পৌরসভায় রকম প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হবে। আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ঢাকা শহরের অন্যতম সমস্যা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ গ্রহণ করি। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দফায় দফায় সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক অনানুষ্ঠানিক সভা করেছি। বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্যে যেসব দেশ বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে এমন বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমণ করার পাশাপাশি বিষয়ে অভিজ্ঞ দেশি-বিদেশীদের মতামতও নিয়েছি। এই প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়ন হলে দেশের সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং জেলা পর্যায়ে ইনসিনারেশন পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে সরকার।

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বর্তমানে নবায়ণযোগ্য জ্বালানি থেকে ৯১০.৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও মোট ৩২টি প্রকল্পের মাধ্যমে হাজার ৪৪২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প চলমান রয়েছে। শুধু তাই নয় ৭৬টি প্রকল্পের মাধ্যমে আরও হাজার ৬৩২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রক্রিয়া প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুতের জন্য নতুন দ্বার উন্মোচন হবে বলে দাবি করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, কঠিন এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে যেকোনো চ্যালেঞ্জ নিতে রাজি হয়েছে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। এর জন্য তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। এই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হলে দেশের বিদ্যুৎ খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে বলে মনে আমরা মনে করছি। তিনি বলেন, বর্তমানে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে তা যথেষ্ট নয়। জল, সৌর তাপ বায়ু থেকে ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। আর এবার বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো। এতে করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য থেকে চীনা কোম্পানি নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের ক্ষেত্রে নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলে আমি মনে করি।

শুরু থেকেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রত্যক্ষভাবে তত্ত্বাবধান করছেন ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এর মধ্যে আমাদের নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোতে পুরোদমে বর্জ্য সংগ্রহ শুরু করবো শীঘ্রই। আমাদের এখন বিপুল পরিমাণ বর্র্জ্য আমিনবাজারে রয়েছে। ছাড়া সাভার থেকেও আবর্জনা সংগ্রহ করতে পারি। আমাদের আবর্জনার কোনো ঘাটতি হবে না। তিনি বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর পরই আমরা এটি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক আমরা কাজ করছি। এর বাস্তবায়নে যেকোনো চ্যালেঞ্জ নিতে আমরা প্রস্তুত আছি। তবে বেশ কিছু জটিলতার কারণে এর কাজে কিছুটা পিছিয়ে ছিল। এখন জমি হস্তান্তর হয়ে গেছে। আশা করছি দ্রুত কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে গত বছরের শুরু থেকেই কাজ শুরু করে সরকার। এর ধারাবাহিকতায় বছরের শুরুতেই স্বাক্ষরিত হয় সিরাজগঞ্জ ৬৮ মেগাওয়াট সোলার পার্কের। পাশাপাশি আরও অন্তত ৫টি প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ওই বছরই। এর মধ্যে ছিল বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পও। এসব প্রকল্প থেকে বছরে অন্তত ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে হবে জানানো হয় বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে। এসব বিদ্যুৎ ন্যূনতম মূল্যে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।

পাওয়ার সেলের তথ্যমতে, সরকারিভাবে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ৩০ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াট। সম্প্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদন হয়েছে ১৫ হাজার ৬৪৮ মেগাওয়াট। এর বাইরে ভারতের আদানি থেকে আমদানি হচ্ছে প্রতিদিন অন্তত ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। রামপাল থেকে জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে আরও হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। নেপাল থেকে ৫০০ মেগাওয়াটের জলবিদ্যুতের পাশাপাশি জিটুজি ভিত্তিতে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের আমদানি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত। এসব মাধ্যমে দেশে বিদ্যুতের সরবরাহ ছাড়াবে ২১ হাজার ৩৬৬ মেগাওয়াটের বেশি।

বিদ্যুত বিভাগ বলছে, জ্বালানি সংকটে দেশে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। তাই নতুন করে জোর দেওয়া হচ্ছে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে। বাংলাদেশও জ্বালানি সংকটের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় স্বাক্ষরিত হয়েছিল বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কেন্দ্রগুলোর। যেহেতু নারায়ণগঞ্জের মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটি বাতিল হয়েছে। তাই বর্জ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একমাত্র প্রকল্প সাভারের আমিনবাজারের কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ দ্রুত শুরু করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

×