ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ধ্বংসের হাত থেকে পৃথিবী রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ প্রস্তাব

প্রকাশিত: ০০:৩৩, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

ধ্বংসের হাত থেকে পৃথিবী রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ প্রস্তাব

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ধ্বংসের হাত থেকে পৃথিবী ও মানবজাতিকে দ্রুত রক্ষার আহ্বান জানিয়ে পাঁচটি প্রস্তাব দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের চরম অভিঘাত থেকে এই পৃথিবী এবং আমাদেরকে রক্ষার জন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে দ্রুত সাহসী আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছি। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সদর দফতরে ‘ক্লাইমেট এ্যাকশন’ বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের এক গোলটেবিল বৈঠকে ভিডিও বার্তায় এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের ৭৫তম বার্ষিকীতে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রস্তাবগুলো হলো- পৃথিবী ও মানবজাতির সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানো, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কম রাখা এবং প্যারিস চুক্তির সব অনুচ্ছেদের বাস্তবায়ন, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে প্রতিশ্রুত তহবিল সরবরাহ করা, দূষণকারী দেশগুলোকে অবশ্যই জাতীয় নির্ধারিত অবদান (এনডিসি) পূরণে প্রয়োজনীয় প্রশমন ব্যবস্থা নেয়া ও জলবায়ু উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসন বৈশ্বিক দায়িত্বের স্বীকৃতি দেয়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভিডিও বার্তায় এই পাঁচটি প্রস্তাব বাস্তবায়নের সুপারিশও করেন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের সতর্কতা পদক্ষেপের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে এ্যাডাপ্টেশন ও রেজিলিয়েন্স বিষয়ে বাংলাদেশের কিছু ধারণা এবং অভিজ্ঞতা আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও পানি ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করেছে। এ সময় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আমরা ৪ হাজার ২৯১টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, ৫২৩টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। আমাদের ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, এ কারণেই আমরা ‘রিপ’ উদ্যোগে যোগ দিয়েছি। যার লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে এক শ’ কোটি মানুষকে দুর্যোগ থেকে নিরাপদ করা। সবশেষে, বাংলাদেশ সিভিএফের বর্তমান চেয়ারম্যান ও সম্প্রতি ঢাকায় গ্লোবাল সেন্টার অব এ্যাডাপ্টেশনের আঞ্চলিক অফিস প্রতিষ্ঠার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের এই সাইডলাইন বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুক্তরাজ্যের সাংবাদিক ফেমি ওকে। মি. গুতেরেসে ৯০ মিনিটের এই সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এই উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিশে^র বিভিন্ন দেশের সরকারী, বেসরকারী ও সুশীল সমাজের নেতৃস্থানীয় ২০ প্রতিনিধি। বক্তাদের মধ্যে রয়েছেন- যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ইতালির প্রধানমন্ত্রী গোসেপ কোনটে, চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাসটিন পিনেরা একনিকো, নাইজিরিয়ার প্রেসিডেন্ট মাহামাদু ইসুফু, ফিজির প্রধানমন্ত্রী জোসাইয়া ভোরেক বাইনিমারামা, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেইয়েন ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ড. লোটে শেরিং।
×