ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলের সখীপুরে ৫১৪ প্রবাসীকে খুঁজছে প্রশাসন

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২৩ মার্চ ২০২০

টাঙ্গাইলের সখীপুরে ৫১৪ প্রবাসীকে খুঁজছে প্রশাসন

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ টাঙ্গাইলের সখীপুরে বিদেশ ফেরত ৫১৪ প্রবাসীকে হন্যে হয়ে খুঁজছে উপজেলা প্রশাসন। এ লক্ষে উপজেলার একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নে মোট ৮১টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা এসব প্রবাসীদের খুঁজতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করবে। গোয়েন্দা তালিকা অনুযায়ী চলতি মাসে পাঁচ হাজার ২৪৭ জন প্রবাসী বিভিন্ন দেশ থেকে টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় ফিরেছেন। এদিকে টাঙ্গাইল জেলায় বর্তমানে ৭৯০ জন বিদেশ ফেরতকে হোম কোয়ারেন্টাইনের আওতায় আনা হয়েছিল। এর মধ্যে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষ হওয়ায় ১২০ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইন থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত ৬৭০ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছে। টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান জানান, বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলায় মোট ৭৯০ জন বিদেশ ফেরতকে হোম করেন্টাইনের আওতায় আনা হয়েছিল। এর মধ্যে নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ায় ১২০ জনকে হোম করেন্টাইন থেকে অবমুক্তি দেয়া হয়। জানা যায়, এরই মধ্যে শুধু সখীপুর উপজেলায় ফিরেছেন ৬৪৭ জন প্রবাসী। উপজেলা প্রশাসন এ পর্যন্ত ১৩৩ জনকে বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে রেখেছে। অবশিষ্ট ৫১৪ জনের কোনো হদিস স্থানীয় প্রশাসনের কাছে ছিল না। বিদেশ ফেরত এসব ব্যক্তির তথ্য উপজেলা প্রশাসন, থানা ও স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে এসেছে। ওই ৫১৪ জনকে খুঁজতে গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসন প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় পৃথক কমিটি করে দিয়েছেন। এরপর থেকে ওই কমিটি ৫১৪ জন প্রবাসীকে ঠিকানা ধরে খুঁজে বের করে কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও থানা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। সখীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বদিউজ্জামান টিনিউজকে বলেন, টাঙ্গাইল জেলা পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া একটি তালিকা সখীপুর থানা পুলিশের হাতে এসেছে। ওই তালিকা ইউনিয়ন ভিত্তিক সাজিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। উপজেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুস সোবহান টিনিউজকে বলেন, চলতি মাসের ২ মার্চ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত এ উপজেলায় ৬৪৭ জন বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরেছেন। এদের মধ্যে ১৩৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। বাকিদের নজরদারিতে আনার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে আহ্বায়ক করে নয় সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের একজন সরকারি কর্মকর্তা ওই কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করবেন। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাঁর কাজের সুবিধার্থে প্রতিটি ওয়ার্ডের সদস্যকে আহ্বায়ক করে কমিটি করে দেবেন। ৫১৪ জনকে খুঁজতে উপজেলার একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নে মোট ৮১টি কমিটি মাঠ পর্যায়ে কাজ করবে। আমার বিশ্বাস দুই-একদিনের মধ্যেই ৫১৪ জন প্রবাসীকে নজরদারিতে আনা যাবে। সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আসমাউল হুসনা বলেন, ইতিমধ্যে সখীপুরে ১৩৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। যারা হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে চাননি তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজাও দেয়া হয়েছে। আবার অনেকে হয়তো নিজ থেকেও কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। মাঠ পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, থানা পুলিশের কর্মকর্তা, ইউপি সদস্য, কমিউনিটি ক্লিনিকে সিএইচসিপি, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের স্বাস্থ্যকর্মী, রোভার স্কাউটের সদস্য, মসজিদের ইমাম ও ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের সমন্বয়ে কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটি ইতিমধ্যে মাঠে ওইসব প্রবাসীদের খুঁজে বের করে হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনার কাজ করছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সবাইকে এক যোগে কাজ করতে হবে। মাঠ পর্যায়ের সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে। স্বাস্থ্য বিভাগের বিধি মেনে চলতে হবে। তবেই এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে।
×