ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবিতে জঙ্গী ঘাঁটি! হিযবুত শিবিরের পোস্টার ব্যানার!

প্রকাশিত: ১১:০৫, ২৫ অক্টোবর ২০১৯

ঢাবিতে জঙ্গী ঘাঁটি! হিযবুত শিবিরের পোস্টার ব্যানার!

বিভাষ বাড়ৈ/মুনতাসির জিহাদ ॥ কেবল ভোলা বা রামু নয়, মিথ্যা ও বিকৃত তথ্য ছড়িয়ে সরকার ও ভারতবিরোধীদের সংগঠিত করার মাধ্যমে খোদ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ঘাঁটি গাড়তে চায় নিষিদ্ধ ও উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী! কর্তৃপক্ষের ‘নির্লিপ্ততার’ সুযোগে অব্যাহত নির্বিঘেœ সরকারবিরোধী উস্কানিমূলক পোস্টার, লিফলেট ও জিহাদী বইপত্র বিলি করছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীর। মধুর ক্যান্টিন থেকে ক্যাম্পাসের দেয়ালে দেয়ালে প্রশাসনের নাকের ডগায় উস্কানিমূলক এসব পোস্টার লাগানোর ঘটনায় বাড়ছে উদ্বেগ। প্রশাসনের নীরবতা অন্যদিকে ছাত্রলীগবিরোধিতার নামে বাম ও কোটা সংস্কারপন্থী নেতারা কাছে টেনে নিচ্ছেন শিবির, ইসা ছাত্র আন্দোলনসহ উগ্রবাদীদের। পরিস্থিতিকে ‘উদ্বেগজনক’ অভিহিত করে অতিসত্বর প্রশাসনকে সজাগ হওয়ার দাবি জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ডাকসু। প্রগতিশীল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলছেন, প্রশাসনের নির্লিপ্ততা আর বাম ও কোটা সংস্থারপন্থীদের কর্মকা-ের সুযোগ নিচ্ছে মৌলবাদীরা। উগ্রবাদীদের তৎপরতা বন্ধে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর অনৈক্যও সঙ্কটের একটা কারণ। তবে সিনেটে উপাচার্য প্যানেল চূড়ান্ত হওয়ার প্রায় দুই মাসেও উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় প্রশাসনে সৃষ্ট অস্থিরতার সুযোগকেও সরকারবিরোধী মৌলবাদী গোষ্ঠী কাজে লাগাচ্ছে। এ অবস্থায় দ্রুত উপাচার্য নিয়োগসহ প্রক্টরিয়াল টিমকে সক্রিয় করার তাগিদে জোরালো হচ্ছে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ঢাবিতে ছাত্র শিবিরের কর্মকা- নিষিদ্ধ থাকলেও গোপনে তাদের তৎপরতা ছিল সব সময়েই। যখনই সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কোন আন্দোলন হয় তখনই সেখানে কাজ করে শিবির। তবে গত এক দশকে ঢাবির আইবিএতে রীতিমতো ঘাঁটি গেড়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীর। আইবিএ হচ্ছে এ জঙ্গী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও উপদেষ্টাদের সবচেয়ে বড় আস্তানা। আইবিএর একাধিক শিক্ষক এ অপরাধে গ্রেফতারও হয়েছেন বিভিন্ন সময়। আবার জামিন নিয়ে জঙ্গী তৎপরতায় যুক্ত হয়ে পড়েছেন এমন তথ্যও আছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। তবে আগে থেকে এসব সংগঠনের তৎপরতা থাকলেও গত কয়েক মাসে ক্যাম্পাসে প্রগতিশীলদের চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে উগ্রবাদীদের তৎপরতা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, খেলাফত মসলিশের ছাত্র সংগঠনসহ সমমনা মৌলবাদী সংগঠনের প্রকাশ্য তৎপরতা। প্রায় তিন যুগ পর এ বছর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নিলে ক্যাম্পাসে নতুন করে মাথাচড়া দিয়ে ওঠে সাম্প্রদায়িক সংগঠনগুলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব সাম্প্রদায়িক সংগঠন নিষিদ্ধ। ’৯০ সালে পরিবেশ পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্মকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে এমন সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। এবার ডাকসুর নির্বাচনের আগে সেই পরিবেশ পরিষদের সভা বসেছিল। সেখানে ধর্মভিত্তিক ছাত্র সংগঠনগুলোকে আলোচনায় বসার চিঠি না দিলেও ডাকসু নির্বাচনে অনেকটাই বৈধতা পেয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সক্রিয়তার অভাবে। ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন ডাকসু নির্বাচনে প্যানেল আকারে নির্বাচনেও অংশ নেয়। পরিবেশ পরিষদের সভার চিঠি না পেয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিলও করেছিল ধর্মভিত্তিক এই সংগঠনটি। অভিযোগ রয়েছে ডাকসু ভিপি কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নূরকে কেন্দ্র করেই সক্রিয় হচ্ছে কয়েকটি নিষিদ্ধ সংগঠন। ভিপি হওয়ার পর ক্যাম্পাসে কয়েকটি দাবিতে ওই সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করতে দেখা যায় ডাকসু ভিপি নূরকে। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র ফরিদ হোসেনের ওপর হামলার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছিল ডাকসুর ভিপি। আন্দোলনে শরিক ছিল ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন যারা ডাকসু নির্বাচন উপলক্ষ করেই ক্যাম্পাসে সক্রিয় হয়। সাম্প্রদায়িক ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বডিসহ প্রশাসনের ‘পরোক্ষ সহযোগিতা’র মনোভাব দেখে পরবর্তী ডাকসু নির্বাচন লক্ষ্য রেখে আরও অনেক সংগঠন সক্রিয় হচ্ছে। অনেক সংগঠন গোপনে ‘দাওয়াতী’ কার্যক্রম চালাচ্ছে। সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসলামী ছাত্র খেলাফত বাংলাদেশ, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিশ, বাংলাদেশ আঞ্জুমানে তালামীযে ইসলামিয়া, বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া ও বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র আন্দোলন। এ বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাবি ক্যাম্পাসে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করে ডাকসু। তবে এ ঘোষণা বাস্তবায়নে প্রশাসনকে কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি আজও। এ ঘোষণার পরেও হিযবুত তাহরীর ক্যাম্পাসের গভীর রাতে পোস্টার লাগাচ্ছে অহরহ। সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী সংগঠনগুলো রাজনৈতিক কর্মসূচীও চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের পোস্টার, ব্যানারে সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উস্কানিমূলক তথ্য থাকছে। এমনকি ডাকসুর সিদ্ধান্তে আপত্তিও তুলেছেন ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি মনে করেন, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নয়, বরং উগ্রপন্থী, সন্ত্রাসী ও মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সংগঠন ঢাবিতে কোন ধরনের কার্যক্রম চালাতে পারে না। এদিকে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন হিযবুত তাহরীর মধুর ক্যান্টিনসহ বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে গভীর রাতে পোস্টার লাগাচ্ছে। গত ৬ মাসে অন্তত ১৪ বার এসব পোস্টারে সরকারবিরোধী বক্তব্যসহ তাদের আদর্শিক ভাবধারার খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের কথা বলা হয়েছে। ডাকসুর নির্বাচন কেন্দ্র করেও ঢাবি ক্যাম্পাসের দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার লাগিয়েছিল হিযবুত তাহরীর। বাংলাদেশের সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামো ভেঙ্গে খিলাফত রাষ্ট্র কায়েমের লক্ষ্যে শেখ হাসিনার সরকার উৎখাতের আহবান জানাচ্ছে সংগঠনটি। প্রায় প্রতিটি পোস্টারেই জঙ্গী সংগঠনটি তাদের মতাদর্শের সরকার প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার উৎখাতে সশস্ত্র বাহিনীকে উস্কানি দিচ্ছে! কর্মী সংগ্রহে কৌশলে বিতরণ করা হচ্ছে সংগঠনটির জঙ্গিবাদী নিজম্ব সংবিধান। কিছুদিনও আগেই রাতের আঁধারে মধুর ক্যান্টিনসহ বিভিন্ন ভবনে পোস্টার লাগায় হিযবুত তাহরীর। তখন এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টির মধ্যে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাশের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসের ওই পোস্টার অপসারণ করা হয়েছিল। তবে এখন নতুন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের আশপাশের এলাকা নীলখেত, পলাশীতে বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে হিযবুত তাহরীরের পোস্টার দেখা গেছে। এবার পোস্টারে কাশ্মীর ইস্যুকে পুঁজি করে সরকারবিরোধী উস্কানি দেয়া হচ্ছে। বলা হয়েছে, ‘হাসিনা সরকারের ভারতের দালালীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। মুশরিক ভারতের দখলদারিত্ব থেকে কাশ্মীরকে মুক্ত করতে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ন’। অপর পোস্টারে ‘আসন্ন খিলাফত মুক্তির একমাত্র পথ’ শিরোনামে সরকারবিরোধী বিভিন্ন কথা লেখা রয়েছে। পোস্টারে ‘নির্বাচন জুলুমের শাসন’ উল্লেখ করে বলা হচ্ছে, এতে জনগণের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন আনবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাশ বলছিলেন, শিক্ষাঙ্গনে কোন মৌলবাদী জঙ্গী গোষ্ঠীর কোন স্থান হবে না। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এই যুদ্ধে আমরা আছি। তবে এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি। তবে তাদের পোস্টার লাগানো বন্ধ করা কিংবা এসবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী জড়িত আছে কি না তার কোন হদিস বের করতে পারেনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েল প্রক্টরিয়াল বডি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি থাকতে কিভাবে অব্যাহত জঙ্গী সংগঠন ক্যাম্পাসে পোস্টার লাগাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের। ডাকসুর সদস্য ও ছাত্রলীগের বিগত কমিটির সদস্য তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর কার্যক্রম বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যে কাজ করা দরকার তা তারা করছে না বলেই মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। সবারই প্রশ্ন যখন পোস্টার লাগায় তখন এত বড় প্রক্টরিয়াল টিম কোথায় থাকে? অনুসন্ধানে জানা গেছে, আলোচিত ইস্যুগুলোতে সরকারবিরোধী ও খিলাফত প্রতিষ্ঠার কথা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠায় হিযবুত তাহরীরসহ জঙ্গী সংগঠনগুলো। কাশ্মীর ইস্যুতে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, ‘কাশ্মীরের জনগণ মুসলিম উম্মাহর অবিচ্ছেদ্য অংশ!! হাসিনা সরকারের ভারতের দালালীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।’ আরেক বার্তায় বলা হয়, ‘হে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ! ছাত্রলীগের সকল অপকর্মের মদদদাতা যালিম হাসিনা।’ এসব বার্তার সঙ্গে বিস্তারিত জানার জন্য ওয়েবসাইট কিংবা ভিডিও লিংক দিয়ে দেয় অজ্ঞাত নম্বর থেকে। আরেক বার্তায় তরুণদের সাহসী, সচেতন ও নিষ্ঠাবান সম্বোধন করে বলা হয়, ‘বর্তমান রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের অযোগ্য, এর আমূল পরিবর্তনের লক্ষ্যে খিলাফতে রাশিদা পুনর্প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যোগ দিন’। ঠিক এমন এক অবস্থার মধ্যেই উগ্র-মৌলবাদীদের তৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামানকে স্মারকলিপি দিয়েছে ডাকসু। বুধবার দুপুর বারোটায় ডাকসুর স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন ডাকসুর সদস্য তিলোত্তমা শিকদার, নিপু ইসলাম তন্নী, মাহমুদুল হাসান, রফিকুল ইসলাম সবুজ, ফরিদা পারভীন ও সংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার। সাধারণ শিক্ষার্থীরা উগ্র-মৌলবাদীদের তৎপরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলও করেছেন। স্মারকলিপিতে বলা হয়, অসাম্প্রদায়িকতার আঁতুরঘর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছে মৌলবাদীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দেয়ালে সম্প্রতি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরিরের পোস্টার লাগানো রয়েছে। সেই সঙ্গে হিযবুত তাহরীরসহ কিছু উগ্রপন্থী মৌলবাদী গোষ্ঠী প্রকাশ্যে ও গোপনে কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে স্মারকলিপিতে। বলা হয়, যদি নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর কার্যক্রম এভাবে পরিচালিত হয় ও রাতের আঁধারে এভাবে পোস্টার লাগানো হয় তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি কি? আরও বলা হয়, সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধের ‘অপরাজেয় দুর্গ’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপ চালু রয়েছে। এসব গ্রুপ হতে বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া রাষ্ট্রীয় ইস্যুতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব ছড়ানো হয়। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ভোলার ইস্যুতেও সেখান থেকে গুজব ছড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, এখানেও কোন নিয়ন্ত্রণ নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এসব বিষয়ে প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন। অতিসত্বর সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীগুলোর এই অপতৎপরতা রুখে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়। ডাকসুর স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী বলছিলেন, আমরা উপাচার্য স্যারকে লিখিতভাবে বিষয়গুলো জানিয়েছি। তিনি তৎক্ষণাৎ আমাদের স্মারকলিপির বিষয়টি প্রক্টর ও শাহবাগ থানাকে জানিয়েছেন। প্রক্টর গোলাম রাব্বানীকে উগ্রবাদীদের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমি বাম সংগঠনগুলোকেও বলছি ওদের (মৌলবাদীদের দাবি দাওয়া) ব্যানার তোমাদের হাতে কেন? আমি সব সংগঠনের সঙ্গে কথা বলতেছি। এক প্রশ্ন তিনি বলেন, প্রগতিশীল সংগঠনগুলোর মধ্যে অনৈক্য নেই এ ইস্যুতে এটা বড় সমস্যা। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামানের কাছে জঙ্গী সংগঠনের পোস্টার ও তৎপরতার কথা বলা হলে তিনি প্রক্টরিয়াল টিমের ব্যর্থতার কথা মানতে রাজি হননি। পোস্টারের বিষয়টির প্রক্টরিয়াল টিম দেখছে বলে জানান তিনি। তবে প্রগতীশীল ছাত্র সংগঠন পোস্টার তুলে ফেলেছে প্রক্টরিয়াল টিম নয়-এ তথ্য জানানো হলে উপাচার্য বলেন, এমনিতেই মৌলবাদীদের কর্মকা-ের বিরুদ্ধে বিশ^বিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত আছে। অবশ্যই এসব বিষয় দেখা হবে।
×