ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

মারুফ রায়হান

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৯:৪০, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ঢাকার দিনরাত

ঢাকায় সন্ধ্যেবেলা যে মিষ্টি হাওয়া বইছে তাতে মনে হচ্ছে ফাল্গুন একেবারে দোরগোড়ায় এসে পড়েছে। আর আমরা তো জানি পহেলা ফাল্গুন আর ভালবাসা দিবস হাত ধরাধরি করে আসে এই বাংলায়। পর পর দুটো দিন তাই প্রাণের উৎসব, প্রেমের উৎসব। বলাবাহুল্য তাতে প্রাণসঞ্চার করেন তরুণ-তরুণীরাই। বর্ণিল ভালবাসা দিবস ভ্যালেন্টাইন ডের পুরো নামটা আসলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনস ডে ভ্যালেন্টাইন নামক তৃতীয় শতাব্দীর দু’জন সন্তের নামানুসারে। ভ্যালেন্টাইন ডে-কে ভালবাসা দিবস হিসেবে পালন করার প্রচলন অবশ্য তারও অনেক আগে থেকে। কথিত আছে যে, রোমান সাম্রাজ্যের লুপারচেলিয়া অঞ্চলে ১৫ ফেব্রুয়ারিতে একটি বিশেষ ভোজানুষ্ঠানের আয়োজন হতো যেখানে যুবক-যুবতীরা পরস্পরের জীবনসঙ্গী বাছাই করত। কালে কালে সেটা ১৪ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আরেকটা ভোজোনৎসবের সঙ্গে মিশে যায়, যার উপলক্ষ ছিল দু’জন শহীদ যোদ্ধাকে স্মরণ করা। দু’জনকে একই নামে নামকরণ করা হয়েছিলÑ সেন্ট ভ্যালেন্টাইন। প্রেমিক-প্রেমিকাদের হৃদয়ে এই সন্তদ্বয়ের একটা বিশেষ স্থান ছিল। দু’জনকেই ভাবা হতো প্রেমের প্রতীক। ১৪ ফেব্রুয়ারিকে বাছাই করার কারণ, প্রাচীন কিংবদন্তি অনুযায়ী এই দিনেই নাকি পাখিরা তাদের সখা-সখী নির্বাচন করে। আমাদেরও আছে প্রেমের কাহিনী। প্রাচীন ভারতবর্ষে রয়েছে রাধাকৃষ্ণের গল্প। মধ্যযুগীয় পারস্য থেকে আমরা পেয়েছি শিরী-ফরহাদ আর লাইলী-মজনুর করুণ কাহিনী। প্রেম দিয়েই তো আমাদের পুঁথিপত্র পরিপূর্ণ। রাধাকৃষ্ণের চিত্তাকর্ষক প্রেমের গল্প থেকেই কি উৎসারিত হয়েছে উপমহাদেশের প্রেমসমৃদ্ধ কাব্যশিল্পগাথার ঐতিহ্য? তারা বাস্তব ছিলেন কি ছিলেন না তা হতে পারে ইতিহাসের পণ্ডিতদের বিতর্কের বিষয়, কিন্তু তাদের প্রেম যে একটা অনুপম মূর্তি নির্মাণ করে গেছে যুগ-যুগান্তের প্রেমপূজারীদের জন্য তাতে তো কাল্পনিক কিছু নেই। ভালবাসা দিবসের ঢাকার কথা কি লিখে শেষ করা যাবে? ভালবাসা দিবসকে এখন বাংলাদেশের তরুণ সমাজ বেশ ভালভাবেই উপভোগ করে। নানা ব্যক্তিগত আয়োজনে তারা দিনটিকে স্মৃতিময় করে রাখার চেষ্টা করে। একই সঙ্গে ইলেক্ট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়া ভালবাসা দিবসকে কেন্দ্রে রেখে বহু বর্ণিল একটি বৃত্ত রচনা করে, যার সময়সীমা ১৪ ফেব্রুয়ারির ২৪ ঘণ্টাকে ছাপিয়ে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। বলা অসঙ্গত হবে না যে, বিগত এক-দেড় দশকে আমাদের ভালবাসা দিবস উদ্যাপনের বহুমাত্রিকতা তার পরিসর ও ওজন বিবেচনায় পৃথিবীর যে কোন দেশকে ছুঁয়ে ফেলতে পারঙ্গম। আমাদের প্রেমিকরা বিশ্বের কোন দেশের প্রেমিকের তুলনায় সামান্যতমও পিছিয়ে নেই। আর কে না জানে যে, প্রেমের কোন বয়স নেই। আমি সত্তরোর্ধ এমন ব্যক্তিকেও চিনি (নাম বা পেশা বলার কী দরকার!) যিনি এখনও প্রেমকাতর একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণের প্রতিযোগী হতে সক্ষম, প্রেমপ্রকাশ ও প্রেম উপাদান গ্রহণ উভয় ক্ষেত্রে। সত্যি বলতে কি, জীবনের এক শ’ একটা যন্ত্রণার ভেতর সেঁধিয়ে থাকা মানুষের দেহমনে একটুখানি হলেও ভালবাসার সুবাতাস এসে আছড়ে পড়ে এই দিন, হোক তা কয়েকটি মুহূর্তের জন্য। বড়ই বস্তুবাদী আর কাঠঠোকরার ঠোঁটের মতোই কঠিন ও জটিল স্যুটেড-ব্যুটেড ব্যক্তিও ভালবাসার মন্দিরায় মনটাকে ভিজিয়ে ফেলার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকেন। গৌরচন্দ্রিকা বাদ দিয়ে আসল কথায় আসি। এই বঙ্গে ফাগুন আর ভালবাসা দিবস আসে হাত ধরাধরি করে। ভালবাসা দিবসের বারতাই যেন এখন বাংলার ফাল্গুন আকাশে-বাতাসে, মাটিতে ও কংক্রিটে ছড়িয়ে দেয়। বাংলাদেশের বাংলা পঞ্জিকায় পহেলা ফাল্গুন হলো তেরোই ফেব্রুয়ারি আর ভ্যালেন্টাইন ডে ঠিক তার পরের দিন। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় এসে আছড়ে পড়ে ফাল্গুন আর ভালবাসা দিবসের ঢেউ। ভালবাসা দিবসের রূপ-রস-গন্ধ-উত্তাপ রাজধানীর যে অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান হয় তা হলো এ বইমেলা। বইমেলা যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন প্রাঙ্গণ বাংলা একাডেমিতে না হতো তাহলে পহেলা ফাল্গুন আর ভালবাসা দিবসে আমরা ভালবাসার ওই সর্বব্যাপী রূপছটা থেকে অনেকখানি বঞ্চিত হতাম কিনা, সেটা বড় জিজ্ঞাসা। বইমেলা সত্যিই এক মুক্তাঞ্চল, তা যতই পুলিশ-মেটাল ডিটেক্টর-সিসিটিভি ক্যামেরার শ্যেনদৃষ্টি থাকুক না কেন। দলে দলে তরুণ-তরুণী বইমেলায় এসে উদ্যাপন করেন ভালবাসা দিবস। মোল্লারা আর রক্ষণশীলরা চোখ কপালে তুলে রাখলেও তাতে কোন প্রতিবন্ধকতা পড়ে না। একসময় প্রায় নিয়মিতভাবেই ভালবাসা দিবসেও হরতাল ডাকা হয়েছে। তাতে কী। ভালবাসার মানুষদের কেউ দমাতে পারেনি। বইমেলায় তার অপরূপ রূপ প্রত্যক্ষ করা যায়। ভালবাসা দিবসের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বলতে পারি যে, এদিন অল্প বয়সী প্রেমিক-প্রেমিকারা পরস্পরকে নতুন বই উপহার দেয়ার কথা বিবেচনা করেন। তাদের প্রথম পছন্দ কবিতার বই, প্রেমের কবিতার বই হলে তো সোনায় সোহাগা। এরপর তারা খোঁজেন প্রেমের উপন্যাস। এটা একেবারে নিজের চোখে দেখা অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। অনেক প-িত লেখক আছেন যারা ভালবাসা নিয়ে মাতামাতিকে বাঁকা নজরে দেখেন। যেন তারা কখনই কাউকে ভালবাসেননি। আবার ভালবাসা প্রসঙ্গে বাচাল হয়ে ওঠেনও কেউ কেউ। ভালবাসা বিষয়টিকে অন্তরে গভীরভাবে ধারণ করে কোন লেখক উচ্চারণ করতেই পারেন : প্রতিবার ভালবেসে আমি হই শুদ্ধ সর্বহারা। ভালবাসা দিবসে পুরুষ লেখককে কোন অনুরাগী একগুচ্ছ লাল গোলাপ উপহার দেবেন এটা কামনা করি মনে মনে। কিন্তু পাঠিকারা লেখকের রচনাকে ভালবাসেন, সেই রচনা তুলে দেন তার প্রেমিকের হাতে। লেখক এখানে হয়ে যান অনেকটা পিতা কিংবা শ্বশুরের মতো, নিদেনপক্ষে বড় ভাই। তবে রবীন্দ্রনাথ ও জীবনানন্দ থাকেন প্রায় ঈশ্বরের আসনে। ভালবাসা দিবসের ক’দিন পরেই আসে জীবনানন্দের জন্মদিন। তাঁকে সেদিন নতুন করে প্রেম নিবেদন করেন জীবনপ্রেমিকরা। বিশেষ কোন নারী বা পুরুষের জন্য প্রেম হয়ত একসময় ঘাস হয়ে আসতে পারে। কিন্তু নিজের জীবনের প্রতি প্রেম, বলা চাই, মহাজীবনের প্রতি প্রেম কখনও ফুরোয় না। তার নব নব অবয়ব তৈরি হয়, প্রকাশের রূপরেখা তৈরি হয়। তার একটি মাইলফলক কিংবা ফিরে তাকানোর দিন হয়ে উঠতে পারে আমাদের এই ভালবাসা দিবস। ভালবাসা দিবসে তাই উচ্চারণ করেই বলি : বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশ তোমাকে ভালবাসি। বইমেলা কড়চা বাণিজ্যমেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বইমেলায় যাওয়া হবে নাÑ এমনটা ভাবেন হয়ত কেউ কেউ। কিন্তু বাণিজ্যমেলার কারণে বইমেলার বেচা-বিক্রি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমনটাও অনেকের ধারণা। এই ধারণা যে ভুল তা বলাই বাহুল্য। একটিতে মেলে হরেক রকম গৃহস্থালি পণ্য থেকে শুরু করে জীবনযাপনের নানা স্তরে বিচিত্র ধরনের ব্যবহার্য পণ্য। আর অন্যটিতে বই শুধু বই। তাই দুটোর ক্রেতাসমাগমের তুলনা দেয়া অসমীচীন। দ্বিতীয় সপ্তাহে বইমেলা পুরোপুরি জমে উঠেছে। প্রচুর ভিড়। যথারীতি শুক্রবার হাঁটার অবস্থা থাকে না। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কবি কামরুল হাসান প্রায় প্রতিদিনই বইমেলায় যান। বইমেলায় লেখকরা যাবেন, তা নিয়ে বলার কী আছে। বলছি এ কারণে যে একমাত্র তিনিই ব্যতিক্রম যিনি বইমেলায় নিয়ে নিয়মিত দিনলিপি লিখে ফেসবুুকে পোস্ট দেন। আর প্রচুর ছবি তোলেন। তার লেখা থেকে কিছুটা তুলে দিচ্ছি। লিখেছেন : বইমেলার প্রধান তোরণটি খুবই সাদামাটা, কিন্তু তাতে গাঁথা দুটি অসামান্য বছর ৫২ আর ৭১। তোরণ পেরিয়ে যে পিচপথ তাকে আজ জলসিক্ত দেখলাম, ধূলির রাজ্যে প্রবেশের আগে ওই জলসিঞ্চন মনে স্বস্তি জোগাল। তখন মাগরিবের আজান বেজে উঠেছে কাছের ও দূরের মসজিদের মিনারে মিনারে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উঁচুমাথা বৃক্ষসারিতে ঘরে ফেরা পাখিদের কলরব। কে যেন বলেছিল এবার বইমেলায় প্রবেশ ফি বসবে, কোথায় কী, ফ্রি প্রবেশেই লোক নেই আজ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ পথের বামে সড়কের সমান্তরাল যে পথ গেছে উদ্যানের সে পথ আরও নিরিবিলি, একই নামের, একই অঙ্গসজ্জার হুবহু এক, যেন জমজ, দুটি খাবারের দোকান, নাম নিরাপদ ফুড কোর্ট। অভ্যন্তরে সবুজ রঙের সঙ্গে লাল প্লাস্টিকের চেয়ার লাল-সবুজের দ্যোতনা সৃষ্টি করেছে। জায়গাটি নির্জন ও নিরাপদ, খাবার কতখানি নিরাপদ তা বলতে পারবেন একাডেমির কর্মকর্তাগণ। কিছুটা এগুতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ওপেন এয়ার থিয়েটারটি দেখি সেখানে সাইন বোর্ডে লেখা মুক্তমঞ্চ, শিল্পকলা একাডেমি। কিছু প্রেমাসক্ত যুগল বসে আছে গ্যালারিতে, ভাবলাম শিল্পের মঞ্চ যখন তখন কিছু একটা শৈল্পিক দেখতে পাবো, দেখি ক্রিকেট খেলছে দুই বেরসিক। গ্যালারির দর্শককুল যে ক্রিকেট দেখছে না, সে ব্যাপারে আমি নিঃসংশয়। জানি না ওই আকাশ উদোম গাত্রখোলা মুক্তমঞ্চ আদৌ বইমেলার কোন কাজে লাগবে কি না, তবে এর প্রক্ষালনগৃহটি কাজে লাগছে। ওপাশেই বড় বড় প্রকাশনীর প্যাভিলিয়নগুলো। দেখি সে সবে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা বেশি। একেক প্যাভিলিয়নে বিক্রয়কর্মীদের পরনে একেক রঙের টি-শার্টÑ প্রথমায় টিয়া-সবুজ, ঐতিহ্যে মেরুন। তাম্রলিপির চার দেয়ালেই মুহম্মদ জাফর ইকবালের বড় প্রতিকৃতি, বুঝলাম এই বিজ্ঞান কল্পকথার লেখক তাম্রলিপির বড় ভরসা। আমি তাম্রলিপির চারদিকে চক্কর দিয়ে বইমেলার কোন কোন প্রকাশক কোন কোন জনপ্রিয় লেখককে সম্বল করে বিত্তবান হয়েছে তার ধারণা করার চেষ্টা করি। তখনই দেখি বিলেত প্রবাসী নারীবাদী লেখক জেসমিন চৌধুরী আমার দিকে এগিয়ে আসছেন। আমার কাছে এসে তিনি সহাস্য জিজ্ঞেস করেন, কেমন আছেন? এর পরেই সরলভাবে স্বীকার করেন আমার নামটি তিনি মনে করতে পারছেন না। অমন দশা আমারও হয়, তবে তিনি এতটা ব্যতিক্রমী উজ্জ্বল যে ভুলে যাওয়া অসম্ভব, আর আমি এতটা সাদামাটা যে আমাকে মনে রাখাই কঠিন। কিছুদিন আগেই তিনি মারাত্মক অসুস্থ ছিলেন তার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। আজ এই বইমেলায় তাকে দেখে পূর্ণ সুস্থ, প্রাণময়ী লাগছে। মনে হয় কোন অসুখ, কোন মালিন্য তার কাছে ভিড়তে পারেনি। তিনি বসেছিলেন ‘শব্দশৈলী’ স্টলের সমুখে, কয়েকজন অনুরাগী ছাত্রী ও পাঠিকা তার পাশে ভিড় করে আছে। সেখান থেকে, অনুমান করা কঠিন নয়, তার একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। এর নাম ‘উড়াল’। দ্বিতীয় বই ‘নীরবতা আমার নতুন লজ্জা’ প্রকাশিত হয়েছে ‘নালন্দা’ থেকে। অর্থপূর্ণ নামের বইটি যে নারীবাদী দর্শনের তা বলতে পারি। এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলায় ফি বছর একটি কৃত্রিম ফোয়ারা তৈরি করা হয় অনেকটা বাণিজ্যমেলার ঢঙে। সেটি হয়ে ওঠে দর্শনার্থীদের ছবি তোলার স্টুডিও। আজও দেখি বৃত্তাকার ফোয়ারাটির চারপাশেই লোকেরা ছবি তুলছে। পেছনে রঙিন, আলোকিত জলধারা, চার পাশের বহুদিকে প্রক্ষেপিত আলো ও রাতের অন্ধকার বৈপরীত্য তৈরি করে মেলায়। ফলে সেখানে ছবি তোলার আলো পাওয়া কঠিন। ফোয়ারাটির পূবে শিশুদের জগত, সেখানে ঘুরছি আর দেখছি একটি বটবৃক্ষকে ঘিরে তৈরি মঞ্চে শিশুরা লাফাচ্ছে। বটের শীর্ষে সবুজ আলোর দীপ্তি আর তার ডাল থেকে ঝুলছে চোঙাসদৃশ্য কাপড়ের ঝালর। ছোট মঞ্চটিতে অতিরিক্ত আলো, তাতে ঝলমল করছে শিশুরা। তাদের আগ্রহী পিতা-মাতাদের মুখে আলোআঁধারি। অন্ধকারের প্রান্তে দাঁড়িয়ে তারা দেখছে ভবিষ্যত প্রজন্মের আলোকিত লাফ। ঢাকাবাসীর বিড়ম্বনা বাড়ছে রাজধানী ঢাকায় প্রধান তিনটি সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো বিমানবন্দর-ফার্মগেট-শাহবাগ, জিরো পয়েন্ট-মতিঝিল সড়ক। দ্বিতীয়টি হলো পল্টন-বাড্ডা-বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা হয়ে বিমানবন্দর। আর তৃতীয় সড়কটি হলো গুলিস্তান-মিরপুর সড়ক। এই তিনটি সড়কের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বিমানবন্দর-মতিঝিল সড়কটি। এই সড়ক ‘ভিআইপি সড়ক’ হিসেবে পরিচিত। এই ভিআইপি সড়কই রাজধানী ঢাকাকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। ভিআইপি সড়কের কোন অংশে যানজট সৃষ্টি হলে এর প্রভাব পড়ে পুরো রাজধানীতে। এ ছাড়া ভিআইপি সড়ক দিয়ে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীসহ শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিরা চলাচল করেন। এর পাশাপাশি এই সড়কে বিভিন্ন রুটের বাস যাত্রী পরিবহন করছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট (এআরআই) হিসেবে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত রাজধানীতে ঢাকায় বিআরটিএর নিবন্ধিত যানবাহন রয়েছে ১৩ লাখ ৭ হাজার ৫০০টি। এর মধ্য প্রাইভেট কার রয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ১৪১টি। ট্রাফিক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজের কারণে বাসের চলার পথ পরিবর্তন করায় বর্তমানে সার্ক ফোয়ারা অতিক্রম করছে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৮০০ প্রাইভেট কার। তাই যানজট কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা, যাদের প্রধান বাহন বাসের মতো গণপরিবহন। গত জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে রাজধানীতে চলাচলকারী শতাধিক সড়কপথের বাসের গতিপথ বদলে গেছে। তাই অগণিত মানুষের চলার পথ এলোমেলো হয়ে গেছে। পড়তে হচ্ছে দুর্ভোগে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও নির্ধারিত স্থানে গণপরিবহনের দেখা মিলছে না। ফলত বিড়ম্বনা বাড়ছে। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ [email protected]
×