ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

১০ বছরে দেশে খাদ্য উৎপাদন ৮০ লাখ মেট্রিক টন বৃদ্ধি পেয়েছে : কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০০:৪৮, ২৩ অক্টোবর ২০১৮

১০ বছরে দেশে খাদ্য উৎপাদন ৮০ লাখ মেট্রিক টন বৃদ্ধি পেয়েছে :  কৃষিমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী জানিয়েছেন, মন্ত্রী জানান, খাদ্যশস্যের উৎপাদন প্রতিবছরেই ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৮-০৯ সালে যেখানে মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ৩৩ লাখ ৩ হাজার মেট্রিক টন, সেখানে বর্তমানে তা বেড়ে ৪ কোটি ১৩ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন হয়েছে। উৎপাদনশীলতার এরূপ ধারাবাহিকতায় দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে ধান উৎপাদনে চতুর্থ স্থান, আলু উৎপাদনে ৭ম স্থান এবং সবজি উৎপাদনে তৃতীয় স্থান অর্জনকারী দেশ। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য বেগম হাজেরা খাতুনের প্রশ্নের লিখিত জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের প্রশ্নের জবাবে মতিয়া চৌধুরী জানান, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে দেশে খাদ্য উৎপাদন ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়ার আশংকা আছে। সরকার জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় এবং কৃষি উৎপাদনের চাকা সচল রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় স্বল্প পানি ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, বোরো ধানের চাষ কমিয়ে আউশ ধানের চাষ সম্প্রসারণ এবং ১৪ দিন পর্যন্ত জলামগ্নতা সহিষ্ণু ব্রিধান-৫১, ব্রিধান-৫২ জাতের আবাদ প্রচলনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার কমিয়ে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধি করে ফসল উৎপাদন, ব্যাপক হারে বৃক্ষ রোপণ, কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসল উৎপাদন, পরিকল্পিত নগরায়নের মাধ্যমে ফসলী জমি সংরক্ষণ, মানুষের খাদ্যাভাস পরিবর্তন এবং বন্যা ও জলাবদ্ধ প্রবণ এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন কৌশল হিসাবে ভাসমান সবজি ও মসলা উৎপাদন প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, দেশের আউশ ও আমন চাষাবাদে জমি পুনর্বিন্যাস, অনাবাদি জমি আবাদের আওতায় আনা এবং দেশী জাতের পরিবর্তে আধুনিক উচ্চ ফলনশীল ধানের আবাদ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে, দেশে চাল উৎপাদন বহুলাংশে বৃদ্ধি করা সম্ভব। সুনির্দিষ্ট পরিমাণ উল্লেখ করা বাস্তবসম্মত নয়। তবে যুক্তিযুক্তভাবে কৃষি জমির প্রাপ্যতা সাপেক্ষে ২০৩০ সাল নাগাদ ২৫ লাখ টন বাড়তি চাল উৎপাদন করা সম্ভব। বেগম হাজেরা খাতুনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী জানান, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে এ পর্যন্ত কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও দেশের মেহনতি কৃষকের উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়িত করছে। বর্তমান সরকার কৃষকের দোরগোড়ায় সার প্রাপ্তি নিশ্চিত করেছে। সারের ক্রয়মূল্যে চার দফায় কমানো হয়েছে। ফলে কৃষকের উৎপাদন ব্যয় কমেছে এবং সুষম সার ব্যবহার নিশ্চিত হয়েছে। তিনি জানান, গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন উন্নতমানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের জন্য উন্নয়ন বাজেটের পাশাপাশি প্রথমবারের মত ২০১৬-১৭ অর্থবছর হতে গবেষণার জন্য রাজস্ব বাজেটে অর্থের সংস্থান রেখে বরাদ্দ প্রদান শুরু করা হয়েছে। কৃষকদের সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ দিয়ে সেচ প্রদানে স্মার্ট কার্ড প্রচলন করা হয়েছে। কৃষকদের মধ্যে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। সেচকাজে ব্যবহৃত বিদ্যুত বিলে ২০ ভাগ হারে রিবেট প্রদান করা হচ্ছে।
×