ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন হবেই

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নির্বাচন হবেই

সামনে যাই থাক, আসুক যতই প্রতিবন্ধকতা, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে যথাসময়েই। নির্বাচন বানচাল, ভ-ুল, ব্যাহত করার জন্য হোক যতই ষড়যন্ত্র, সব বাধাবিঘœ ভেঙ্গে যথারীতি নির্বাচন হবেই। দেশের জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনে ভোট দেবে। কারণ ভোটের মাধ্যমেই তারা তাদের পছন্দের জনপ্রিতিনিধিকে নির্বাচিত করার যে সুযোগ এবং বিধান রয়েছে, তার ব্যত্যয় ঘটকু, তারা তা চায় না। শত প্রতিকূলতা, শত বাধাবিঘœ অতিক্রম করে যাবে নির্বাচনী ট্রেন। এমনিতে নির্বাচন এলেই একটি মহল ষড়যন্ত্র শুরু করে। তারা ভুলে যায়, নির্বাচন এলেই জনগণের মধ্যে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়। পুরো দেশবাসী জেগে ওঠে এক অন্যতম আমেজে। পক্ষ-বিপক্ষের খেলায় মেতে ওঠে জয়-পরাজয়ের অনুষঙ্গে। অশুভের বিরুদ্ধে শুভর জয় সকলেরই কাম্য হয়ে ওঠে তখন। নতুন প্রাণ পায় ভোটার। তারা জানে ভোটদান তাদের অধিকার। ভোটের মালিক তারা। তাদের ভোট প্রদানেই নির্ধারিত হবে ক্ষমতায় আসবে কোন দল, কারা দেশ পরিচালনা করবে। এ জন্য সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন চায় ভোটারসহ জনগণ। নির্বাচন মানেই জনগণ যে ক্ষমতার মালিক, তারাই যে সিদ্ধান্তদাতা, তারই নিদর্শন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অধিকার যে কোন নাগরিক বা দলের রয়েছে। আবার নির্বাচনে অংশ না নেয়ার অধিকার রয়েছে ব্যক্তি বা দলের। কিন্তু নির্বাচন ভ-ুল বা বানচান করার অধিকার কারও নেই। এমনকি প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে জ্বালাও-পোড়াও করার অধিকারও কারও নেই। জনগণের অধিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান মূলত গণবিরোধী তৎপরতারই নামান্তর। কারও ইচ্ছা-অনিচ্ছরে ওপর নির্ভরশীল নয় নির্বাচন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিধিবদ্ধ আইন দ্বারা নির্ধারণ করা আছে। নির্বাচন পরিচালনার জন্য রয়েছে নির্বাচন কমিশন। যাদের ক্ষমতা বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। বিশেষ করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন করা, ভোটারদের অধিকার সংরক্ষণ করা তার দায়-দায়িত্বের সবচেয়ে বড় অংশ। ভোটার তালিকা প্রণয়ন, ভোটার কার্ড প্রদান, রাজনৈতিক দলগুলোকে বিধি বিধানের আওতায় রাখা, নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দ, নির্বাচনী আচরণবিধি যথাযথ মেনে চলার ব্যবস্থা করা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটদানের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি সব মিলিয়ে জবাবদিহিমূলক নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার কাজটি নির্বাচন কমিশনের কর্তব্য কর্ম। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদেরও দায়িত্ব সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে সক্রিয় সহযোগিতা দান। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন না করা, ভোটকেন্দ্রকে সন্ত্রাস ও হানাহানি মুক্ত রাখা, নির্বিঘেœ ভোটদানের নিশ্চয়তা প্রদান। সামরিক জান্তা শাসনামলে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছিল সুচতুরভাবে। ভোটকেন্দ্রে যাবার প্রয়োজনই পড়েনি। বরং কেন্দ্রে না যাবার জন্য ভীতি প্রদর্শন করা হতো। জান্তাদের প্রতিপক্ষদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। প্রাণনাশও হয়েছে। জালভোট ছিল স্বাভাবিক। হাঙ্গামা প্রদর্শন করে ভোটারদের ভোটকেন্দ্র ত্যাগে বাধ্য করা, কেন্দ্র থেকে প্রতিপক্ষের পোলিং এজেন্টকে বের করে দেয়া, ভোটারবিহীন নির্বাচন আয়োজন, মিডিয়া ক্যু ও মার্শাল ক্যুর মাধ্যমে ভোটের ফলাফল বদলে দেয়ার নজিরবিহীন ঘটনা দেশবাসী দেখেছে। নির্বাচনী ফলাফলকে প্রভাবিত করার এন্তার ঘটনা এ দেশেই ঘটেছে। নির্বাচনী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রায় ধ্বংস করে ফেলেছিল দুই সামরিক জান্তা শাসক। সেই অবস্থান থেকে দেশ ফিরে এসেছে স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক পরিবেশে। কিন্তু কিছু মহল চায় না সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। এমনকি হেরে যাবার আতঙ্কে নির্বাচন বর্জন ও বানচালও করতে চায়। এই অপশক্তির বিনাশ প্রয়োজন সর্বাগ্রে। আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বরে হবে। সে নির্বাচনকে সামনে রেখে অশুভ শক্তি মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। তারা দন্ত প্রদর্শন করতে শুরু করেছে। নির্বাচন হবে না বলে কোন কোন প্রভাবশালী নেতাও বয়ান দিচ্ছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন হবেই, কেউ ঠেকাতে পারবে না। কারও শক্তি নেই নির্বাচন ঠেকানোর। যদি কেউ করতেও চায় জনগণই তাদের প্রতিরোধ করবে। দেশবাসীও চায় যথাসময়ে নির্বাচন হোক। জনগণের যথাযথ প্রতিফলন ঘটুক এটা দেশবাসীরই কাম্য।
×