ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রূপগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতার কবল থেকে ১৮ বিঘা অর্পিত জমি উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৬ জুন ২০১৮

রূপগঞ্জে ছাত্রলীগ নেতার কবল থেকে ১৮ বিঘা অর্পিত জমি উদ্ধার

নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ ৫ জুন ॥ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ‘ঢাকা ভিলেজ’ নামের একটি অবৈধ আবাসন প্রকল্পে দখলে থাকা ক তফসিলভুক্ত অর্পিত প্রায় ১৮ বিঘা জমি উদ্ধার করেছে প্রশাসন। সোমবার ও মঙ্গলবার উপজেলার ভিংরাব ও মুশুরী এলাকায় দুই দিনব্যপী মেপে সরকারী জমি উদ্ধার করে লাল নিশান ও সাইনবোর্ড টানিয়ে দেয়া হয়। বালু ভরাট করে ক তফসিলভুক্ত সরকারী অর্পিত জমি জবর-দখলের নেপথ্যে রয়েছেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম চৌধুরীর অপুর নেতৃত্বে একটি গ্রুপ। জানা গেছে, প্রায় ৬ বছর আগে ভিংরাব ও মুশুরী মৌজা এলাকায় ‘ঢাকা ভিলেজ’ নামের একটি আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলার লক্ষ্যে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম চৌধুরী অপুর নেতৃত্বে তার একটি গ্রুপ কৃষকদের জমি-জমা না কিনেই বালু ভরাট করতে শুরু করেন। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলে তাকেই দলীয় ক্ষমতার দাপট দেখায় সাধারণ মানুষকে মামলা-হামলা দিয়ে এসব জবর দখল করেছে মাসুম চৌধুরী অপুসহ ওই গ্রুপটি। বালু ভরাট করে জবর-দখলের পর স্থানীয় কৃষকদের না দিয়ে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছে। আবার অনেকের জমি জাল-জালিয়াতি করে নিয়েছে। কৃষকদের জমির পাশাপাশি ১৮ বিঘা ক তফসিলভুক্ত সরকারী অর্পিত জমি জবর দখল করে বালু ভরাট করে। বর্তমানে সরকারী জমিগুলো প্লট করে ফেলা হয়েছে। কোনটি ৩ কাঠা করে, কোনটি ৫ কাঠা করে, আবার কোনটি ১০ কাঠা করে প্লট করা হয়েছে। এমন করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন মাসুম চৌধুরী অপুসহ আরও কয়েকজন। তখন তাদের দাপটে প্রশাসনও ছিল নীরব। ইদানীং স্থানীয় এলাকাবাসী ক তফসিলভুক্ত অর্পিত জমি বালু ভরাটের পর জবর-দখলের ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে প্রশাসন সরেজমিনে গিয়ে ‘ঢাকা ভিলেজ’ নামক আবাসন প্রকল্পের জবর-দখলে থাকা ভিংরাব ও মুশুরী মৌজার বিভিন্ন দাগে ১৮ বিঘা সরকারী অর্পিত জমি বের করেন। প্রতিটি জমি মেপে লাল নিশানা এবং সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন। সরকারী জমি উদ্ধারে স্থানীয় কৃষক ও এলাকাবাসী উপজেলা প্রশাসনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে উদ্ধার হওয়া সরকারী অর্পিত জমি যাতে আর বেদখল না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান। ‘ঢাকা ভিলেজ’ আবাসন প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার আবদুল্লাহ বলেন, সরকারী জমিগুলো অনেকের লিজ নেয়া ছিল। তাদের সঙ্গে কথা বলেই বালু ভরাট করা হয়েছে। অভিযুক্ত মাসুম চৌধুরী অপু বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, যত বড়ই প্রভাবশালী বা রাজনৈতিক নেতা হোক না কেন, সরকারী জমি বালু ভরাট করে জবর-দখল করবে এটা হতে দেয়া হবে না।
×