ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শঙ্কা কাটিয়ে শেষ ষোলোতে জুভেন্টাস, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ৭ ডিসেম্বর ২০১৭

শঙ্কা কাটিয়ে শেষ ষোলোতে জুভেন্টাস, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, শেষ ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বার্সিলোনা, বর্তমান রানার্সআপ এ্যাটলেটিকো বাদ সি গ্রুপের সেরা রোমা, পিএসজিকে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ বেয়ার্নের, মস্কোর হৃদয় ভেঙ্গে নকআউট পর্বে বাসেল, এমবাপের বিরল কীর্তি, বেনফিকা ০-২ বাসেল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ২-১ সিএসকেএ মস্কো, বেয়ার্ন মিউনিখ ৩-১ প্যারিস সেইন্ট জার্মেইন, চেলসি ১-১ এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, রোমা ১-০ কারাবাগ, বার্সিলোনা ২-০ স্পোর্টিং, অলিম্পিয়াকোস ০-২ জুভেন্টাস স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কিছুটা শঙ্কা ছিল বাদ পড়ার। তবে সেটা উড়িয়ে দিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলের নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছে ইংলিশ পরাশক্তি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাস। মঙ্গলবার রাতে নিজ নিজ গ্রুপের শেষ ম্যাচ জিতে এ কৃতিত্ব দেখিয়েছে দল দু’টি। ‘ডি’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে গ্রীসের অলিম্পিয়াকোসকে ২-০ গোলে হারিয়েছে জুভেন্টাস। নিজেদের মাঠ ন্যুক্যাম্পে পর্তুগালের স্পোর্টিং সিপিকে একই ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েছে বার্সিলোনা। এই গ্রুপ থেকে রানার্সআপ হয়ে শেষ ষোলোতে উঠে গেছে জিয়ানলুইজি বুফনের দল। ‘সি’ গ্রুপ থেকে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বাদ পড়া সময়ের ব্যাপার ছিল। সেটাই হয়েছে শেষ পর্যন্ত। নিজেদের শেষ ম্যাচে বর্তমান রানার্সআপরা ১-১ গোলে ড্র করে চেলসির সঙ্গে। আরেক ম্যাচে কারাবাগকে ১-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপের সেরা হয়েছে এ এস রোমা। আর দ্বিতীয় হয়েছে চেলসি। ‘বি’ গ্রুপে ফরাসী জায়ান্ট পিএসজিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে বেয়ার্ন মিউনিখ। এর আগে প্যারিসে প্রথম লেগে পিএসজি জিতেছিল ৩-০ গোলে। দারুণ এই জয়ের পরও গ্রুপের সেরা হতে পারেনি জার্মান জায়ান্টরা। সমান পয়েন্ট হলেও গোলগড়ে অনেক এগিয়ে থেকে পিএসজি চ্যাম্পিয়ন ও বেয়ার্ন রানার্সআপ হয়েছে। ‘এ’ গ্রুপে রাশিয়ান ক্লাব সিএসকেএ মস্কোকে ২-১ গোলে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে শেষ ষোলোতে উঠেছে ম্যানইউ। আরেক ম্যাচে বেনফিকাকে ২-০ গোলে হারিয়ে নকআউট স্টেজের টিকেট কেটেছে বাসেল। ফলে হৃদয় ভেঙ্গেছে মস্কোর। নকআউট পর্ব আগেই নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় স্পোর্টিংয়ের বিরুদ্ধে শুরু থেকে বার্সা মাঠে নামায়নি লিওনেল মেসিকে। বিশ্রামে ছিলেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাও। তবে তাদের অভাব খুব বেশি টের পেতে দেননি লুইস সুয়ারেজ, প্যাকো আলকাসের। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগে ভালই আতঙ্ক ছড়িয়েছেন বার্সার খেলোয়াড়রা। তবে গোলের দেখা পেতে অনেকটা সময়ই অপেক্ষা করতে হয়েছে বার্সাকে। প্রথমার্ধটা গোলশূন্য সমতা নিয়ে শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে ৫৯ মিনিটে ম্যাচের প্রথম গোলটি করেন আলকাসের। ডেনিস সুয়ারেজের ক্রস থেকে হেড করে স্পোর্টিংয়ের জালে বল জড়ান বার্সার এই ফরোয়ার্ড। ৬১ মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন মেসি। অবশ্য ম্যাচের শেষ আধাঘণ্টায় কোন গোল করতে পারেননি এ সময়ের অন্যতম সেরা এই ফুটবলার। খেলা শেষ হওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে বার্সিলোনা দ্বিতীয় গোলটি পেয়েছে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগের দুর্বলতায়। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে সেটা নিজেদেরই জালে জড়িয়ে দিয়েছেন জেরেমি ম্যাথিউ। মজার ব্যাপার হলো, এবারের মৌসুমের শুরুতেই বার্সা ছেড়ে স্পোর্টিংয়ে যোগ দিয়েছিলেন ফরাসী এই ডিফেন্ডার। বার্সার হয়ে গোল করার অভ্যাসটাই হয়তো এখনও ছাড়তে পারেননি ম্যাথিউ! ওল্ড্ট্র্যাফোর্ডে অনুষ্ঠিত ম্যাচে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত মস্কোকে হারিয়েছে জোশে মরিনহোর ইউনাইটেড। এর ফলে ২০১৩-১৪ মৌসুমের পর প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লীগের নকআউট পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে ইংলিশ জায়ান্টরা। এমনিতেই নকআউট পর্বে এক পা দিয়ে রেখেছিল ইউনাইটেড। রুশ ক্লাবের কাছে একমাত্র বড় ব্যবধানের হারই তাদের রুখে দেয়ার সুযোগ ছিল। ওল্ডট্র্যাফোর্ডে ম্যাচের ৬৪ মিনিটে রোমেলু লুকাকু ও ৬৬ মিনিটে মার্কাস রাশফোর্ডের গোলের সুবাদে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত জয় পেয়েছে রেড ডেভিলসরা। এর ফলে সেখানে সবধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ৪০ ম্যাচে অপরাজিত থাকল ইউনাইটেড। এর আগে প্রথমার্ধের বিরতিতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে ব্রাজিলীয় তারকা ভিটিনহোর গোলে লিড পেয়েছিল মস্কো। ম্যাচ শেষে ম্যানইউ কোচ মরিনহো বলেন, আমি সত্যিই খুশি। কারণ ম্যাচ হেরে শেষ ষোলোতে উন্নীত হবার কোন ইচ্ছা আমাদের ছিল না। খারাপ পারফর্মেন্স দিয়ে আমরা নকআউট পর্বে খেলতে চাইনি। পিএসজির বিরুদ্ধে মিউনিখের এ্যালিয়েঞ্জ এ্যারানায় ম্যাচের অষ্টম মিনিটেই রবার্ট লেভানডোস্কির গোলে এগিয়ে যায় বেয়ার্ন। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কোরেনটিন টলিসো। দ্বিতীয়ার্ধে ৫০ মিনিটে একটি গোল পরিশোধ করে পিএসজিকে লড়াইয়ে ফিরিয়ে আনেন কিলিয়ান এমবাপে। তবে ৬৯ মিনিটে টলিসো ফের গোল করলে ৩-১ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত হয় জার্মান জায়ান্টদের। হারলেও এমবাপে গোল করে অসাধারণ কীর্তি গড়েছেন। এ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে তার গোল হয়েছে ১০টি। সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোপের কুলিন প্রতিযোগিতায় ১০ গোল করার কীর্তি এখন এই ফরাসী ফরোয়ার্ডের। সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ১০ গোল করার রেকর্ড এতদিন করিম বেনজামার দখলে ছিল।
×