ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

সায়মন স্বপন

জীবনবোধ, অতীত ও বিষাদের কথাকার

প্রকাশিত: ০৭:০৯, ১৩ অক্টোবর ২০১৭

জীবনবোধ, অতীত ও বিষাদের কথাকার

যার জোরালো আবেগমথিত উপন্যাসগুলো পার্থিব জগতের গভীর শূন্যতা ও হাহাকারকে উন্মোচন করেছে তিনি কাজুও ইশিগুরো। কথাসাহিত্যিক কাজুও ইশিগুরো নামটি আমাদের কাছে নতুন মনে হলেও ইংরেজী ভাষা সাহিত্যে নতুন নয়, বরং বেশ আলোচিত এক ব্যক্তিত্ব। সাহিত্যে এ বছর নোবেল পেলেন জাপানী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ কথাসাহিত্যিক কাজুও ইশিগুরো। সুইডেনের রয়েল সুইডিশ একাডেমি এই বিজয়ের ঘোষণা দেন। নির্দিষ্টভাবে কোন একটি সাহিত্যকর্মের জন্য নয় বরং তাঁর সামগ্রিক সাহিত্যকর্মের জন্য তাঁকে এ পুরস্কারে মনোনীত করা হয়। ১৯৫৪ সালে জাপানের নাগাসাকিতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ইশিগুরোর যখন পাঁচ বছর বয়স তখন তাঁর পরিবার জাপান ছেড়ে ইংল্যান্ডে চলে আসেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ইশিগুরো একাধারে চিত্রনাট্যকর, গল্পকার ও ঔপন্যাসিক হিসেবে পরিচিত। তাঁর প্রথম উপন্যাস এ্যা পেইল ভিয়্যু অব হিল্স ১৯৮২ সালে প্রকাশ পায়। দ্বিতীয় উপন্যাস এ্যান আর্টিস্ট অব দ্য ফ্লোটিং ওয়ার্ল্ড (১৯৮৬) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পারমাণবিক হামলার প্রেক্ষাপট নিয়ে লেখা যা চমকপ্রদভাবে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। তিনি চারবার ম্যান বুকার পুরস্কার পান চারটি উপন্যাসের জন্য। যার মধ্যে ১৯৮৯ সালে বুকার পুরস্কার পান দ্য রিমেইন্স অব দ্য ডে উপন্যাসের জন্য। অন্যান্য উপন্যাস হলো দি আনকনসোল্ড (১৯৯৫), হোয়েন উই আর অরফ্যান (২০০০)। ২০০৯ সালে তাঁর একমাত্র ছোট গল্পগ্রন্থ নকটার্নস : ফাইভ স্টোরিজ অব মিউজিক এ্যান্ড নাইটফল প্রকাশিত হয়। বইয়ের সংখ্যা দিয়ে নয় বরং লেখার গুণগত মান বা মানোত্তীর্ণতার বিষয়টি বিবেচনাযোগ্য। হয়ত-বা এজন্য এ যাবৎ তিনি মোট আটটি গ্রন্থ লিখেছেন যা চল্লিশটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তাঁর সর্বশেষ উপন্যাস ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয় দ্য ব্যুরিড জায়ান্ট। যা এক বৃদ্ধ দম্পতির যাপিত জীবন নিয়ে লেখা, যারা এক বুক আশা নিয়ে হেঁটে চলেছেন তাদের যোগাযোগহীন এক সন্তানের দেখা পেতে। এছাড়াও দ্য রিমেইন্স অব দ্য ডে এবং নেভার লেট মি গো (২০০৫) এই দুটো উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে যা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। তিনি টেলিভিশনের জন্য নাটক লিখেছেন এ্যা প্রোফাইল অব আর্থার জে. ম্যাসন (১৯৮৪), দ্য গোরমেট (১৯৮৭), দ্য স্যাডেস্ট মিউজিক ইন দ্য ওয়ার্ল্ড (২০০৩) শিরোনামে। সময় আর সমাজ একে অন্যের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। সমাজের মুখ হয়ে সময় একপর্যায়ে দাবি তোলে তার সুখ ও দহনবেলার কাতরতা নিয়ে। আর এই কাতরতাকে লেখক কলমের কালি দিয়ে আঁচড় কেটে দেন পাঠকের দেয়ালে। পাঠক সময় আর সমাজের এই ছায়াচিত্র প্রথমে ধরতে না পারলেও সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করলে এর রসদের স্বাদ পাওয়া কঠিন কিছু নয়। সময়, সমাজ আর পাঠককে একই সূত্রে গেঁথে দেয়ার কাজটি বরাবরই লেখক করে থাকেন। পাঠকের খিদেকে জাগিয়ে তোলার দায়িত্ব লেখকের। লেখক এই দায়িত্বের বাইরে নন। এই দায়িত্বের প্রতি যতœবান হলেই পাঠক আর লেখকের মাঝে দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হয়। এ সকল ক্ষেত্রে ইশিগুরো বেশ সাবলীলভাবে পাঠকের কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছেন নিটোল ভঙ্গিমায়। যার লেখা দেখে পাঠক থেকে শুরু করে লেখকও এই নোবেল বিজয়ীর লেখনীর প্রেমে মশগুল হতে বাধ্য। কারণ ইশিগুরো সমাজের চেয়ে সময়কে বেশি গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করেন। এক কথায় কালের দাবির সামনে কাল-সচেতন হওয়াটা বেশ জরুরী বলে তিনি মনে করেন। কলম চষেছেন যুদ্ধ, দাঙ্গা ও দহনের বিপরীতে। ফলে সমকালীন বিভিন্ন দগ্ধ বা বিদগ্ধ বিষয় তাঁর লেখনীর উপাদেয় হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। তুলে এনেছেন তেলচিটচিটে মাটির ভেতরের রস, পাঠকের ফলবতী গাছের জন্য। ইশিগুরো তাঁর কল্পনাশক্তি দিয়ে পার্থিব জগতের সঙ্গে মানুষের সরলরৈখিক সংযোগ ঘটিয়েছেন। বিশ্বের মানুষ তাঁর লেখায় খুঁজে পেয়েছে এক জীবনবোধের অনবদ্য কাব্যভঙ্গি। যার বিশ্বাসের ডানায় ভর করে মানুষ ভেঙে যাওয়া স্বপ্নগুলোকে মেরামত করার স্বপ্ন দেখেছে এবং এখনও দেখে যাচ্ছে। বিষাদ আর সুখগুলোকে পাশাপাশি রেখে তুলনামূলক পার্থক্য খোঁজার প্রয়াস পেয়েছে ইশিগুরোর পাঠকেরা। যখন কোন লেখক জীবন ও জীবিকার রসায়ন দৈনন্দিন গল্পের শরীরের সঙ্গে গেঁথে দেয় তখন তাঁর পাঠকেরা ভিন্নধর্মী স্বাদ খুঁজে পায়। যার ফলে, পাঠক ও লেখকের মধ্যে এক অদৃশ্য সেতু তৈরি হয়। সেক্ষেত্রে ইশিগুরো সার্থক হয়েছেন, পেয়েছেন পাঠকপ্রিয়তা। এজন্য হয়ত-বা সুইডিশ একাডমি বলেছেন, ‘জোরালো আবেগীয় শক্তির প্রকাশ ঘটে তাঁর উপন্যাসে, যেখানে দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযেগের কাল্পনিক অনুভূতির প্রকাশ পায়।’ সুইডিশ একাডেমি আরও বলেছেন, ‘ইশিগুরো মানবজাতিকে গভীর নৈতিক অবস্থানের দিকে প্রভাবিত করেন।’ সুতরাং তাঁর লেখায় স্মৃতি, সময়, বিভ্রম ও বিবিধ ধাঁধার অবতারণা পাওয়া যায়। তাঁর লেখার সব চরিত্র কাল্পনিক হলেও পাঠকের কাছে জীবন্ত হিসেবে ধরা দিয়েছে। লেখকের অন্যান্য দায়বদ্ধতার পাশাপাশি আরও একটি দায়বদ্ধতা তৈরি হয়, তা হলোÑ কাল্পনিক চরিত্রগুলোকে পাঠকের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে জীবন্ত করে তোলা। সেক্ষেত্রে ইশিগুরো সার্থক হয়েছেন বলে ধরে নিতে পারি। কেননা, সাধারণ পাঠক ও সাধারণ বোধ যখন পাশাপাশি শুয়ে চিন্তা করে, তখন লেখকের সরলরৈখিক চিন্তার সঙ্গে সংযোগ স্থাপিত হয় যা লেখককে আরও বেশি উন্মাদনা যোগায় আর পাঠকের হৃদয় আন্দোলিত করে। প্রত্যেকটি মানুষের বেঁচে থাকার প্রয়াস হলো অতীত ও ভবিষ্যত। কারণ অতীতের খোলা জানালা খুলে বেরিয়ে আসে বর্তমানের এক বিশদ রসদ; যা ভবিষ্যতের দরোজায় কড়া নাড়ে। এই বিশ্বাস নিয়ে মানুষ এখনও বেঁচে থাকার স্বপ্ন বুনে চলে। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে একটি ছোট ভূমিকা রাখতে পারে লেখকের একটি শব্দচয়ন বা কথামালা। অতীতের দগ্ধতা বা সুখানুভূতি মানুষকে আবেগতাড়িত করে তোলে। তাই অতীতকে মুছে ফেলা একজন সুস্থ মানুষের পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। এরই ধারবাহিকতায়, অতীতের পুনর্পাঠ ও পুনর্নিমাণ ইশিগুরো তার যাবতীয় লেখাতে সংযোগ রক্ষা করেছেন। আধুনিক সময়ের দহন কিভাবে বাস্তবতার সামনে হাজির হয় তা নিপুণভাবে ফুটে উঠেছে তাঁর গল্প ও উপন্যাসে। যার ধারাবাহিকতায় অতীতের সঙ্গে বর্তমান ও ভবিষ্যতের একটি অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি করেছেন। এক্ষেত্রে অতীতের যাবতীয় ইন্দ্রজাল ধরা দিয়েছে তাঁর লেখার অধিকাংশ চরিত্রে। ফলে চরিত্ররা ফুটে উঠেছে এক অনবদ্য ভঙ্গিমায়। তাঁর লেখাতে পাঠক খুঁজে পেয়েছেÑ অতীতের কথামালা কিভাবে বর্তমানের ওপর ভর করে ভবিষ্যতের পূর্বাভাস দেয়। ঐশ্বরিক সূত্রে আমাদের জীবনে বেঁচে থাকার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া হয়। যে সময়ের মধ্যে আমাদের সামগ্রিক বিষয়াদি মিটিয়ে নেয়ার তাগিদ অনুভব করতে হয়। অথচ, আমাদের জীবন থেকে অবহেলায় খরচ হয়ে যাওয়া সময়গুলো নিয়ে আমরা বেশ চিন্তিত হাতে গোনা কয়েকজন। তাই ইশিগুরোর উপন্যাসে বার বার ফিরে আসে আমাদের খরচ হয়ে যাওয়া বা ক্ষয়ে যাওয়া অতীত সময়গুলো। যে সময়গুলো মেরামতের জন্য সুপারিশ করা হয় তার উপন্যাসে। তার প্রমাণ তিনি দ্য রিমেইন্স অব দ্য ডে উপন্যাসে পাওয়া যায়। বিজ্ঞান আর সাহিত্য পাশাপাশি রেখে জীবন ও জীবিকার প্রত্যেকটি পৃষ্ঠা সুচারুরূপে পঠিত হতে পারে তা আমরা ইশিগুরোর উপন্যাসে পেতে পারি। তিনি বিজ্ঞান ও কথাসাহিত্য এই দুটি বিষয়ের মধ্যে একটি সংযোগসূত্র তৈরি করতে পেরেছেন তা নেভার লেট মি গো উপন্যাসে প্রতীয়মান। আধুনিক সময়ের বাস্তবতার কথাকার ইশিগুরো। কেননা, সমকালীন সমাজে মানুষের দহনবেলার কথামালা তিনি তাঁর গল্প-উপন্যাসে তুলে ধরেন। বিচিত্র উপলব্ধি রয়েছে তাঁর প্রত্যেকটি কলমের আঁচড়ে। সমকালীন বিবেচনাবোধ ও তুলনামূলক সূক্ষ্ম বিশ্লেষণের সুপারিশ করে তাঁর লেখনী। বিশ্ব-বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতার বিষয়টিও দাবি করে ইশিগুরোর লেখা। কাজুও ইশিগুরো যথেষ্ট পরিশীলিত ও পরিমিত পরিসরে তাঁর প্রকাশভঙ্গি করে থাকেন। উপন্যাসের বিভিন্ন চরিত্রে তিনি কার্যকরী ভূমিকা রাখেন। ঘটনার প্রবাহমানতায় তিনি স্বপক্ষে কার্যকরী দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরেন। সেখানে কোন পক্ষপাতদুষ্টে প্রভাবিত হন না। অনেকে লেখকের গল্প-উপন্যাস-কবিতার শরীরে একটি দৃষ্টিকোণে সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করার ফলে পাঠকের নিজস্ব সিদ্ধান্ত প্রণয়ণের সুযোগ থাকে কম। অথচ, দৃশ্যকল্প নির্মাণ বা উপস্থাপনের ক্ষেত্রে ইশিগুরোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তিনি তাঁর লেখাতে কোন সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করেন না। লেখকের নিজস্ব মতামত বা সিদ্ধান্ত উপস্থাপন না করায় পাঠক তার নিজের মতো করে দৃশ্যকল্পের সিদ্ধান্ত নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। এতে পাঠকের আলাদা একটি অধিকার তৈরি হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। ফলে লেখক ও পাঠকের মধ্যে একটি অদৃশ্য সেতু গড়ে ওঠে। ফলে সব ধরনের পাঠকের কাছে নির্বিশেষে তা গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করে। ইশিগুরোর উপন্যাসের আরও একটি বৈশিষ্ট্য হলো উপন্যাসর বিষয়বস্তু কোন সমাধেয় সমাধানে পৌঁছায় না। বিশেষ করে, উপন্যাসের চরিত্ররা একটি অতীতভিত্তিক যাপিত-সমস্যার রসায়নে বরাবরই পড়ে থাকে যা শেষোব্দী সমাধানযোগ্য হয়ে ওঠে না। বিষণœতায় ভোগে তার চরিত্ররা, এভাবেই তিনি শেষ করেন এক বিষণœভরা হৃদয় নিয়ে। সমাজের দুঃখবোধ, জীবনবোধ, দৃশ্যকল্প বা ছায়চিত্র আমরা রঙিন রোদচশমা দিয়ে দেখলে তার বাস্তবিক রূপ অনুভব করা কঠিন। সাধারণ মানুষের কাতারে দাঁড়িয়েই তাদের দুঃখকাতরতাকে অনুভব করা সম্ভব। খুঁজে নেয়া যায় তাদের হারিয়ে যাওয়া সুখগুলোকে। মেরামত করা যায় তাদের ব্যথাতুর দরদকে। সুতরাং, সমাজের যাবতীয় জলজ ও জঞ্জালকে একই দৃষ্টিতে অবলোকন করা জরুরী। যা আমাদের আধুনিক জীবনযাত্রায় বেশ খানিকটা এখনও ঘাটতি। এসব বিষাদময় রসায়ন ইশিগুরোর গল্প-উপন্যাসে বিস্তর খুঁজে পাওয়া যায়। মানুষের সমাজকে গভীরভাবে আত্মস্ত করার এক একটি পরিশীলিত জলছাপ পাওয়া যায় ইশিগুরোর লেখায়। তিনি মানুষের রঙিন সুখগুলোকে প্রাধান্য না দিয়ে ধূসর দুঃখগুলোর পেছনে বেশি সময় দিয়েছেন রঙিন সময়ের পেছনের গল্প বলতে। কেননা, সুখের স্বল্পতায় মানুষ বেশি ভোগে দুঃখের কাতরতা নিয়ে। ইশিগুরোর প্রত্যেকটি দৃষ্টিকোণ ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণের অবতারণা করে বটে কিন্তু সাংঘর্ষিক নয়। জীবনবোধের তলায় যে হাহাকার আমরা দেখতে পাই না, সে হাহাকারের তলদেশ তিনি উপরে তুলে এনেছেন সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি মেরামত করতে। সঙ্গে সঙ্গে সুপারিশ রেখেছেন পাঠকধর্মী দৃষ্টিকোণের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। আবার কখনও কখনও চেতনার অতলকে মেলে ধরেছেন বিবেকের দরোজায়। বিশ্ববিবেক আর অসাম্প্রদায়িকতাও স্থান করে নিয়েছে তার লেখায়। শ্রেণীর যাঁতাকলে পিষ্ট না হয়ে অবিচ্ছিন্ন মমতার দ্বীপে দাঁড়িয়ে চারপাশকে ডেকেছেন দুহাত মেলে। বিনিময়ে পেয়েছেন মানুষের বিশুদ্ধ ভালবাসা ও স্বচ্ছ বিশ্বস্ততা। কেবল লেখকের রামাবলি গায়ে জড়িয়ে তিনি অহমিকায় ভোগেননি কোনোদিন। সাধারণের সঙ্গে সাধারণের বিশেষ বিশেষণে এগিয়ে নিয়েছেন নিজেকে।সবশেষে এ কথা বলতে হয় যে, অমিমাংসিত এক প্রণোদনার তৃতীয় মাত্রা তুলে ধরে সমাজের সময়কে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন আধুনিক মানুষের চৌকাঠে। বিষণ্নতা, সম্যসা আর সংঘাতের উপকূল ধরে পথ চলে গেছে এক নির্বকার কথামালার পিঠে চড়ে, যেখানে কেবল লেখক নয় পাঠকের মতামতের উপর নির্ভর করে ইশিগুরোর চরিত্ররা।
×