ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

রেমিটেন্সের মাসুল থাকবে না

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ১৭ মে ২০১৭

রেমিটেন্সের মাসুল থাকবে না

প্রবাসী রেমিটেন্সে যে পরিমাণ মাসুল সংশ্লিষ্ট ব্যাংক আরোপ করত বর্তমানে তা তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকরী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই সরকার এ ধরনের একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক সদিচ্ছায় প্রবাসীদের রেমিটেন্সে উৎসাহ দিতে সরকারের এই নতুন পরিকল্পনা। পর পর দুই অর্থবছরে (২০১৫-১৬), (২০১৬-১৭) দেশে প্রবাসীদের রেমিটেন্স কমে যাওয়ায় সরকার এই খাতে মাসুল উঠিয়ে দেয়ার কথা বিবেচনায় এনেছে। মধ্যপ্রাচ্যে অর্থনৈতিক মন্দা এবং বেতন কমানোর কারণে সে দেশ থেকে রেমিটেন্স আসা ইতোমধ্যে কমে যায়। এ ছাড়া প্রবাসীরা এখন সব টাকা দেশে পাঠাতেও চায় না। নিজেদের কারণে কিছু টাকা বিদেশে রাখতে হয়। তার ওপর আছে অবৈধভাবে হুন্ডি ব্যবসার মাধ্যমে রেমিটেন্স দেশে পাঠানোর বেআইনী কার্যক্রম। মাসুল তুলে দেয়ার অন্যতম উদ্দেশ্য হুন্ডি কার্যক্রমকেও নিশ্চিহ্ন করার পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করা যায়। বাংলাদেশের রফতানি আয়ের সিংহভাগ আসে পোশাক শিল্প থেকে; কিন্তু বেশকিছু অংশ আসে এই প্রবাসী রেমিটেন্স থেকে। সুতরাং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে এই রেমিটেন্স দেশের স্বার্থে অত্যন্ত জরুরী। হুন্ডি ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক গোপন এজেন্ট ব্যাংকিং যা প্রবাসী খাতের আইনগত বিধিকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়। রেমিটেন্সের ওপর মাসুল না থাকলে সংশ্লিষ্টরা আর অল্প পয়সায় আইনবহির্ভূত কাজ করতে আগ্রহী হবে না। প্রবাসী রেমিটেন্স বেশি আনতে সরকারী এই নতুন সিদ্ধান্ত প্রবাসীদের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। আগামী বাজেটে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সব ধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এদিকে প্রবাসী আয় ও রেমিটেন্স কমে যাওয়াকে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির ওপর বিশেষ চাপ হিসেবে দেখছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটির মতে, বিভিন্ন দেশে অভিবাসন ও এ্যান্টি মানিলন্ডারিংয়ের ওপর কড়া নজর আরোপের কারণে রেমিটেন্স কমে যাওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়। আবার অনেকে ভাবছেন আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ার কারণে প্রবাসী রেমিটেন্সের হারও কমে যায়। এই প্রবাসী আয় আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। যে দেশটির সঙ্গে তেলের দাম বাড়া-কমার সম্পর্ক নেই। সুতরাং প্রবাসী আয়ের ওপর মাসুল কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার জনকল্যাণমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ করায় সাধারণ জনগোষ্ঠী যাদের অনেকেই এই প্রবাসী রেমিটেন্সের ওপর নির্ভরশীল সবাই খুশি হবে এই প্রত্যাশা করা যায়। যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হোক এটাই জনগণের আন্তরিক কামনা।
×