ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

মোবাইল ফোন তৈরি

প্রকাশিত: ০৩:২৮, ৫ মে ২০১৭

মোবাইল ফোন তৈরি

প্রযুক্তি বিদ্যায় অব্যাহত অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ। মুঠোফোন আধুনিক প্রযুক্তির একটি সফল সংযোজন। বিশ্বব্যাপী এই মোবাইল ফোনের অব্যাহত চাহিদার ব্র্যান্ড কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক সাফল্যে একেবারে রমরমা। সম্প্রতি ভারতেও মোবাইল তৈরির বিরাট সম্ভাবনার ক্ষেত্র উন্মুক্ত হয়েছে। নিজস্ব কিছু ব্র্যান্ড কোম্পানি এই শিল্পে সফলতা অর্জন করেছে। উদীয়মান উদ্যোক্তাদের সে দেশের সরকার প্রয়োজনীয় সমস্ত সাহায্য-সহযোগিতা দিয়ে এই ক্ষুদ্র অথচ মূল্যবান শিল্পটি আরও গ্রহণযোগ্য এবং আকর্ষণীয় করতে উদ্যোগ নিয়েছে। বহুল ব্যবহৃত মুঠোফোনকে নিজের দেশে তৈরি করে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানো খুব একটা অসম্ভব নয়। কারণ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ প্রযুক্তিগত উন্নয়নে অনেক সফলতাও প্রদর্শন করেছে। বিশেষ করে কয়েক বছর আগে সরকারী নীতি সহায়তায় ওয়ালটনসহ আরও কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান ফ্রিজ উৎপাদনকারী হিসেবে গড়ে উঠেছে। সে সময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন- বাংলাদেশের অগ্রগামী শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওয়ালটনের ভূমিকা বেশ জোরালো। বর্তমানে মোবাইল শিল্প খাতেও ওয়ালটনের যুগান্তকারী ভূমিকা অনস্বীকার্য। ফলে বাংলাদেশী উদ্যোক্তারা এই শিল্পে তাদের শ্রম, অর্থ এবং সময় ব্যয় করে মোবাইল ফোনের ওপর বৈদেশিক নির্ভরতা কমানোর একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মোবাইল ফোন তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে বেসিসের সভাপতি মোস্তাফা জব্বার ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন করেন। এতে তাঁর স্পষ্ট অভিমত ওয়ালটন নিজস্ব যন্ত্রাংশের মাধ্যমে মুঠোফোনের নির্মাণ কৌশলে সক্ষম এবং প্রস্তুত। চলতি বছরের শেষেই মাদারবোর্ডসহ প্রয়োজনীয় ডিজিটাল ডিভাইস তৈরির কাজ শুরু করতে যাচ্ছে, ওয়ালটন এখন প্রতিটি খুচরা যন্ত্রাংশ এবং কাঁচামাল নিজেরাই দক্ষতার সঙ্গে উৎপাদন করছে। যা অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠান দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচনায় আনতে পারে। বিশ্বব্যাপী মুঠোফোনের ব্যাপক চাহিদার এই ক্ষুদ্র প্রযুক্তিটির সফল উৎপাদন অন্যান্য দেশে হলেও বাংলাদেশ এই খাত থেকে পিছিয়েই ছিল অথচ বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩ কোটিরও বেশি হ্যান্ডসেট বিক্রি হয় বলে তথ্য সূত্রে পাওয়া যায়। মোট বাজার প্রায় ১০ কোটি হ্যান্ডসেটের। একই সঙ্গে বিক্রি হয় হ্যান্ডসেটের অসংখ্য যন্ত্রাংশ। সব মিলিয়ে বছরে প্রায় দশ হাজার কোটি টাকার বাজার। তবে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এ্যাসোসিয়েশনের মতে, এর বাজার দ্বিগুণ অর্থাৎ ২০ হাজার কোটি টাকার। যার পুরোটাই বিদেশ থেকে নিয়ে আসা হয়। এই নির্ভরতা কমাতে ইতোমধ্যেই মোবাইল ফোন ও যন্ত্রাংশ উৎপাদন শিল্প প্রস্তুত করতে ওয়ালটনসহ কয়েকটি দেশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। যা পূর্ণাঙ্গ মোবাইল ফোন প্রস্তুতে যুগান্তকারী অবদান রাখবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এবং বহুল ব্যবহৃত এই ছোট্ট প্রযুক্তিটির নতুন সম্ভাবনা বাংলাদেশকে কয়েক ধাপ এগিয়ে দেবে এই প্রত্যাশা সবার।
×