শান্তি আর মানবতার জন্য খেলা ঘর
পান্না কায়সার
ছিষট্টি বছর আকণ্ঠ অমৃত পানে
একুশের চেতনায় খেলাঘরের পথ চলার অহঙ্কার।
লক্ষ্যে উদ্দেশ্যে অবিচল থেকে
সকল প্রতিকূলতার
পাহাড়সম পথ কেটে
খেলাঘর আজ মানবতা আর অসাম্প্রদায়িকতার ইতিহাস;
স্বচ্ছ চিন্তা আর কর্মযজ্ঞে
সামাজিক আন্দোলনের নাম খেলাঘর
সাংস্কৃতিক বিপ্লবের নির্যাসে
নদীর ঢেউ ভেঙ্গে ভেঙ্গে
মহা সমুদ্রের অতল থেকে মুক্তো খুঁজে খুঁজে
মানুষে মানুষে সেতুবন্ধনের অঙ্গীকারে
শান্তির সৈনিক আজকের খেলাঘর
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় খেলাঘরের অবিরাম অঙ্গীকার
শান্তি আর বন্ধুত্বের বন্ধনে খেলাঘর স্বপ্ন দেখে
খেলাঘরের সাংস্কৃতিক উৎসবের আনন্দ ধারায়
হউক ধ্বংস সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গীবাদ
শেষ হউক শিশু নির্যাতন
এ দিনে স্মরণ করি খেলাঘর প্রতিষ্ঠাতাদের
এ উৎসবে খেলাঘর অঙ্গীকার করছে
বাসন্তী সুবাদে উৎসবের আনন্দ উল্লাসে
বাংলার ঘরে ঘরে উড়বে বাংলার পতাকা
ঘরে ঘরে উৎসবের ঝর্ণা ধারায়
দূর হবে সব অপসংস্কৃতি
বই খাতা আর রং তুলিতে আঁকা হবে বাংলার পতাকা
আঁকা হবে সোনার বাংলার ছবি
খেলাঘরের অপর নাম বাংলাদেশ
আরেক নাম শান্তির সৈনিক
এ উৎসব শিশুদের দু‘চোখে স্বপ্নরা খেলে খেলে যাক।
** আলোর ছোঁয়া
ইসমাত মির্যা
জীবনের আঁচল ভরে দুঃখ কুড়াও
অনন্ত দৈর্ঘ্য নিয়ে রাত জেগে থাকে
আলোর কূহেলী আনে মেঘে ঢাকা চাঁদের শরীর
তুমি একা জেগে আছ আশায় আশায়
কখন ফুরাবে রাত, ভোর হবে কবে
চুপিসারে ছুঁয়ে যাবে সুখের বাতাস
ছ’মাসেও ফুরাবে না সুমেরুর রাত
অথবা এ সুমেরুও নয়, অন্য কোন গ্রহ
এদেশে প্রভাত নেই, আজীবন রাত
ভুল পথে হেঁটে তুমি যতই চল
পৌঁছবে রাত হতে রাতের দেশে
তবুও জোনাকী আশা প্রেরণা যোগায়
আমি হাঁটি আজীবন প্রভাতের পথে
অথচ তোমায় চেয়ে গান গেয়ে যাই
ভুল পথে হেঁটে তুমি ক্লান্ত হলে
হয়ত দাঁড়াবে ঘুরে, অন্তত একবার
আঁচলের দুঃখগুলো ফুল হোয়ে যাবে
সুখের গোলার্ধে যদি ফেরো অবশেষে।
** বরফকুঠুরির বেদনা
আকাশের মলাটে ঝুলে থাকা মুখের নাম নক্ষত্র।
মেঘছেঁড়া হাওয়ার গ্রীবায় হারিয়ে যায় বরফকুঠুরি;
চক্মকি আলোর আলিঙ্গনে হয় দিনের চিত্রকাহিনি।
দিনের দরিয়ায় সাঁতার শিখে জুয়াড়ি চোখ
সেই চোখেই রাতের কালো কাছিম করে গার্হস্থ্যস্নান
সেই থেকেই নক্ষত্রের জাগে প্রণয় বাসনা
তা দেখে থেমে যায় বরফকুঠুরির বেদনা।
** বালিকা
বৃষ্টির আদরে ধুয়ে যাবে কী আলতার স্বপ্ন! ধূপের গন্ধ
ভরা রাতের রুপালি কাচভেজা স্মৃতি তো ভুলিনিÑ
শাবকের পথভুলা গল্প লেগে আছে অনুভূতির অধিবেশনে
বৃষ্টির বিনম্রতা আমার দিকে তাকিয়ে সেই কবে থেকেই
কাঁদছেÑবালিকাকুঠির; প্রথম দরজা খোলার আনন্দে।
বালিকাÑচোখে কী লেগে আছে দুধফড়িঙের গোল্লাছুট;
বৃষ্টি পার্বনের ঘনসন্ধ্যা?
কসাইপাড়ার কাঁচা মাংসের গন্ধে যখন
ঘিনঘিনে মগ্ন হাসির ক্যানভাস,
তখনি রাতগুলি ভিড় করে প্রহরীর দীর্ঘ পিপাসায়।
কীসের টানে মিছে প্রেমে অন্ধমহাজন গাইছে উষ্ণগান
বালিকা তুমি কি বলতে পারো?
কেনো ভুল করেও ভুলি না তোমার ধানি বুকমাঠের ঘ্রাণ...
বৃষ্টির মলিনতা যদিও না পায় বৈধ্যতা
বালিকাÑবিনামূল্যে শিখাবো তোমাকে বৃষ্টিসূত্রের শুদ্ধতা
৫০০ এমজি কবিতা
বিছানার চাদরে ছড়িয়ে থাকা দেহের দরদÑবড্ড কবিতা বান্ধব...
** দুষ্টু দেবতা
মুক্ত হয়নি মুক্তা শিকারির চোখ ভরা তারা।
পাঁজরে পুষে রাখা নৈঃশব্দের বাদামি বেদনা
হীমঘুমে উঁকি দেয়Ñপেছনে পড়া বনখাগড়া।
জ্বলে ওঠেনি পাহাড় কাঁপানো ক্যামেরার ফ্লাস,
ফটোগ্রাফার মুক্তা পূজারিÑযুবতী কাটে পাশ
যুবতীর খোলা বুকের চাতালে মুক্তার বসবাস
তা দেখে দুষ্টু দেবতা ফেলে শ্বাসÑ এ কী সর্বনাশ...
** ভেল্কি
তোমার ঠোঁটের কার্ণিশে লেগে থাকা হাসির ফসিল
ঘুমন্ত ঘোরগুলো উড়ন্ত করে তুলেÑরাত ও দিন...
** পাখি অথবা কামিনী
পলাতক পাখির পাঁজরে লুকিয়ে থাকে স্বপ্নক্ষেতের ফসিল
নিরুদ্দেশ হওয়ার পূর্বেও হারিয়েছে পালকের পাল।
আশ্বিনের আকাশে ওড়া লুকোচুরি মেঘের সার্কাসে
খসে পড়ে একে একে-হারানো দিনের বাদামি প্রজাপতি
কামিনী জানেÑশহরের আকাশ একদিন প্রজাপতির হবে
হরেক রঙের গন্ধে মাতাল হবে নগরের বোবা নাগর
তাইÑ কামিনী নগরপ্রিয়...
** ঈর্ষা
তোমাকে অনেক আগেই অতিক্রম করেছি বলেই তুমি চিৎকার করছোÑসামনে আগুন আগুন...
আমি জানিÑসেই আগুনে পৃথিবী পুড়বে না
পুড়বে তোমার ঈর্ষাকাতর বুক...
শীর্ষ সংবাদ: