ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এই বছরে পুুঁজিবাজার জেগে উঠবে ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ৩ জুন ২০১৬

এই বছরে পুুঁজিবাজার জেগে উঠবে ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের পুঁজিবাজারে মন্দা চলছে। টানা দরপতনে ইতোমধ্যে অসংখ্য বিনিয়োগকারী সব হারিয়ে বাজার থেকে ছিটকে পড়েছেন। পাঁচ বছরের ব্যবধানে লেনদেন নেমে এসেছে দশ ভাগের এক ভাগে। এ বাজারে প্রণোদনা দেয়ার জন্য বিশেষ কোন প্রস্তাব করেননি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তবু তিনি চাঙ্গা বাজারের স্বপ্ন দেখছেন। তার সরকারের নেয়া নানা ব্যবস্থার কারণে শেয়ারবাজার এবার জেগে উঠবে বলে মনে করেন তিনি। আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে ক্ষতিগ্রস্ত ও মার্জিন ঋণগ্রহীতা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুদ মওকুফজনিত কর থেকে অব্যাহতি প্রদান ছাড়া আর কোন সুবিধার প্রস্তাব করেননি অর্থমন্ত্রী। তার এ প্রস্তাবের ফলে বিনিয়োগকারীরা কিভাবে লাভবান হবেন তাও স্পষ্ট নয়। তবু বাজার নিয়ে উচ্চাশা অর্থমন্ত্রীর। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, দেশের পুঁজিবাজার এখন নিয়মমাফিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং স্থিতিশীলতা এসেছে। একই সঙ্গে ফটকাবাজির (কারসাজিমূলক লেনদেন) অবসান এবং নির্মূল হয়েছে। এ কারণে পুঁজিবাজার এবার জেগে উঠবে। পুঁজিবাজারের শৃঙ্খলা বজায় রাখা, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা, সিকিউরিটিজ আইন প্রতিপালন ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নানা সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত আছে বলে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। পুঁজিবাজারে সরকারের অর্জন সম্পর্কে বলতে গিয়ে বাজেট প্রস্তাবে শেয়ারবাজার প্রসঙ্গে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) পাবলিক ইস্যু রুলস-২০১৫ প্রণয়ন করেছে। এতে অভিহিত মূল্যে আইপিও’র জন্য ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতি এবং প্রিমিয়ামসহ আইপিও’র জন্য বুকবিল্ডিং পদ্ধতির বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। বছরে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা উত্তোলিত হয়ে নানা খাতে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। নিরীক্ষা কার্যক্রমে শৃঙ্খলা আনতে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর জন্য নিরীক্ষকদের একটি প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। এ ছাড়া, পুঁজিবাজার সম্পৃক্ত মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য গঠিত স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য গঠিত সহায়তা তহবিল হতে এ পর্যন্ত ৬৩৭ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানে বিএসইসি’র সঙ্গে ভারতের সিকিউরিটিজ ও একচেঞ্জ বোর্ডের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া, পুঁজিবাজারের সার্বিক উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য এডিবি’র সহায়তায় একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। নিয়মমাফিক পরিচালিত পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। পুঁজিবাজার আর্থিক খাতের একটি স্তম্ভ হিসেবে বিকশিত হবার জন্য প্রস্তুত। আশা করা যায়, ফটকাবাজির অবসান ও নির্মূলের ফলে বাজারটি এবারে জেগে উঠবে।
×