ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রবাদপ্রতিম সাংবাদিক তোয়াব খানসহ ১৬ জনের হাতে একুশে পদক তুলে দিলেন শেখ হাসিনা

বাঙালীর স্বকীয়তা ছড়িয়ে দিতে হবে বিশ্বজুড়ে ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বাঙালীর স্বকীয়তা ছড়িয়ে দিতে হবে বিশ্বজুড়ে ॥ প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাঙালী জাতির স্বকীয়তা শুধু নিজেদের মধ্যে ধারণ নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একুশে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাংলাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্যভাষা শিখতে হবে তবে নিজের স্বকীয়তা বাদ দিয়ে নয়। অনুষ্ঠানে দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক খ্যাতিমান সাংবাদিক তোয়াব খানসহ ১৬ জনের হাতে ২০১৬ সালের একুশে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গত সাত বছরে দেশকে একটি মর্যাদার আসনে এনে দিতে পেরেছি, দেশের মানুষের ভেতর মর্যাদাবোধ তৈরি হয়েছে, যা আমাদের বড় অর্জন। মানুষের আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। আমরা এখন মাথা উঁচু করে চলতে পারি। একুশ আমাদের এসব শিখিয়েছে। তিনি বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি আজকে শুধু একটি দিবস নয়; একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের চেতনার উন্মেষ ঘটায়। অন্যায়ের কাছে মাথানত না করা শেখায়। আমরা বাঙালী, আমাদের স্বকীয়তা, আমাদের আত্মপরিচয়, আমাদের আত্মমর্যাদাবোধ শিক্ষা দেয় একুশে ফেব্রুয়ারি। আর সেই পথ বেয়েই আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি। আমরা বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে চাই। আমরা কেবল নিম্ন-মধ্যম আয়ে থাকতে চাই না, ২০২১ সালের আগেই মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে চাই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এ বছর ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, ডাঃ সাঈদ হায়দার, ড. জসীম উদ্দিন আহমেদকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ বিভাগে সৈয়দ গোলাম কিবরিয়ার (মরণোত্তর) পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন তার জ্যেষ্ঠ সন্তান রোকেয়া বেগম। শিল্পকলায় গৌরবজনক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অভিনেত্রী নাট্যকার ও প্রযোজক বেগম জাহানারা আহমেদ, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী প-িত অমরেশ রায় চৌধুরী, সঙ্গীতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী বেগম শাহীন সামাদ, নৃত্যে নৃত্যনাট্যকার আমানুল হককে একুশে পদক প্রদান করা হয়। চিত্রকলায় শিল্পী কাজী আনোয়ার হোসেনের (মরণোত্তর) পক্ষে তার সহধর্মিণী সুফিয়া আনোয়ার প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক গ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি মফিদুল হক; গবেষণায় অধ্যাপক ডাঃ এ বি এম আব্দুল্লাহ এবং লেখক ও নৃ-গোষ্ঠীর প্রতিনিধি মংছেনচীং মংছিনকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। ভাষা ও সাহিত্যে গৌরবজনক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর একুশে পদকে ভূষিত হন কথাশিল্পী জ্যোতি প্রকাশ দত্ত, অধ্যাপক ড. হায়াৎ মামুদ এবং কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। পদকপ্রাপ্ত প্রত্যেক গুণীজনকে ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের তৈরি ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি পদক, দুই লাখ টাকা, একটি সম্মাননাপত্র এবং একটি রেপ্লিকা প্রদান করা হয়। দেশের আধুনিক সাংবাদিকতার প্রবর্তক দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান সম্পর্কে পদক প্রদান অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম বলেন, তোয়াব খান দেশের একজন খ্যাতিমান সাংবাদিক। তিনি দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে এ দেশের সাংবাদিকতায় অবদান রেখে চলেছেন। তিনি ১৯৬১ থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক ছিলেন। সুদীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে থেকে তাঁর লেখা ও পাঠ করা ‘পিন্ডির প্রলাপ’ মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার পক্ষের প্রতিটি বাঙালীকে প্রেরণা যুগিয়েছে। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় আধুনিক ধারা প্রবর্তন করেছেন। তার হাত ধরে তৈরি হয়েছে এ দেশের অগণিত প্রতিভাবান সাংবাদিক। সাংবাদিক তোয়াব খানের জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৪ এপ্রিল সাতক্ষীরা জেলার রসুলপুর গ্রামে। পিতা আবদুল ওহাব খান, মা মোসাম্মত জোবেদা খানম। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তাদের বাড়িটি ছিল স্বদেশী আন্দোলনের একটি কেন্দ্রের মতো। পরিবারের অনেকেই ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ও খেলাফত আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সাতক্ষীরার শতাব্দী প্রাচীন প্রাণনাথ হাই স্কুলে (পিএন) তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু। এ স্কুল থেকেই তিনি ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর পড়াশোনা করেন ঢাকার জগন্নাথ কলেজে। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি তৎকালীন বিভিন্ন পত্রিকায় সমকালীন ইস্যু নিয়ে লেখালেখি করতেন। তবে ১৯৫৫ সালে প্রগতিশীল পত্রিকা সংবাদ-এ সাব-এডিটর হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে তাঁর সাংবাদিকতা জীবনের শুরু। ১৯৬১ সালে থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত তিনি সংবাদের বার্তা সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৪ সালেই তিনি তৎকালীন ন্যাশনাল প্রেস ট্রাস্ট পরিচালিত ‘দৈনিক পাকিস্তান’ পত্রিকায় যোগ দেন চীফ সাব-এডিটর হিসেবে। ১৯৬৫ সালে তিনি দৈনিক পাকিস্তানের বার্তা সম্পাদক নিযুক্ত হন। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি দৈনিক পাকিস্তানের বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে তিনি যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তাঁর লেখা ও পাঠ করা ‘পি-ির প্রলাপ’ মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার পক্ষের প্রতিটি বাঙালীকে প্রেরণা যোগাত। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি যোগ দেন দৈনিক বাংলায়Ñ (অধুনালুপ্ত দৈনিক পাকিস্তান)। ১৯৭২ সালে তিনি এ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বে ট্রাস্ট পরিচালিত পত্রিকাটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে ওঠে। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। মাঝের সময়টা রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পর ১৯৯২ সালে দৈনিক বাংলায় আবারও সম্পাদক পদে যোগ দেন। এ যেন ছিল তাঁর নিজের ঘরে ফেরা। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার মৌলিক নীতির প্রশ্নে আপোস করতে না পারায় তৎকালীন সরকার তাকে সম্পাদকের পদ থেকে অপসারণ করে। যোগ দেন দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক পদে। সেই থেকে আজ অবধি তিনি এ পত্রিকার সঙ্গে জড়িত। এ পত্রিকার প্রতিটি পাতায় তাঁর উদার পেশাদারি আধুনিক মনোভাবের বহির্প্রকাশ। পদকপ্রাপ্তদের হাতে সম্মাননা তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, আপনাদের মাধ্যমে দেশের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে, বর্তমান তরুণ প্রজন্ম উজ্জীবিত হবে। দেশে আরও অনেক গুণীজন আছেন, যাদের আমরা মূল্যায়ন করতে পারছি না। তাদের ও আপনাদের মূল্যায়ন এ পুরস্কারের মধ্য দিয়ে হয় না। পুরস্কার বড় কিছু না, আপনাদের অর্জন তার চাইতে অনেক বড়। গুণীজনদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভবিষ্যত প্রজন্ম সঠিক পথে চলবেÑ এমনটা আশা করেন তিনি। অনুষ্ঠানে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপট স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাষার ওপর আঘাত হেনে একটি জাতিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়েছিল। পাকিস্তানীরা আমাদের ওপর উর্দু ভাষা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু দেশের ভাষাসৈনিকরা তাদের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষার অধিকার অর্জন করেছিলেন। আজ আমরা মায়ের ভাষায় কথা বলতে পারছি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান। আন্তর্জাতিক পরিম-লে স্বীকৃত ভাষা গ্রহণ করলেও নিজের মাতৃভাষার স্বকীয়তাও রক্ষার আহ্বান জানান তিনি। মাতৃভাষা শেখার পর অন্য ভাষা শিখলে প্রকৃত শিক্ষা হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আমাদের সমাজকে আরও একটু সচেতন হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী চেতনায় মাতৃভাষাকে ধারণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অনেক মাতৃভাষা হারিয়ে যাচ্ছে জীবনের প্রয়োজনে। মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনে সবার সঙ্গে কথা বলতে অন্য ভাষাকে বেছে নিচ্ছে। কিন্তু মাতৃভাষাকে আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। আমাদের যেমন অন্য ভাষায় শিক্ষা নিতে হবে তেমনি নিজেদের মাতৃভাষাতেও চর্চা করতে হবে। কারণ নিজেদের মাতৃভাষা ছাড়া প্রকৃত শিক্ষা হয় না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ওপর বিরাট দায়িত্ব, সারাবিশ্বে যত মাতৃভাষা আছে তা সংরক্ষণ ও গবেষণার। ইতোমধ্যেই আমরা একটা মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট গঠন করেছি। সেখানে বিভিন্ন মাতৃভাষাকে সংরক্ষণ করা হচ্ছে; গবেষণা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী একুশে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরার জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানিয়ে বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি যে ইতিহাস সেটা আমরা বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছি। এ সময় তিনি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে আরও উদ্যোগ গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় একুশে ফেব্রুয়ারির শহীদদের স্মরণ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে একুশের স্বীকৃতির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট স্মরণ করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ১৯৪৮ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা চেয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আন্দোলন-সংগ্রাম ও কারাবরণের ইতিহাস তুলে ধরেন। পদক প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, অতীতে অগণতান্ত্রিক সরকারের সময় বহু যোগ্য ব্যক্তিদের একুশে পদকের জন্য মূল্যায়ন করা হয়নি। প্রকৃত অর্থে অনেক গুণী মানুষ ছিলেন অবহেলিত। দীর্ঘদিনের এ অশ্রদ্ধার সংস্কৃতি থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বেরিয়ে এসেছি। আমরা চেষ্টা করছি বিভিন্ন অঙ্গনের গুণী ও যোগ্য মানুষদের যথাযোগ্য সম্মান প্রদর্শন করতে। বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতিচর্চা বিমুখতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, অভিভাবক ও শিক্ষকবৃন্দ সন্তানদের ধাবিত করছেন শুধু কাঠামোবদ্ধ শিক্ষা আর পরীক্ষার দিকে। আমাদের সন্তানরা শুধুই পরীক্ষার্থী, শিক্ষার্থী নয়। তাদের জীবনে ফুল, পাখি, আকাশ, নদী, সঙ্গীত, কবিতা কিছুই নেই। প্রকৃত শিক্ষার্থীর বড়ই অনটন। অথচ প্রকৃত শিক্ষা বা জ্ঞান ব্যতীত প্রকৃত মানুষ গড়ে ওঠা সম্ভব নয়। আর সংস্কৃতিচর্চা ছাড়া প্রকৃত জ্ঞান সম্পূর্ণ হতে পারে না। এ সময় মন্ত্রী সংস্কৃতি চর্চায় সরকারী উদ্যোগের সঙ্গে অভিভাবক, শিক্ষক ও সমাজের সুধীজনদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান। বেলা ১১টায় অনুষ্ঠানের শুরুতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের পরিবেশনায় জাতীয় সঙ্গীত এবং শহীদ আলতাফ মাহমুদের সুরে এবং আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী রচিত অমর একুশের গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ পরিবেশিত হলে সকলেই দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব আক্তারী মমতাজ। অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া, জাতীয় সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দফতর-অধিদফতর এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের উর্ধতন কর্মকর্তা, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ এবং উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে ১৯৭৬ সালে বেসামরিক সর্বোচ্চ এ পদক চালু করে সরকার। প্রতিবছর সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, ভাষাসৈনিক, ভাষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানকারী, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ পুরস্কার দেয়া হয়। ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৪০৩ জন গুণীব্যক্তি ও তিনটি প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদক দেয়া হয়েছে।
×