ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চাঁপাইয়ে আমন ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ৩১ অক্টোবর ২০১৫

চাঁপাইয়ে আমন ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ সেচ সঙ্কটের কবলে পড়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চল। মৌসুমের শুরুতে অবিরাম ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে এবার পুরো বরেন্দ্রর আমন আবাদ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শেষ হয়েছিল। এমনকি আমনের আবাদ ছাড়িয়ে গেছিল লক্ষ্যমাত্রা। কিন্তু সেই আমনে এবার হঠাৎ করেই শেষ মুহূর্তে পানির অভাব দেখা দিয়েছে। কোনটার শিষ ফুটেছে আবার কোনটার পেটে ধান ধারণ করে অপেক্ষায় ছিল পানির। কৃষকের আশা ছিল সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বৃষ্টিপাত হবে। কিন্তু সেই আশায় গুড়ে বালি। ফলে এবার উৎপাদনে বড় ধরনের ধস নামার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলার ৫৫ হাজার হেক্টরের আমনে পানি সঙ্কট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ১৬৪১ ডিপের অধিকাংশ পানির ফ্লো কমে আসার কারণে কৃষক হতাশ হয়ে পড়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায় এবার বিএমডিএর ডিপের অধীন সেচের জমির পরিমাণ ৩১ হাজার হেক্টর। কিন্তু কোন ডিপ পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করতে পারছে না। কারণ প্রতি ঘণ্টায় পানির স্তর নেমে যাচ্ছে। স্থানীয় পুকুর ডোবা নালার পানি ব্যবহারে কিছু জমিতে সেচ কাজ চালাবার চেষ্টা করছে কৃষকরা। কিন্তু তাতে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সঙ্কট। কৃষি শ্রমিক পাওয়া গেলেও মজুরির পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে সাধারণ ধানচাষীরা অর্থাভাবে নিয়োগ করতে পারছে না তাদের। জেলার সবচেয়ে বেশি আমন উৎপাদনকারী এলাকা নাচোল। বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তথ্যানুসারে এই অঞ্চলে সেচের আওতায় জমির পরিমাণ ১৮ হাজার ৪০৮ হেক্টর। ৫২২টি গভীর নলকূপ থাকলেও এই মুহূর্তে কোন কাজে আসছে না। কারণ পানির স্তর দ্রুত নেমে যাওয়ার কারণে সেচে বড় ধরনের বিঘœ ঘটেছে। পাশাপাশি বিদ্যুত সঙ্কটের কারণে রাত-দিনের অধিকাংশ সময়ে লোডশেডিং হচ্ছে। আমনুরা হয়ে নাচোলের উপর দিয়ে রহনপুর মুখী ১১ কেভি লাইনটি বহু আগে পরিত্যক্ত হওয়ার কারণে প্রায় সময়ে বিদ্যুত বিভ্রাট হচ্ছে। এই অঞ্চরের উপর দিয়ে একটি বাইপাস বিদ্যুত লাইন না হওয়া পর্যন্ত এই সঙ্কট অব্যাহত থাকবে। ফলে নাচোল ও গোমস্তাপুর বরেন্দ্র অঞ্চলের আমন ধান নিয়ে কৃষক মহাসঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। চোখের সামনে শুকিয়ে যাওয়া মাঠে সেচ দিতে পারছে না।
×