
টাঙ্গাইলের মধুপুরের প্রাণকেন্দ্র দিয়ে শত বছরের পুরনো বংশাই নদীটি বয়ে চলেছে। বহুদিন যাবত এই নদীটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত, শোভা-বৃদ্ধি, প্রকৃতিপ্রেমীদের নজরকাড়া, বন্যায় কবলিত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করাসহ নানাভাবে এ এলাকার মানুষদেরকে উপকার করে যাচ্ছেন। একইসাথে অনেকে এ বংশাই নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
জানা যায়, একসময় বংশাই নদী পথে দলবেঁধে হরহামেশাই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নৌকা ভ্রমন করতে দেখা যেত। কিন্তু এখন আর সেই ঐতিহ্য চোখে পড়ে না। মাঝির গলায় ভাটিয়ালি গান আর মাছ ধরার ধুম আর নেই। যেন নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে সব। অল্প বৃষ্টিপাত হলেই বন্যার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। এর কারণ হিসেবে নদী পথ সংকীর্ণ হওয়া, নদীতে ময়লা আবর্জনা ফেলা, নদীর গভীরতা কমে যাওয়াকেই দায়ী করা হচ্ছে। মধুপুর বাসস্ট্যান্ডের প্রাণ কেন্দ্রের ব্রিজের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া বংশাই নদীটিতে ফেলা হচ্ছে শহরের জমে থাকা ময়লা আবর্জনা।
এবার শক্তিশালী ড্রেজারের মাধ্যমে মধুপুরের বংশাই নদী খননের কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে মধুপুরের কুড়ালিয়া থলঘাট নামক স্থানে নদী খননের ড্রেজারসহ ৪টি বড় বড় নৌযান এসে নোঙ্গর করেছে। উৎসুক জনতা এসব যন্ত্রপাতি ও জাহাজ আকৃতির নৌযান দেখার জন্য বংশাই নদীর পাড়ে ভীড় জমাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসব নৌযানের ছবি ও ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সুশীল সমাজ জানান, নদীর গভীরতা বৃদ্ধি করার জন্য ড্রেজিং একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া হলেও এটি পরিবেশের উপর কিছু নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ড্রেজিংয়ের ফলে নদীর আবাসস্থল ধ্বংস হতে পারে এবং পানির গুণমান প্রভাবিত হতে পারে। তাই, ড্রেজিং করার সময় পরিবেশগত প্রভাবগুলি বিবেচনা করা এবং যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। বংশাই নদীকে তার প্রাকৃতিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার এবং ড্রেজারের মাধ্যমে খননের কার্যক্রম শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
মধুপুরের বংশাই নদী খননের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় মধুপুরবাসীর মনে হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাওয়ার হাতছানি দিচ্ছে। মধুপুরের বংশাই নদীটি আমাদের গৌরব, আমাদের গর্ব, আমাদের ঐতিহ্য। শত বছরের পুরনো মধুপুরের ঐতিহ্য বংশাই নদীটি রক্ষা করা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।
আঁখি