
ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আয়োজিত হয়েছে ‘শোক বই’ কর্মসূচি। রবিবার (২৯ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বর সংলগ্ন এলাকায় এই আয়োজন করে 'মোরাল প্যারেন্টিং’ পরিবার। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনের শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষের উপর চলমান হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে নিজের আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করেন। এসব পরবর্তীতে বইয়ে স্থান পাবে।
জানা যায়, বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষদের কাছ থেকে নিজ হাতে লেখা শোক মন্তব্য, অনুভূতি, প্রার্থনা ও প্রতিবাদের ভাষা সংগ্রহ করছে সংগঠনটি। অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের নাম, ঠিকানা ও স্বাক্ষর যুক্ত করে দায়িত্ব নিয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করছেন। এসব মন্তব্য সংকলিত হয়ে তৈরি হবে একটি বিশাল শোক বই – একটি নীরব অথচ গভীর ভাষায় বলা প্রতিবাদের দলিল। সারাদেশ থেকে সংগ্রহীত মন্তব্যগুলো একত্রিত করে প্রাথমিক ভাবে একটি বইয়ে রুপান্তর করা হবে। এরপর এই বইটিতে দেশের খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, সেলিব্রেটি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের মন্তব্য দিয়ে সমৃদ্ধ করা হবে।
শোক বইয়টির স্লোগান হলো, “নির্বাক শিশু, পোড়া ঘর, আত্মার ধ্বনি, ফিলিস্তিন আমাদের হৃদয়ের বেদনার নাম, লিখে রাখি শোকের কথা, ফিলিস্তিনকে না ভুলি। লাখো হৃদয়ের বন্ধনে হবে ভালোবাসার প্রকাশ, এই শোক বই হোক শান্তির পথে মানবতার ইতিহাস।”
আয়োজকরা জানান, এই কার্যক্রমের মাধ্যমে তাঁরা বাংলাদেশি জনগণের মানবিক অবস্থানকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে চান। এই অভাবনীয় উদ্যোগটি একদিকে যেমন হতে পারে একটি বিশ্ব রেকর্ড, অন্যদিকে এটি হয়ে উঠবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ মানবিক স্মারক, যা বলবে – আমরা নীরব ছিলাম না, আমরা আমাদের সময়ের অন্যায়ের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম।
উল্লেখ্য, মোরাল প্যারেন্টিং পরিবার একটি মানবিক সংগঠন, যা দেশের দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তিও নৈতিক গাইডেন্স প্রদান করে তাদের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথ সুগম করে। সংগঠনটি বিশ্বাস করে, নৈতিক সমাজ গঠনে প্রতিটি মানবিক কণ্ঠই একটি অমূল্য অবদান। সেই বিশ্বাস থেকেই, গাজায় চলমান নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ বিশেষ করে শিশু ও নারীদের প্রতি অমানবিকতা, মানবতার চরম লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে এক অভিনব ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সংগঠনটি।
রিফাত