আমতলী-তালতলী উপজেলার সড়কের বেহাল দশা

বরগুনা জেলার উপকূলীয় উপজেলা আমতলী-তালতলী যোগাযোগের একমাত্র আঞ্চলিক সড়কের বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। ৩৫ কিলোমিটার সড়কে হাজার হাজার ডোবা ও খানাখন্দে ভরপুর হয়ে আছে। এতে উপকূলীয় দুই উপজেলার অন্তত লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি ভুক্তভোগীদের।
জানা গেছে, আমতলী-তালতলীর ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার উপকূলীয় আঞ্চলিক সড়ক। দুই উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মেলবন্ধন এ সড়কটি। এ সড়ক দিয়ে লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত। এ ছাড়াও সোনাকাটা ইকোপার্ক ও ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। ওই সড়কের ২৪ কিলোমিটার হাজার হাজার ডোবা ও খানাখন্দে ভরপুর। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে সোনাকাটা ইকোপার্ক পর্যটকদের ভ্রমণ বন্ধ রয়েছে।
এতে রাজাস্ব হারাচ্ছে সরকার। ওই সড়কের মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা সেতু পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার, কড়াইবাড়িয়া বাজার থেকে হরিণবাড়িয়া সেতু পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার ও তালতলী সেতু থেকে ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়ক ডোবা ও খানাখন্দে ভরপুর। ২০-৩০ গজ দূরত্বে রয়েছে বড় বড় খানাখন্দ। এ সড়ক যেন ডোবায় পরিণত হয়েছে বলে জানান স্থানীয় রায়হান ও মাজহারুল ইসলাম। ডোবায় গাড়ি আটকে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। খানাখন্দের কারণে সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই খানাখন্দ সড়ক দিয়ে যানবাহন ও মানুষ যাতায়াত করছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে দুই উপজেলার অন্তত লক্ষধিক মানুষ। প্রতিদিন সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুত ওই সড়ক সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও সড়কে চলাচলকারীরা।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আমতলী-তালতলী আঞ্চলিক সড়কের মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা সেতু পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার, কড়াইবাড়িয়া বাজার থেকে হরিণবাড়িয়া সেতু পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার ও তালতলী সেতু থেকে ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়ক ডোবা ও খানাখন্দে ভরপুর। ওই সড়কের প্রতি ২০-৩০ গজ দূরত্বে রয়েছে ডোবা ও বড় বড় খানাখন্দ। ডোবায় ও খানাখন্দে গাড়ি আটকে চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। সড়কের ইট-পাথরের সুরকি বের হয়ে মাটি উঠে গেছে। খানাখন্দের গর্তে গাড়ির চাকা ফেঁসে যাচ্ছে। কাদা মাটিতে মিশে সড়ক একাকার হয়ে গেছে।
তালতলী উপজেলার ব্যবসায়ী শামিম পাটোয়ারী বলেন, সড়ক যেন হাজারো খানাখন্দের সমাহার। সড়ক দিয়ে চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
তারিকাটা এলাকার শহীদুল ইসলাম ও বাহাদার বলেন, গত এক বছর ধরে সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের লোকজন দেখেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।
আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারের ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির বলেন, সড়ক নির্মাণের দুই বছরের মাথায় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। সড়ক দিয়ে গাড়ি ও মানুষ চলাচলে খুবই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দ্রুত সড়ক মেরামতের দাবি জানান তিনি।
মোটরসাইকেল চালক নজরুল ইসলাম, রুবেল মিয়া ও শাহ আলম তালুকদার বলেন, সড়কের এমন বেহাল দশা গাড়ি চালানো মুশকিল। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানান তারা।
বাসচালক মজিবুর রহমান ও আবদুস সালাম বলেন, সড়কের বেহাল দশার কারণে যানবাহন চলাচল করতে সমস্যা হয়।
তালতলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কড়াইবাড়িয়া বাজার থেকে হরিণবাড়িয়া পর্যন্ত সড়কের খুবই খারাপ অবস্থা। আগামী অর্থ বছরের প্রথম ধাপে এ সড়ক সংস্কার করা হবে। তিনি আরও বলেন, তালতলী থেকে ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পর্যন্ত সড়কটি ওই অর্থ বছরের দ্বিতীয় ধাপে সংস্কার করব।
আমতলী উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী ইদ্রিস আলী বলেন, মানিকঝুড়ি থেকে কচুপাত্রা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। আগামী অর্থ বছরের বাজেটে সংস্কার প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।
বরগুনা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, ওই সড়কের বিষয়টি আমি জেনেছি। সংস্কার প্রকল্পের আওতায় আনতে কাজ চলছে। তিনি আরও বলেন, ২৪ কিলোমিটার সড়ক এক সঙ্গে সংস্কার করা সম্ভব হবে না। তবে পর্যায়ক্রমে আসছে অর্থ বছরে ওই সড়ক সংস্কার করা হবে।