
বর্তমান সমাজে মাদকের ভয়াবহ বিস্তার এক গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মাঝে মাদকাসক্তির প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। এর ফলে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজব্যবস্থায় মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
মাদকদ্রব্য শুধু ব্যবহারকারীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নষ্ট করে না, বরং নৈতিকতা, মূল্যবোধ এবং সামাজিক বন্ধনকেও দুর্বল করে দেয়। মাদক গ্রহণের ফলে বাড়ছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, তৈরি হচ্ছে পারিবারিক অশান্তি, আর শিক্ষাজীবনেও দেখা দিচ্ছে ছন্দপতন।
বাংলাদেশ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মাদকাসক্ত ব্যক্তি ১৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী যুবক। এই পরিসংখ্যানই স্পষ্ট করে দেয় যে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আজ মারাত্মক ঝুঁকির মুখোমুখি।
এমন অবস্থায় সমাজকে মাদকমুক্ত রাখতে হলে, সর্বাগ্রে প্রয়োজন ব্যাপক সচেতনতা বৃদ্ধি। পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক সংগঠনগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এই সমস্যার কার্যকর সমাধান সম্ভব নয়।
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো হতে পারে:
১. শিক্ষা ও সচেতনতা কার্যক্রম :- স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মাদকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে ধারাবাহিক প্রচারণা চালাতে হবে।
২. কঠোর আইন প্রয়োগ :- মাদক ব্যবসায়ী ও পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও কার্যকর বিচার নিশ্চিত করা জরুরি।
৩. পুনর্বাসন কার্যক্রম :- মাদকাসক্তদের জন্য উন্নত ও বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের সুযোগ বাড়াতে হবে।
৪. পরিবারের ভূমিকা :- সন্তানের উপর নিবিড় নজরদারি রাখা, খোলামেলা আলোচনা এবং ইতিবাচক পারিবারিক পরিবেশ তৈরি করা।
মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে হলে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এখনই সময় আমাদের যুবসমাজকে এই ভয়াবহ নেশার ছোবল থেকে রক্ষা করতে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার।
লেখক: সাবেক শিক্ষার্থী, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া কমিউনিকেশন বিভাগ, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
মুমু