
ছবি: জনকণ্ঠ
রাজবাড়ী জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কার্যালয়ে পেঁয়াজ সংরক্ষণ ঘরের জন্য আবেদন করতে আসা কৃষকদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী কৃষকদের দাবি, বিজ্ঞপ্তিতে স্বহস্তে আবেদন জমার কথা বলা হলেও সেখানে উপস্থিত কৃষকদের কাছ থেকে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে, না হলে আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয় না।
গত ১৯ জুন (বৃহস্পতিবার) ছিল আবেদন জমার শেষ দিন। নিরুপায় হয়ে কৃষকরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সঙ্গে নগদ অর্থও জমা দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা নাঈম আহমেদ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের ২২ মে ২০২৫ সালের গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, কৃষক পর্যায়ে পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণ পদ্ধতির আধুনিকায়ন ও বিপণন কার্যক্রম উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রাজবাড়ীর কালুখালী ও বালিয়াকান্দি উপজেলায় ২৫x১৫ ফুটের শতাধিক মডেল ঘর নির্মাণের জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়।
রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি সরেজমিনে জেলা বিপণন কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে একটি আবেদনপত্র জমা দিতে গেলে এক কর্মচারী তার কাছে ২০০ টাকা দাবি করেন এবং তা জমা দিয়েই আবেদনপত্র গ্রহণ করেন। এরপর দুই ঘণ্টা ধরে প্রতিবেদক কার্যালয় ও সংলগ্ন এলাকায় থেকে একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলেন।
সোনাপুর গ্রামের এক কৃষক জানান, আবেদন জমার সময় অফিস সহায়ক মো. এনামুল হক তার কাছে ৩০০ টাকা দাবি করেন। পরে ২০০ টাকা দিয়ে আবেদন জমা দিতে সক্ষম হন। তিনি বলেন, "রশিদ তো দেয়নি, শুধু বলেছে ফটোকপি করা লাগবে, তাই টাকা নিয়েছে।"
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও কয়েকজন কৃষক জানান, "আমরা কৃষক মানুষ। অত কিছু বুঝি না। বলছে টাকা দিতে, তাই দিয়েছি।"
ঘটনার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একাধিক কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি টাকা নিচ্ছেন অফিস সহায়ক এনামুল হক। এক ভিডিওতে দেখা গেছে, আবেদন গ্রহণের সময় কৃষকের কাছ থেকে হাত পেতে টাকা নিচ্ছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি বিপণন কর্মকর্তা নাঈম আহমেদ বলেন, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না। কেউ যদি এমন করে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, “আমি এ বিষয়ে অবগত নই। কেউ টাকা নিয়ে থাকলে তা কেন নিচ্ছে, তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবেন।”
ছামিয়া