
ছবি: জনকণ্ঠ
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, নতুন কোচ (বগি) পাওয়া গেলে আগামী বছর এপ্রিলের মধ্যে যশোর-ঢাকা রুটে আরেকটি নতুন ট্রেন চালু করা হবে। শনিবার বিকেলে যশোর রেলওয়ে জংশন পরিদর্শন শেষে বৃহত্তর যশোর জেলা রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন। এর আগে কমিটির নেতৃবৃন্দ ছয় দফা দাবি উত্থাপন করে রেলওয়ের মহাপরিচালকের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
মতবিনিময় সভায় রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, আগামী জানুয়ারি মাস থেকে ধাপে ধাপে রেলওয়ের বহরে ২০০টি নতুন কোচ যুক্ত হবে। এসব কোচ আসতে শুরু করলে যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন রুটে নতুন ট্রেন চালু করা সম্ভব হবে। তিনি জানান, পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-যশোর রুটে একটি নতুন ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে এবং আগামী মার্চ-এপ্রিলে এই ট্রেন চালুর জন্য রেলওয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, নতুন এই ট্রেন চালু হলে যশোরের যাত্রীরা সকালেই ঢাকায় গিয়ে দিনের কাজ শেষ করে রাতে আবার যশোরে ফিরে আসতে পারবেন, যা যাত্রীসেবায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হবে। এছাড়াও রেলওয়ের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সমস্যাগুলোর সমাধান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তিনি এই অঞ্চল পরিদর্শন করছেন বলে জানান মহাপরিচালক।
এর আগে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বেনাপোলগামী রূপসী বাংলা এক্সপ্রেসে চড়ে দুপুরে বেনাপোল পৌঁছান রেলওয়ের মহাপরিচালক। বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন শেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি একই ট্রেনে করে যশোর রেলওয়ে জংশনে পৌঁছান। এ সময় বৃহত্তর যশোর জেলা রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ স্টেশনে উপস্থিত হয়ে সকালের দিকে যশোর থেকে ঢাকায় গিয়ে রাতে ফিরে আসার উপযোগী ট্রেন চালুর দাবিতে স্লোগান দেন।
স্টেশন মাস্টারের কার্যালয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ও জাতীয় হকি দলের ম্যানেজার কাওসার আলী, সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান ভিটু, অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরু, ফারাজী সাঈদ আহমেদ বুলবুল, প্রেসক্লাব যশোরের সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা একরাম-উদ-দ্দৌলা, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, সাধারণ সম্পাদক তানভিরুল ইসলাম সোহান, যশোর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মোস্তাক হোসেন শিম্বা, সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান মিলন, শিক্ষক সায়েদা বানু শিল্পী, সদস্য সাঈদ আহমদ নাসির শেফার্ড, নওরোজ আলম খান চপল, আলাউদ্দিন, রেল বাজার কমিটির যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন প্রমুখ।
সভায় কমিটির পক্ষ থেকে যে ছয় দফা দাবি তুলে ধরা হয়, তার মধ্যে রয়েছে যশোর-ঢাকা-পদ্মাসেতু লিংকে বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ঢাকা রুটে এবং দর্শনা-যশোর-নড়াইল-ঢাকা রুটে নতুন ট্রেন চালু করা, প্রতিদিন অফিসগামী যাত্রীদের জন্য সময়োপযোগী ট্রেনের সূচি তৈরি করা, আন্তঃনগর ট্রেনে সুলভ বগি যুক্ত করা, ট্রেনের ভাড়া বাসের তুলনায় কম রাখা, সহজ টিকিট প্রাপ্তির ব্যবস্থা করা এবং সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য বিশেষ সুবিধা নিশ্চিত করা।
এছাড়াও যশোর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতৃবৃন্দ পৃথক একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন, যেখানে যশোরে একটি কনটেইনার টার্মিনাল স্থাপন ও আমদানি-রপ্তানি সহজীকরণের লক্ষ্যে ব্যবসাবান্ধব দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করা হয়।
মতবিনিময় সভা শেষে মহাপরিচালক রূপদিয়া, সিংগিয়া এবং নওয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসেন মাসুম, অপারেটিভ সুপারিনটেনডেন্ট আনসার আলী ভূঁইয়া, প্রধান বাণিজ্যিক ম্যানেজার সুজিত কুমার বিশ্বাস, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন এবং বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা গৌতম কুমার প্রমুখ।
এম.কে.