
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফ্যাসিস্টরা দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সুইস ব্যাংকে অনেক টাকা জমা হয়েছে, যা দেখে মন খারাপ হয়েছে।
ফ্যাসিস্টরা কি পরিমাণ টাকা লুট করেছে তা প্রমাণ হয়ে গেছে। ফখরুল বলেন, ফ্যাসিস্টরা দেশের নির্বাচনব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও আমলাতন্ত্রসহ সব ধ্বংস করে দিয়েছে। সেগুলোকে ঠিক যায়গায় নিয়ে যেতে কাজ শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এখন সবাই মিলে দেশ গঠনে পদক্ষেপ নিতে হবে।
ফখরুল বলেন, ১০ মাসে দেশে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তাতে সন্দিহান হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু অত্যন্ত আশ্বস্ত হয়েছি, যখন ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকে কতগুলো বিষয়ে একমত হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ভালো কাজ করছে, আমাদের পথ দেখাচ্ছে। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময় বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে। প্রথমিকভাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সফল হয়েছি।
দেশকে নতুন করে তৈরি করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো সহযোগিতা করবে বলে আশা করছি। মির্জা ফখরুল বলেন, ড. ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের সফল বৈঠক নিঃসন্দেহে আমাদের সবার কাছে এটি অত্যন্ত আশার বাণী। আমরা আশা রাখছি, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। আমাদের সংগ্রাম, জনগণের সংগ্রাম প্রাথমিকভাবে সফল হয়েছে। জনগণকে আমরা স্বপ্ন দেখাতে সক্ষম হয়েছি বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করার। জনগণের কাছে আমাদের এটাই ছিল প্রতিশ্রুতি।
এই প্রতিশ্রুতি পালনে আমরা কাজ করে যাব। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোতে জনগণের স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব নয়। তাই আমরা ৩১ দফা দিয়েছি সবার সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে। যাতে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসা যায়। এখন সংস্কার কাজ এগিয়ে চলেছে। কতগুলো বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি, কতগুলো বিষয়ে একমত হচ্ছে না। যতগুলো বিষয়ে আমরা একমত হব সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করব।
আর যেগুলোতে একমত হওয়া যাচ্ছে না, সেগুলো নিয়ে নির্বাচনের পর আলোচনা করব। সেগুলোতে আমরা একমত হব। রবিবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন জমার কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, তাদের প্রতি আমাদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। এই তরুণরা, যারা বিগত আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন, যাদের সহকর্মীরা, কমরেডরা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছেন- আমরা বিশ্বাস করি তাদের নেতৃত্ব আমাদের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, জাসদের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ উদ্দিন স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।