
আবাসিকে গ্যাস সংযোগ না দেওয়ার স্পষ্ট বার্তা
আবাসিকে নতুন করে গ্যাস সংযোগ দেবে না সরকার-বিদ্যুৎ জ¦ালানি খনিজ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের পর চট্টগ্রামে বিভিন্ন এলাকায় সংযোগ নিতে অপেক্ষায় থাকা বাড়ির মালিকরা এখন উদ্বিগ্ন। কারণ বছরের পর বছর কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) ২০ হাজারেরও বেশি গ্রাহককে ঝুলিয়ে রেখেছেন নতুন সংযোগের জন্য।
এসব আবেদনকারীরা ১০ থেকে ১৩ বছর ধরে অপেক্ষায় রয়েছেন। এখন নতুন করে গৃহস্থলীতে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না এবং কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই এমন বার্তা জ¦ালানি উপদেষ্টা দেওয়ার পর ভবিষ্যতে আদৌ কী হবে তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
চট্টগ্রামে কেজিডিসিএল-এর অধীনে প্রায় ৬ লাখ আবাসিক গ্রাহক আছে। এরমধ্যে চ্যালেঞ্জে রয়েছে ১ লাখ প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্পটি। কারণ গ্রাহকদের মিটার লাগাতে অনীহা রয়েছে। আর নতুন সংযোগ না দেওয়ার কথা শুনে শঙ্কিত বাসিন্দারা। কেননা, কয়েক দশক যাবত নতুন সংযোগের জন্য অপেক্ষা করছেন চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দাদের পাশাপাশি বিভিন্ন আবাসিক ভবন মালিকরা।
জানা গেছে, যেসব এলাকায় গ্যাস উত্তোলন করা হয় সেসব এলাকায় স্বল্প মূল্যে সিলিন্ডার সরবরাহ করবে সরকার। প্রতিবছর প্রায় ২শ’ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের উৎপাদন কমছে। এর পাশাপাশি এলএনজি আমদানিও বেড়েছে। এক্ষেত্রে গ্যাসের উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি কমানোর চেষ্টা করছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার।
চট্টগ্রামে ৬ লাখ আবাসিক গ্রাহক সাড়ে ৩ হাজার বাণিজ্যিক গ্রাহক এবং ৬৮টি সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনসহ ২ হাজার ৮০০ শিল্প গ্রাহককে গ্যাসের যোগান দেয় কেজিডিসিএল। এই বিপুল গ্রাহকের মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার আবাসিক গ্রাহক প্রিপেইড মিটারে গ্যাস ব্যবহার করে। কিন্তু ৭০ লাখ জনসংখ্যার এ নগরীতে বহুতল ভবনসহ নিত্যনতুন আবাসিক ভবন গড়ে উঠেছে। এসব ভবনে বর্তমানে সিলিন্ডার দিয়ে রান্নার আয়োজন সম্পন্ন করে পরিবারগুলো। কারণ নতুন ভবনগুলোতে নেই গ্যাস সংযোগ।
একই সঙ্গে বিগত ১০ বছর যাবৎ যেসব নতুন ভবন গড়ে উঠেছে বেশিরভাগ বহুতল ভবনে গ্যাস সংযোগ নেই। ফলে কেজিডিসিএল-এর সংযোগে চাহিদা থাকলেও জোগান না থাকায় প্রতিষ্ঠানটি নতুন আবেদনকারীদের সংযোগ দিতে পারেনি। আবেদনকারীদের গ্যাস সংযোগ দেওয়ার জন্য বারবার দাবি আন্দোলন হলেও এর কোন সুরাহা হয়নি। ২০১৩ সালে আবাসিক গ্যাস সংযোগ প্রদান শুরু হলেও ২০১৫ সালের শেষে এসে তা বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, ওই সময়ে ২৫ হাজার গ্রাহক গ্যাস সংযোগ পেতে ডিমান্ড নোট অন্যান্য সব খরচসহ প্রায় ৩০ কোটি টাকা কেজিডিসিএল বরাবরে জমা দিয়েছিল। ২০১৩-২০১৪ সালে এসব আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময়েও সংযোগ পায়নি আবেদনকারীরা। এখন নতুন গ্যাস সংযোগ না দেওয়ার বার্তা পেয়ে আবারও শঙ্কিত আবেদনকারীরা।