
ছবি: সংগৃহীত
দুজনের অধিকাংশেই মিল রয়েছে। দুজনেই মেম্বার। দুজনই রাজনীতি করছেন। দুজনের বিরুদ্ধেই ভিজিডির চাল বিতরণে উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ হয়েছে। ২০০ থেকে শুরু করে ৫০০/১০০০ টাকা করে নেওয়া হয়। পার্থক্য শুধু একজন পাঁচ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা, সাংগঠনিক সম্পাদক, নাম বাবুল গাজী। অপরজন ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার। নাম জসিম ফরাজী, সভাপতি ওয়ার্ড বিএনপি। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি তারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এরা দুইজনে দুঃস্থ মানুষের ভিজিডির চাল বিতরণে ৫০০-১০০০ টাকা করে আদায় করেছেন। বিষয়টি আলোচনায় আসায় বাবুল গাজী কিছু মানুষের টাকা ফেরত দিয়েছেন বলেও জানা গেছে। তবে জসিম ফরাজীর দাবি তিনি চাল পরিবহনের গাড়ি ভাড়া বাবদ জনপ্রতি ২০০ টাকা করে নিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক দরিদ্র নারী জানান, ভিজিডির চাল বিতরণে জসিম মেম্বার এক হাজার টাকা করে নিয়েছেন। ইসমাইল মোল্লা জানান, তার কাছ থেকে বাবুল মেম্বার এক হাজার টাকা নিয়েছেন।
ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম জানান, চাল দেওয়ার কথা পাঁচ মাসের, দেওয়া হয়েছে চার মাসের। তার কাছ থেকেও এক হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।
তবে উভয় মেম্বার জানান, আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক নয়। আমরা প্রথমে পরিবহনের জন্য কিছু টাকা তুলেছিলাম। পরে তা ফেরত দিয়েছি। আর স্থানীয় একটি মহল কয়েক বস্তা চাল নিতে চেয়েছিলেন। না পাওয়ায় এমন অপ্রপ্রচার ছড়াচ্ছেন।
ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাওলানা হেদায়েত উল্লাহ জেহাদী জানান, ভিজিডির চাল দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার সুযোগ নাই। তবে দুই জন মেম্বারের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের নোটিশ করা হয়েছে। প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর পাঁচ মাসের নয় তিনি চার মাসের চাল খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলন করেছেন।
কলাপাড়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাছলিমা আক্তার জানান, বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম জানান, সরকারের ভিজিডির চাল বিতরণে অর্থ নেওয়ার বিষয় প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের দুঃস্থ, অসহায়, দরিদ্র ২৪০ নারীকে ভিজিডির পাঁচ মাসের চাল সরকারিভাবে বিতরণের জন্য দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকে ১৫০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা রয়েছে। তবে অনেকে অভিযোগ করেছেন তারা চার মাসের চাল পেয়েছেন। অর্থাৎ, ১২০ কেজি পেয়েছেন। ৩০ কেজি করে কম দেওয়া হয়েছে। আর অধিকাংশ মেম্বাররা পরিবহন খরচের কথা বলে ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ পর্যন্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
আবির