
শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের এক পরিবারকে মসজিদ কমিটির ফতোয়ার মাধ্যমে ‘একঘরে’ করে রাখার ঘটনা নিয়ে জনকণ্ঠে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন জেলাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
গত ১৩ জুন জনকণ্ঠ পত্রিকায় “ফতোয়া দিয়ে এক পরিবারকে ‘একঘরে’ করল মসজিদ কমিটি” শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসে। এরপর জেলা প্রশাসন ও জামালপুর র্যাব-১৪ এর যৌথ পদক্ষেপে বিতর্কিত ফতোয়া প্রত্যাহার করা হয় এবং ভুক্তভোগী পরিবারটি ফিরে পায় সামাজিক স্বীকৃতি।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ভূঁইয়া জনকণ্ঠকে জানান, “স্থানীয় মসজিদ কমিটি কোনো ধর্মীয় বা আইনি কর্তৃত্ব ছাড়াই এই ‘ফতোয়া’ দেয়, যা ধর্মীয় অপব্যাখ্যার শামিল এবং মানবাধিকার পরিপন্থী। প্রশাসনের নির্দেশে ফতোয়া প্রত্যাহার করে কমিটিকে সতর্ক করা হয়েছে।”
র্যাবের পক্ষ থেকেও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী পরিবারের একজন সদস্য বলেন, “আমরা সম্পূর্ণরূপে একঘরে হয়ে পড়েছিলাম। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আমরা আবার সমাজে ফিরে এসেছি। জনকণ্ঠ পত্রিকার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।”
এ ঘটনার পর স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন ও সচেতন মহল জনকণ্ঠের ভূমিকাকে ‘সাহসী সাংবাদিকতার উজ্জ্বল উদাহরণ’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, সামাজিক বিরোধকে কেন্দ্র করে কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া আইনুদ্দিন সরকার বাড়ি জামে মসজিদ কমিটি পরিবারটির বিরুদ্ধে ‘অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত’ অভিযোগ এনে তাদের মসজিদে প্রবেশ, সামাজিক যোগাযোগ এবং কার্যক্রমে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেয়, যা একপ্রকার সামাজিক একঘরে করার শামিল ছিল।
এই ঘটনা প্রমাণ করলো, সচেতন গণমাধ্যম, দায়িত্বশীল প্রশাসন ও আইনের যথাযথ প্রয়োগই পারে অন্যায়-অনিয়মের জাল ছিন্ন করে সমাজে ন্যায়বিচার ফিরিয়ে আনতে।
আফরোজা