
জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে মিথ্যা মামলায় আসামী করার পর মানসিক চাপে হার্ট অ্যাটাক করে মোসলেম সরদার (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন—এমন অভিযোগ এনে লাশ সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার পরিবার। শনিবার (১৪ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টায় সৈয়দপুর উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়নের আমজাদের মোড়ে মোসলেম সরদারের পরিবার ও এলাকাবাসী এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ৫ নং ওয়ার্ডের লক্ষণপুর জোতদারপাড়ার মোসলেম সরদার ও বাছান জোতদার পরিবারের মধ্যে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিষয়টি মীমাংসার পথে এলেও, প্রতিপক্ষ নিজেরাই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে মোসলেম সরদারসহ ২০ জনকে আসামী করে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এতে প্রধান আসামী মোসলেম সরদার মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং তিন দিন আগে হার্ট অ্যাটাক করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়।এ সময় বক্তারা এই মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে বলেন, মিথ্যা মামলার কারণে একজন নিরপরাধ মানুষ মানসিকভাবে এতটাই বিপর্যস্ত হয়েছিল যে তিনি শেষ পর্যন্ত প্রাণ হারান।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাহিদুল হক বাবলু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন, ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন, নিহতের ছোট ভাই তসলিম সরদার, ভাতিজা বাবলু সরদার, পৌত্র মেহেদী হাসান জীবন, গৃহবধূ মৌসুমী এবং এলাকাবাসী জহুরুল শেখ।
বক্তারা বলেন, ১৪ ও ১৫ মে উভয়পক্ষের কাগজ দেখে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে মীমাংসা হয় এবং বাছান জোতদার পরিবার তাদের দখলে থাকা ২০ শতক জমি ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়। কিন্তু ১৮ মে হঠাৎ আব্দুল আজিজ জোতদারের বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এরপর তিনি মোসলেম সরদারসহ পরিবারের ১৩ জন এবং অজ্ঞাত ৭ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
তসলিম সরদার বলেন, “ভাইয়ের কোনো রোগ ছিল না। মামলার পর মানসিক চাপে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং হার্ট অ্যাটাক করেন। মৃত্যুর পর প্রতিপক্ষ হুমকি দিচ্ছে যে বাকিদেরও খেয়ে ফেলবে।”
সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সবাই প্রশাসনের কাছে সঠিক তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
অন্যদিকে, অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মামলার বাদী আব্দুল আজিজ বলেন, “মামলা সত্য না মিথ্যা তদন্তেই প্রমাণিত হবে। আমাদের পরিবারের দশজনকে পেট্রোল ছিটিয়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছিল। আল্লাহর রহমতে আমরা বেঁচে গেছি। আমাদের নিঃস্ব করে দেওয়া হয়েছে। সঠিক বিচার আমরা চাই।”
রাজু