
ছবি: জনকণ্ঠ, নগরীর চামড়া গুদাম এলাকার চামড়ার বাজার
সরকার নির্ধারিত দামের ধারে কাছেও নেই ময়মনসিংহে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো কিনে নিচ্ছেন কোরবানির পশুর চামড়া। পচনের আশঙ্কায় অনেকে বাধ্য হয়েই নামমাত্র দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
তবে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বলছেন, ট্যানারি মালিকরা চামড়া কেনায় আগ্রহী না হওয়ায় লোকসান মাথায় রেখেই তারা চামড়া কিনছেন।
শনিবার ঈদের দিন দুপুরের পর থেকেই কোরবানির পশুর চামড়া আসতে শুরু করে নগরীর চামড়া গুদাম বাজারে। ক্রেতা না থাকায় অনেকে চামড়া নিয়ে বাজারে এসে পড়েন বিপাকে। এক লক্ষ টাকা মূল্যের কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র পাঁচশো টাকায়। এক লক্ষ টাকার উপরে পশুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়।
রবিবারও চামড়া গুদাম এলাকার বাজারে দেখা গেছে একই চিত্র। নগরীর পাট গুদাম দোল দোল ক্যাম্প এলাকার মহিউদ্দিন চারটি চামড়া নিয়ে এসেছিলেন রবিবার সকালে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কোনো দরদাম না করায় তিনি ফিরে গিয়েছেন। মহিউদ্দিন জানান, এখন তিনি যাবেন শম্ভুগঞ্জ হাটে। সেখানেও বিক্রি করতে না পারলে ফেলে দিতে হবে চারটি চামড়া।
এই বাজারে ছাগলের কোনো চামড়াই কিনছেন না ব্যবসায়ীরা। যারা রবিবার ছাগলের চামড়া নিয়ে এসেছিলেন, তাদের সবাইকে চামড়া ফেলে চলে যেতে দেখা গেছে। পশু কোরবানির চামড়া নিয়ে এর আগে কখনোই এমন বিপাকে পড়তে হয়নি কাউকে।
নগরীর আমলাপাড়া এতিমখানার এক শিক্ষক জানান, তারা বাড়ি বাড়ি ও মহল্লায় গিয়ে যেসব চামড়া সংগ্রহ করেছিলেন, তার কোনো ন্যায্য দাম পাননি।
চামড়া গুদাম বাজারের ব্যবসায়ী আব্বাস উদ্দিন তালুকদার জানান, সরকার লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু ঈদে যারা চামড়া নিয়ে বাজারে আসছেন, তা কাঁচা। এতে লেবার দিয়ে লবণ যোগ করে মজুদ করার পর খরচ বাড়ছে।
ট্যানারি মালিকরা লবণযুক্ত চামড়া ১০০০ থেকে ১১০০ টাকায় না কিনলে প্রত্যেকেই লোকসান গুনতে হবে বলে জানান এই ব্যবসায়ী।
বস্তা প্রতি লবণের দাম বেড়েছে ২০০ টাকা। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেবারের মজুরি খরচ। সব মিলিয়ে কাঁচা চামড়া কিনে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে লাভের মুখ দেখবেন, এমন ভরসা করতে পারছেন না কোনো ব্যবসায়ী।
এরকম পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ন্যায্য দামে চামড়া কেনা থেকে বিরত রয়েছেন। যদিও বিক্রেতা ও একাধিক মৌসুমী ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট ও কারসাজির কারণেই দাম পাচ্ছেন না চামড়া বিক্রেতারা।
মুমু ২