
কয়েকদিন পর মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা তথা কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের চন্দনাইশে কামার পাড়ায় বেড়েছে কর্মব্যস্ততা।টুং টাং শব্দ কামার পাড়ায়। তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন দা, ছুরি, বটির পাশাপাশি কোরবানির পশু জবাই করার পুরাতন দা, ছুরি। এসব মেরামতের কাজ চলছে দিনরাত।কর্মব্যস্ততায় দম ফেলার ফুরসত নেই এই কাজে জড়িতদের।
কামার পাড়ার কামারিরা বলেন, খুশির চেয়ে উৎকণ্ঠা যেনো জায়গা দখল করেছে। সবকিছুর দাম বেশি, কয়লা সংকট আর লোহা-ইস্পাতের দাম বেড়ে যাওয়ায় চিন্তার ছাপ পড়েছে কপালে।
রবিবার (২ জুন) বিকালে কামার পাড়ায় ঘুরে ক্রেতা কোরবানির পশু ও ছাগল জবাই হওয়ার পরে ব্যবহৃত দা, ছুরি, বটি ও ছোট বড় চাকু তৈরির কারিগরদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
খাঁনহাট বাজারে আসা ক্রেতা আব্দুর রহিম বলেন, এ বছর চাকু, দা, বটি ও ছুরির দাম অনেক বেশি। কিন্তু দাম বেশি হলেও রক্ষা নেই, কিনতেই হবে। হয়তো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কিছুটা দাম কমে আসবে।
পুরাতন দা, ছুরি মেরামত করতে আসা মিজানুল হক বলেন, পুরাতন ছুরি, চাকু, দা, বটি এসব ধার করতে নিয়ে এসেছি। ১০০ টাকার নিচে ধার দেওয়া যাচ্ছে না। সবকিছুর দাম তাই একটু বেশি নেওয়া হচ্ছে।
খাঁনহাট বাজারের কামার রাধা দাশ বলেন, কয়লা তেমন পাওয়া যাচ্ছে না, সবদিকে সংকট দেখা দিয়েছে। দা-বটি বানানোর জন্য ইস্পাত আর লোহার দাম বেশি। আগের মতো তেমন লাভ হচ্ছে না। কাজ করে তেমন মজুরি টাকাও মিলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আগেকার সময়ে বাসা-বাড়ি থেকে কয়লা সংগ্রহ করা হতো। এখন সব জায়গায় গ্যাসের ব্যবহার বেশি। তাই পরিশ্রম করেও আগের মতো আয় হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, এখন বেশি দামে কয়লা কিনতে হচ্ছে। প্রতিটা টিন ৫০/৬০ টাকা ধরে নিতে হতো, যা এখন ৮০/৯০ টাকা ধরে কিনে নিতে হচ্ছে কয়লা। আগের চেয়েও কোরবানির সরঞ্জামের দাম বেশি। মাংস কাটার দা ৫০০/৬০০ টাকা ধরে বিক্রি করছি। যা গত বছরে ছিল ৩৫০/৪০০ টাকা।
সরেজমিনে কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তেমন অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে না। দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে কাঁচা লোহা। তাই কোরবানির সরঞ্জাম স্বাভাবিকভাবেই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুনের চেয়ে পুরাতন দা, ছুরি, বটি ও চাকু ধার দিচ্ছে বেশি। যার কারণে এবার দুশ্চিন্তায় আছি।
আফরোজা