
ছবিঃ সংগৃহীত
খাগড়াছড়িতে টানা বর্ষণে জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। জেলা সদরের শালবন, কুমিল্লাটিলা, সবুজবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে থাকা কয়েকশ পরিবারকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে প্রশাসন। তবে, পাহাড় ধসের কারণে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এদিকে দীঘিনালায় নিচু এলাকা প্লাবিতসড়ক তলিয়ে যাওয়ায় দীঘিনালা-লংগদু সড়কে যান চলাচল দু‘দিন ধরে বন্ধ।
অপর দিকে ভারি বর্ষণের কারণে খাগড়াছড়ির নদী-খালে পানি বেড়েছে। ফলে দীঘিনালার মাইনীনদীর তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামের বহু পরিবার পানিতে তলিয়ে গেছে। দীঘিনালা-লংগদু সড়কের মেরুং ইউনিয়নের হেডকোয়ার্টারের স্টিল ব্রিজ এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে পানি উঠায় রাঙ্গামাটির লংগদুর সাথে দ্বিতীয়দিনের মতো যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। নৌকা দিয়ে পারাপার হচ্ছেন অনেকে। লংগদু ও মেরুংগামী কয়েকটি পন্যবাহী ট্রাক আটকে গেছে।
মেরুং ইউনিয়নের সোবাহানপুর, চিটাগাংইয়্যা পাড়া, হাজাছড়ার একাংশ, কুমিল্লা পাড়া, ৩ নম্বর কলোনি ও মেরুং বাজার পানিতে ডুবে গেছে। এছাড়া মেরুং ইউনিয়নের চিটাগং পাড়া এলাকায় পানি কমার কোনো লক্ষণ না থাকায় সেখানে বসবাসকারী অর্ধ শতাধিক পরিবার ছোট মেরুং বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া ছোবাহানপুর আরএ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আরও কয়েকটি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরত পরিবারগুলোর মধ্যে শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের সংখ্যা বেশি। তাদের জন্য খাবার, বিশুদ্ধ পানি ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
এদিকে রাত থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খাগড়াছড়ির প্রধান তিন নদী—ফেনী, চেঙ্গি ও মাইনী নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। এতে করে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে রয়েছে। নতুন করে কোথাও পাহাড়ধসের খবর পাওয়া না গেলেও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পাহাড়ি এলাকার মাটি স্যাঁতসেঁতে থাকায় সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
সকালে খাগড়াছড়ির আকাশ মেঘলা ছিল এবং থেমে থেমে হালকা বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যা পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলতে পারে।
সেনাবাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবীরা দূর্যোগপূর্ণ এলাকাগুলোতে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে, জরুরি প্রয়োজনে হেল্পলাইন খোলা রয়েছে এবং প্রতিটি ইউনিয়নে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সক্রিয় রয়েছে।
জেলা সদরের শালবাগান এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের স্থায়ী সমাধানে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রশাসন। এছাড়া দুর্যোগ মোকাবেলায় সকল ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে প্রশাসনের।
ইমরান